আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
কীর্ণাহারে নিজের ভিটেবাড়িতে ফেরার পথে নিয়মিত মণ্ডা কিনতেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এমনকী, তাঁর বাড়ির দুর্গাপুজোয় এখনও এই মণ্ডাই প্রতি বছর ভোগে দেওয়া হয়। এই মিষ্টি কিনতে বোলপুর, নানুর, লাভপুরের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদের মানুষও নিয়মিত ভিড় করেন।
৬৫ বছর আগে কীর্ণাহার বাসস্ট্যান্ডে ছোট্ট দোকান দিয়েছিলেন দীনবন্ধু মণ্ডলের বাবা প্রয়াত মহাদেবচন্দ্র মণ্ডল। দোকান ছোট হলেও মণ্ডার স্বাদ ও গুণমানে কোনও আপস করেননি। ফলে সেই সময় থেকেই মহাদেববাবুর মণ্ডা খুব জনপ্রিয়। বাবার কাছেই মণ্ডা তৈরিতে হাত পাকিয়েছিলেন দীনবন্ধুবাবু। পাঁচ বছর আগে বাবার মৃত্যুর পর তিনিই দোকান চালাচ্ছেন।
ওই দোকানে মণ্ডা কিনতে এসেছিলেন ফুটিসাঁকোর বাসিন্দা নাফিসা খাতুন ও বোলপুরের জগন্নাথ মণ্ডল। তাঁরা জানালেন, দাম কম হলেও স্বাদের তুলনা নেই। তাই কোনও কাজে কীর্ণাহারে এলে ফেরার পথে তাঁরা এই মণ্ডা কিনতে কখনওই ভোলেন না।
তিন টাকার পাশাপাশি পাঁচ ও ১০ টাকার বড় সাইজের মণ্ডা বিক্রির পরিমাণও নেহাত কম নয়। দীনবন্ধুবাবু বলেন, লাভ কম রাখার কারণেই বিক্রি বেশি। প্রতিদিন ১০-১২ হাজার টাকার বিকিকিনি হয়। কিন্তু তার জন্য ৮০ কেজি ছানা, হাজার টাকার চিনি, গ্যাস, চারজনের মাইনের খরচ রয়েছে। তাই দিনের শেষে হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা পকেটে ঢোকে। তবে গুণমানের সঙ্গে আপস করিনি বলেই দূরদূরান্ত থেকে মানুষ নিয়মিত আমার দোকানে আসেন। এটাই আমার কাছে বড় আনন্দের বিষয়। তবে মণ্ডা বিক্রির সুবাদে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের সঙ্গে যোগই আমাদের ব্যবসার সেরা প্রাপ্তি।
গর্বের সঙ্গে দীনবন্ধুবাবু জানালেন, দুর্গাপুজো হোক বা যে কোনও ছুটি। কীর্ণাহারের বসতভিটা পরোটা ও মিরিটি গ্রামে এলে প্রতিবার নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মণ্ডা কিনতেন প্রণববাবু। বাড়ির পুজোর ভোগে সেই মণ্ডা দেবেন বলে অনেক আগে থেকেই অর্ডার দিতেন। তিনি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রণববাবুর মৃত্যুর পরও নিয়মিত মণ্ডা কেনেন মুখোপাধ্যায় পরিবার।
এবিষয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতির ছেলে তথা প্রাক্তন সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রতি বছরই পুজোর সময় মহাদেবদার দোকানের মণ্ডা কেনা হয়। তার এমন স্বাদ যে, বাবার সঙ্গে দেখা করতে এসে অনেক রথী-মহারথী ওই মণ্ডা উপহার হিসেবে নিয়ে গিয়েছেন। বাড়ির নিত্যপুজোয় ও নারায়ণ সেবায় এখনও প্রতিদিনই এই মণ্ডা দেওয়া হয়।