অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা, বাহন ক্রয়ের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষায় সংশয় ... বিশদ
খেজুরি, নন্দীগ্রাম ও হলদিয়া গ্রামীণের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ আসেনি। যেমন হলদিয়ার চৈতন্যপুর সাপ্লাই এলাকায় প্রায় ২৩০০ ইলেক্ট্রিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। এখনও অবধি সেখানে ১২৫টি খুঁটি বসানো গিয়েছে। হলদিয়ার দাড়িবেড়্যা থেকে দুর্গাচকের আগে পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় উম-পুন তাণ্ডবে প্রচুর খুঁটি ভেঙে পড়েছে। আগামী ১৫ দিনে ওই সাপ্লাই এলাকায় পরিষেবা স্বাভাবিক করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্মীরাও। একই অবস্থা খেজুরি ও নন্দীগ্রামে। খেজুরিতে প্রায় ২০২০টি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। গোটা সাপ্লাই এলাকা এখনও বিদ্যুৎহীন। খেজুরিতে মেরামতির কাজে তদারকি চালানোর জন্য কোলাঘাট সাপ্লাই থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জীব ঘোষাল এবং তমলুক ডিভিশন অফিস থেকে আর এক ইঞ্জিনিয়ার উত্তরীয় রায়চৌধুরীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নন্দীগ্রাম সাপ্লাই এলাকাতেও মেরামতের কাজে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
এই মুহূর্তে ১৯৫টি এজেন্সির অধীনে ৩৮০০ জন কর্মী বেহাল বিদ্যুৎ পরিষেবাকে স্বাভাবিক করার জন্য কাজ করে চলেছেন। তারমধ্যে ১৬০টি এজেন্সি পূর্ব মেদিনীপুরের। এছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং মুর্শিদাবাদ থেকে টিম এসেছে। ফরাক্কা থেকে ডিভিসির ২০ জনের টিম এসেছে। দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ জ্যোতি যোজনায় কাজ করা কর্মীদেরও লাগানো হয়েছে লাইন মেরামতের কাজে। পাঁচ পুরসভা এলাকায় মোটের উপর বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও এই মুহূর্তে গ্রামীণ এলাকার একটা বড় অংশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় চলছে।
গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করার আগে প্রথমে ১১ হাজার কেভিএ লাইন ঠিক করতে হবে। সেই লাইন ঠিক করার মুহূর্তে গ্রামের লোকজনরা এসে নিজেদের এলাকায় ব্রাঞ্চ লাইনের কাজ করতে হবে বলে চাপ তৈরি করছেন। বণ্টন সংস্থার লোকজন বলছেন, ১১ হাজার কেভিএ লাইন থেকে বেরিয়েছে ব্রাঞ্চ লাইন। তাই আগে মেন লাইন ঠিক না হলে ব্রাঞ্চ লাইনের সংযোগ যাবে না। কিন্তু, ততক্ষণে গ্রামের মোড়লরা ধৈর্য হারিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন। সাব স্টেশন থেকে বেরনো অনেক ফিডার লাইন এখনও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। খুঁটি দাঁড় করিয়ে সেইসব লাইন ঠিক করতে হবে। সবার আগে খুঁটি বসানোর কাজ শেষ করতে হবে। জেলায় প্রায় ৪০ হাজার ইলেক্ট্রিক খুঁটি ভেঙে পড়ে গিয়েছে। ওই পরিমাণ খুঁটি আনা জরুরি। যদিও প্রায় ১৫ হাজার খুঁটি পাওয়া গিয়েছে বলে ডব্লুবিএসইডিসিএলের তমলুকের রিজিওনাল ম্যানেজার জানিয়েছেন। শ্যামলবাবু বলেন, আমরা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। সাধারণ মানুষজনের অসুবিধা হচ্ছে জানি। আমাদের একটাই আবেদন, মেরামতের কাজে সকলে সহযোগিতা করুন। দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করাই আমাদের কাছে অগ্রাধিকার।
খেজুরি, নন্দীগ্রামের মতোই রামনগর-১ ও ২, কাঁথি-১ ও দেশপ্রাণের বহু এলাকা এখনও বিদ্যুৎহীন। ডিভিসির টিম এই মুহূর্তে কাঁথিতে কাজ করছে। প্রত্যেক এজেন্সিকে এলাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আনা হচ্ছে। ১৫ জুনের আগে বেশিরভাগ কাজ করতে না পারলে বর্ষার সময় গ্রামীণ এলাকায় কাজ করতে খুব সমস্যা হবে। সেজন্য ১৫ জুনের মধ্যে বেশিরভাগ কাজটা শেষ করার টার্গেট নিয়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।