নিকট বন্ধু দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা। গুরুজনের স্বাস্থ্যহানি। মামলা-মোকদ্দমায় পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে থাকবে। দাম্পত্য জীবনে ভুল বোঝাবুঝিতে ... বিশদ
এদিন অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ীকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হলে ১৭ মার্চ পর্যন্ত তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। রতনবাবু বলেন, সম্প্রতি জিএসটির নতুন যে নিয়ম লাগু হয়েছে, তার ভিত্তিতেই ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে এই নিয়মে প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার করা হল।
শিলিগুড়িতে জিএসটি’র নর্দান জোনের জোনাল অফিস রয়েছে। বুধবার শিলিগুড়ির এই অফিসে দীর্ঘ জেরার পর ওই ব্যক্তিকে সংস্থার সিনিয়র গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেন। শিলিগুড়িতে জিএসটির আইনজীবী রতনবাবু বলেন, ধৃত ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে আসছিলেন। ভুয়ো কোম্পানির নামে প্রতারণা চক্র ফেঁদেছিলেন। তাতে এখনও পর্যন্ত ওই ব্যক্তি ৩১ কোটি ৬০ লক্ষের কিছু বেশি টাকা জিএসটি ফাঁকি দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক কোম্পানির নামে ফাইল খুললেও অভিযুক্তর বাস্তবে কোনও কোম্পানিই ছিল না। কাগজে-কলমে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে এ ধরনের একাধিক কোম্পানি খুলেছিলেন তিনি। জিএসটি ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে জিনিস কিনে ভুয়ো কোম্পানির নামে কোটি কোটি টাকার পণ্যসামগ্রী ক্রয়ের হিসেব তৈরি করতেন। তাতে জিএসটির হিসেবও উল্লেখ থাকত। মূলত লোহা, সিমেন্ট কেনার হিসেবই বেশি দেখিয়েছেন। তাতে জিনিস কেনার সময় তিনি জিএসটি দিয়েছেন দেখানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই কোম্পানির অস্তিত্ব না থাকায় সংশ্লিষ্ট সেই করের টাকা জমা পড়ত না সরকারের ঘরে। আবার লাভ রেখে সেই জিনিস বিক্রির সময় করের পরিমাণও বেড়ে যেত। বিক্রির সময় পাওয়া কর থেকে কেনার সময় যে জিএসটি দিয়েছেন সেটা বাদ দিয়ে বাকি টাকা সরকারকে দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু এক্ষেত্রে সেই টাকাও ধৃত ব্যক্তি দেননি বলে জানান জিএসটি’র আইনজীবী রতন বণিক। কর বাবদ প্রায় ৩২ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। অথচ প্রতিটি ক্ষেত্রে জিএসটি দেওয়া হয়েছে বলে হিসেবে দেখানো হতো। কিন্তু কোনও টাকা সরকারের ঘরে যেত না। ভূবনেশ্বর, আসানসোল, দুর্গাপুর, মালদহ, শিলিগুড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় এভাবে একাধিক কোম্পানি খুলেছিলেন তিনি। জিএসটি’র আইনজীবী এদিন আরও বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পর জিএসটি’র গোয়েন্দারা খোঁজখবর নিতে শুরু করেন।
অভিযোগের সত্যতা মেলায় ওই ব্যক্তিকে শিলিগুড়ি আসার জন্য সমন পাঠানো হয়। সেইমতো তিনি এলে শিলিগুড়িতে জিএসটি অফিসের উচ্চপদস্থ গোয়েন্দারা তাঁকে জেরা শুরু করেন। জেরায় ধৃত ব্যক্তি তাঁর এই জিএসটি ফাঁকি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে তাঁর বিবৃতি নেওয়ার পর গোয়েন্দারা তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।
জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে তাঁকে এদিন শিলিগুড়ি এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। ধৃত ব্যক্তি একা নন, এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত বলে গোয়েন্দাদের দাবি।
বাকিদের হদিশ পেতে ধৃত ব্যক্তিকে আরও জেরা করা হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।