অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা, বাহন ক্রয়ের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সন্তানের বিদ্যা শিক্ষায় সংশয় ... বিশদ
লকডাউনের জেরে বন্ধ রয়েছে স্কুলগুলি। বন্ধ রয়েছে মিড ডে মিলও। এরই মধ্যে স্কুলগুলি থেকে পড়ুয়াদের অভিভাবকদের চাল ও আলু বিতরণের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতো এমাসের ২ তারিখ, অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে প্রতি স্কুলেই চাল, আলু বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু ইসলামপুরের অনেক স্কুলে তা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই নির্দিষ্ট সময়ে চাল স্কুলগুলিতে পৌঁছয়নি। এই বিষয়ে প্রশাসনের সদর্থক পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।
উত্তর দিনাজপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দীপক ভক্ত এবব্যাপারে বলেন, জেলায় জুন মাসের ১ থেকে ৬ তারিখের মধ্যে চাল ও আলু বিতরণ করার নির্দেশ আছে। চাল আসছে মালদহ থেকে। তাই পৌঁছতে দেরি হতে পারে। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই। সমস্ত স্কুলেই চাল পৌঁছবে। কিন্ত নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যেই ১০০ শতাংশ বিতরণ সম্পূর্ণ করতে হবে।
ইসলামপুরের মহকুমা শাসক খুরশিদ আলম বলেন, এব্যাপারে আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। কোথাও চাল না পৌঁছলে দ্রুত সদর্থক পদক্ষেপ করা হবে।
ইসলামপুর দক্ষিণ সার্কেলের কুনিয়াভিটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তথা ওই সার্কেলের পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জয়ন্ত শর্মা বলেন, আমাদের স্কুলে এদিন চাল ও আলু বিতরণ করা হয়নি। কারণ এখনও চাল আমাদের কাছে এসে পৌঁছয়নি। এমন অনেক স্কুলেই চাল না পৌঁছনোর কারণে মঙ্গলবার বিতরণ করা হয়নি।
এসএসকে ও এমএসকে কর্মীদের সংগঠন, শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির সহ সম্পাদক জিপসি দাস বলেন, চাকুলিয়া থানা এলাকার তরিয়াল ও বিদ্যানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত চাল আসেনি। পরে যদি চাল আসেও তাহলেও প্যাকেট করে প্রস্তুত করতে সময় লেগে যাবে। ফলে এদিন আর কোনওভাবেই বিলি করা সম্ভব নয়।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাই স্কুল, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র ও মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র সহ যেখানে যেখানে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের যত পড়ুয়া আছে তাদের অভিভাবকদের হাতে দুই কেজি চাল ও দুই কেজি আলু দেওয়ার কথা। এদিকে গ্রামাঞ্চলে অনেক স্কুলে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হয়েছে। তাই স্কুল থেকে বিতরণ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে কর্তৃপক্ষ। সেক্ষত্রে প্রশাসনের নির্দেশ, স্কুল কর্তৃপক্ষ অন্য কোনও জায়গা থেকে এগুলি বিতরণ করতে পারবে। এক দিনে দু’টি করে শ্রেণীর পড়ুয়ার অভিভাবকদের খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে ভিড় কম হয় ও সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, এই কাজের জন্য দু’-এক দিন আগেই চাল স্কুলগুলির হাতে চলে আসা উচিত ছিল। কারণ চাল আসার পরে সেগুলি ওজন করে দুই কেজির প্যাকেট করতে হচ্ছে বিতরণের সুবিধার জন্য। আলুর জন্য দপ্তর থেকে টাকা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই টাকায় শিক্ষকরা আলু কিনে বিলি করবেন। বুধবার চাল এলেও সেগুলি ওজন করে বিলি করার ব্যবস্থা করতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের সমস্যা হবে। এদিকে এলাকার বহু দুস্থ পরিবারের একাধিক সন্তান স্কুলের মিড ডে মিলের আওতায় থাকে। সেক্ষেত্রে সেসব পরিবারের বেশ কিছুদিনের খাদ্যের জোগাড় হয়ে যায় এই চাল ও আলু থেকেই। সেজন্য সেসব অভিভাবকরাও এখন স্কুল থেকে খাদ্যের অপেক্ষায় রয়েছেন।