কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
কয়লাকাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে, গণেশ বাগারিয়া ছাড়াও বিনয়ের ঘনিষ্ঠ আরও এক ব্যবসায়ী আছে। যাঁর আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা রয়েছে। তার আড়ালে কালো টাকাকে সাদা করার প্রক্রিয়া চলছে। এই ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রভাবশালী মহলের যোগ রয়েছে বলে উঠে এসেছে তদন্তে। এই নিয়ে রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজের (আরওসি) সঙ্গে যোগাযোগ করেন তদন্তকারী অফিসাররা। ওই প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর কোম্পানির সমস্ত খুঁটিনাটি জোগাড় করা হয়। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া যায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলির লেনদেনের তথ্য। তাতেই বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। এই তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার বিনয় ঘনিষ্ঠ ওই ব্যবসায়ীর বাঁশদ্রোণীর বাড়িতে যান সিবিআই আধিকারিকরা। সেখানে প্রথমে তল্লাশি চলে। এরপর তাঁকে সঙ্গে নিয়ে স্ট্র্যান্ড রোডের অফিসে আসেন তাঁরা। সেখানে ভল্ট সহ সব আলমারি খোলা হয়। দেখা যায়, স্ট্র্যান্ড রোডে ছোট একটি ঘরে একাধিক সংস্থা চলছে। তার মধ্যে আবার একটি ওষুধের কোম্পানি। কাগজপত্র পরীক্ষা করে সিবিআই দেখেছে, গণেশের কায়দাতেই একাধিক কোম্পানি খুলেছে ওই ব্যক্তি। দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন ব্যক্তিদের নামে অসংখ্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। দুবাই, বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে সেই সব অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন হয়েছে।
এই ব্যবসায়ী পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। সেই সুবাদে বড় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। সেই সূত্র ধরেই তাঁর সঙ্গে বিনয় মিশ্রের সম্পর্ক তৈরি হয়। বিনয়ের কথা মতো তৈরি করা হয় একাধিক কাগুজে কোম্পানি। এরপর কয়লার টাকা বিনয়ের মাধ্যমে ওই ব্যবসায়ীর কাছে পৌঁছয়। কাগুজে কোম্পানির মাধ্যমে কয়লার কালো টাকা সাদা করা হয়েছে এবং তা চলে গিয়েছে দুবাই ও বাংলাদেশে। এক অতি প্রভাবশালী ও আমলাদের একাংশের টাকাও তাঁর কোম্পানিতে খেটেছে বলে সিবিআই জেনেছে। সিবিআইয়ের সঙ্গে ইডি’র ১৬টি টিম সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যায়। একটি টিম যায় অনুপ মাঝির ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীদের অফিস ও বাড়িতে। অন্য টিম যায় বিজেপি নেতা জয়দেব মণ্ডলের অফিসে। কয়লা কাণ্ডে লালা ও বিনয়ের ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যবসায়ীর কলকাতা, দুর্গাপুর ও আসানসোলের বাড়িতে যান ইডি অফিসাররা। বেলার দিকে তাঁরা পৌঁছন হাওড়ার ফোরশোর রোডে একটি জুটমিলে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা একটি মল তৈরি করেছে। সেখানে কয়লা পাচারের টাকা ঢুকেছে। যার পুরোটাই হয়েছে বিনয় মিশ্রের মাধ্যমে। এই টাকা ব্যবসায়িক লেনদেন দেখিয়ে আবার ঘুরপথে বেরিয়ে গিয়েছে। যে সব কোম্পানির সঙ্গে লেনদেন দেখানো হয়েছে, সেগুলির সবই কাগজে-কলমে অস্তিত্ব রয়েছে। এই কোম্পানিগুলির অ্যাকাউন্ট থেকে কাদের নামে চেক ইস্যু করা হয়েছিল, তাদের খোঁজ চলছে। যাতে টাকার শেষ গন্তব্য জানা যায়।