উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
পুরোপুরি না হলেও যদি কিছুটা দৃষ্টি ফেরানো যায়, এই আশা নিয়েই বাবা-মায়ের সঙ্গে দেরাদুনে চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন অভিজিৎ। যেকারণে সোমবার ফলপ্রকাশের দিনে তিনি স্কুলে আসতে পারেননি। ফোনে ধরা হলে তাঁর গলায় শোনা গেল উচ্ছ্বাসের সুর। ফোনের ওপ্রান্ত থেকে তিনি বললেন, ইংরেজি নিয়ে পড়ার খুব ইচ্ছা। তাই আমি প্রথম থেকেই এই বিষয়ে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু পেলাম মাত্র ৮৪। আশা করেছিলাম, ইংরেজির নম্বর নব্বইয়ের ঘরে থাকবে। তবে ইংরেজি যখন হচ্ছেই না, তখন ইতিহাস নিয়ে পড়ব বলে ঠিক করেছি। ছোটবেলায় টিভিতে একটি সিরিয়ালে এক পুলিস অফিসারের সততা দেখে ইন্সপেক্টর হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন অভিজিৎ। কিন্তু চোখের দৃষ্টিই তাতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াল।
অভিজিৎ উচ্চ মাধ্যমিকে বাংলায় ৮৬, ইংরেজিতে ৮৪, ইতিহাসে ৯১, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৯০ এবং সংস্কৃতে ৯৩ পেয়েছেন। ঐচ্ছিক বিষয় সঙ্গীতে পেয়েছেন ৭৪। বললেন, গান গাইতে না পারলেও সঙ্গীত আমার খুব প্রিয়। কুমার শানুর গান শুনতে খুব ভালোবাসি। চার-পাঁচ ঘণ্টা পড়াশোনা করার পর সময় পেলেই গান শুনতাম। অভিজিৎ মাধ্যমিকে ৬১০ নম্বর পেয়ে স্কুলে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। বাবা তপন বিশ্বাস দেরাদুনে ছোটখাট ব্যবসা করেন। মা লিপি বিশ্বাস গৃহবধূ। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে তাঁর ছোট বোন লিপি। অভিজিতের কথায়, বাবা-মা দেরাদুনেই থাকেন। আমি রানাঘাটে দাদুর কাছে মানুষ হয়েছি। মাসি আমার পড়াশোনার ব্যাপারে সবথেকে বেশি সাহায্য করেছে। এছাড়াও স্কুলের শিক্ষকরা তো রয়েছেনই। প্রত্যেকের সাহায্যেই আমি এই নম্বর পেয়েছি। আদ্যপান্ত ক্রিকেট ভক্ত অভিজিতের প্রিয় খেলোয়াড় মহেন্দ্র সিং ধোনি।
এই স্কুল থেকে মাধ্যমিকে প্রথম হওয়া অর্জুন ঘোষ এবার দ্বিতীয় হয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৪৩। হুগলির জাঙ্গিপাড়ার রসিকপুরের বাসিন্দা অর্জুনের ইচ্ছা আইন নিয়ে পড়ার। সেইমতো ল’বিষয়ক পরীক্ষাতেও তিনি বসেছেন। বললেন, ইংরেজিতে ৮০ পেয়েছি। সেটি ছাড়া বাকি বিষয়গুলিতে ভালো ফল করেছি। আমাকে নিয়ে এবার আমাদের স্কুল থেকে ১০ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। একজন ছাড়া বাকিরা প্রত্যেকেই ৮০ শতাংশের উপর নম্বর পেয়েছে। অর্জুনের বোনও এবছর উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪৩৯ নম্বর। অর্জুন বললেন, শুধু খেলতে নয়, খেলা দেখতেও খুব ভালোবাসি। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখনীর অনুরাগী অর্জুন অরিজিৎ সিংয়ের গান শুনতেও ভালো লাগে।