বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহ যোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন ... বিশদ
অন্যদিকে, সংসদ সদস্য সৌগত রায় এদিন ভস্মীভূত কারখানা পরিদর্শনে যান। সেখানেই তিনি মৃতদের পরিবার পিছু আড়াই লক্ষ টাকা করে রাজ্য সরকারের সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি বারাকপুর-২ ব্লকের পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি এসে মৃতদেহ সৎকারের জন্য পরিবারের লোকজনের হাতে রাজ্য সরকারের সমব্যথী প্রকল্পে ২ হাজার টাকা করে তুলে দেওয়া হয়।
সোমবার পৌনে বারোটা নাগাদ চেয়ার তৈরির কারখানায় আগুন লাগে। দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন দিন রাত কাজ করে মঙ্গলবার ভোরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু, কারখানা কর্তৃপক্ষের নথি খতিয়ে দেখে জানা যায়, পাঁচজন কর্মী কারখানায় কাজে যোগ দিলেও তাঁরা কেউ বের হতে পারেননি। গত চারদিন ধরে নিখোঁজ পরিবারের লোকজন কারখানার গেটের সামনে ধর্না দিয়ে বসে থাকতেন। প্রতিদিন কারখানার ভিতরে উদ্ধারকার্য চললেও মৃতদেহের কোনও খোঁজ মেলেনি। নিখোঁজ পরিবারের লোকজন এক সময় আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধারকার্য চলার সময় কারখানার দোতলার একটি ঘরের ভিতর থেকে পাঁচজনকে ঝলসানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
মুন্নার বাড়ি আগরপাড়া তেঁতুলতলা এলাকায়। তিনি ২৩ বছর ধরে এই কারখানায় কাজ করতেন। পল্টুর বাড়ি বেলঘরিয়া শ্রীপল্লি। তিনি মালিকের খুব আস্থাভাজন ছিলেন। কারখানার সাধারণ কর্মী থেকে সুপারভাইজার হয়েছিলেন। সঞ্জীবের বাড়ি কলকাতার বিডন স্ট্রিট। তিনি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিন সপ্তাহ আগে তিনি এই কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন। নিত্যানন্দের বাড়ি মধ্যমগ্রাম বাদামতলা শ্রীপুর। দু’বছর আগে তিনি এই কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন। আর সুবোধের বাড়ি সোদপুরের পানশিলায়।
মৃতদের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে দেহ উদ্ধার হলেও পুলিস প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কোনও কিছু জানানো হয়নি। শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমে জানার পর পানিহাটি হাসপাতালে যাই। সেখানে প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ রয়েছে বলে স্বীকার করে। কিন্তু, মৃতদেহ দেখানোর জন্য আর্জি জানানো হলে তারা রাজি হয়নি। পরে, হাসপাতালের পক্ষ থেকে মৃতদেহ নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে, হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে আমরা বাধ্য হই। পরে, পুলিসের এক আধিকারিক জানান, বারাকপুর মর্গে মৃতদেহ রয়েছে। এদিন দুপুরে বারাকপুর মর্গে এসে আমরা দেহ শনাক্ত করেছি।
জানা গিয়েছে, অধিকাংশরই মুখ ঝলসে গিয়েছে। পল্টুবাবুর প্যান্টের রং দেখে পরিবারের লোকজন চিহ্নিত করেন। নিত্যানন্দবাবুর মাদুলি, রুদ্রাক্ষের মালা আর কালো জিন্স দেখে পরিবারের লোকজন তাঁকে শনাক্ত করেছেন। মুন্না রায়ের দাদা গণেশ রায় ভাইয়ের খৈনির ডিব্বা, নীল রংয়ের প্যান্ট দেখে তাঁকে চিহ্নিত করেন। সঞ্জীব পোড়িয়ার রুপোর চেন দেখে বাবা নিমাই পোড়িয়া তাঁকে শনাক্ত করেন। সুবোধ রায়ের এক বন্ধু সঞ্জয় দাস ভোটার আর আধার কার্ড দেখে তাঁকে চিহ্নিত করেন।