আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
কুপার্সের বিভিন্ন ওয়ার্ডের হাইড্রেনগুলোতে উঁকি দিলেই দেখা যাবে, জমে থাকা পলির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শাকপাতার গাছ জন্ম নিয়েছে। কোথাও আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে পেঁপে গাছের সারি। জল নিকাশি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়ে ড্রেনগুলো ঝোপঝাড়, প্লাস্টিক জাতীয় আবর্জনার দখলে চলে গিয়েছে। শহরের রাস্তাগুলোর অবস্থা যেমন বেহাল, তেমনি দিনের পর দিন ধরে রাস্তার আশেপাশে জমেছে আবর্জনার স্তূপ। পানীয় জলের সংযোগ পেলেও জল পাননি বাসিন্দারা। শহরের ১২টি ওয়ার্ডের ছবিটাই এক। গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে পুরবোর্ডহীন কুপার্স পুরসভার বাসিন্দারা একাধিক সমস্যায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পুরভোট না হওয়ার জ্বালা নিয়েই লোকসভা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন কুপার্সের প্রায় ১৭ হাজার ভোটার। দুটি বাদে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডেই বিজেপির কাছে পিছিয়ে থাকতে হয়েছে তৃণমূলকে। তাই কুপার্সের জ্বলন্ত নাগরিক সমস্যাই হয়ে উঠেছে রানাঘাটের দক্ষিণ বিধানসভার উপনির্বাচনের অন্যতম টার্নিং ইস্যু।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কুপার্স পুরসভার বোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর রানাঘাটের এসডিও এখানকার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব সামলে আসছেন। পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন বকেয়া টাকা পাননি এই পুরসভার শতাধিক অস্থায়ী কর্মী। ফলে মাসের পর মাস বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ, ওয়ার্ডে জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ হয়নি এখানে। দীর্ঘ টালবাহানার পর মাস কয়েক আগে একাংশের কর্মীর বকেয়া টাকা মেটানো হলেও নাগরিক সমস্যার এতটুকুও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। সোমবার নবান্নের বৈঠকে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পে পুরসভাগুলোর পারফরম্যান্সের নিরিখে কুপার্সের অবস্থা চূড়ান্ত খারাপ বলে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন এই পুরসভায় জঞ্জাল সমস্যা মিটছে না তা নিয়ে রানাঘাটের এসডিওর কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন তিনি।
উপনির্বাচন মিটলেই মুখ্যমন্ত্রী নিজে থেকে দায়িত্ব নিয়ে কুপার্সের সমস্যার সমাধান করবেন বলে দলের রাজ্য সভাপতিকে দিয়ে ইতিমধ্যেই বার্তা পাঠিয়েছেন। সোমবার কুপার্সের কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন সুব্রত বক্সি। এরপরেই খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়ে কুপার্সবাসীর মধ্যে। কুপার্সের বাসিন্দা শিখা মণ্ডল, মনীন্দ্র রায়রা বলেন, গত দেড় বছরে পুরসভার প্রশাসক একদিনের জন্যেও আমাদের সমস্যা শুনতে আসেননি। একটা সার্টিফিকেটের জন্যেও এসডিও অফিসে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হয়। মুখ্যমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ যে, তিনি আমাদের অবস্থা বুঝেছেন। নাগরিক সমস্যা থেকে এবারে মুক্তি চাই।
রাজনৈতিক মহল বলছে, রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভার উপনির্বাচনে পঞ্চায়েতগুলোতে সমানে সমানে টক্কর হলেও নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে কুপার্স। একইদিনে নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক ও রানাঘাট দক্ষিণে তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মিসভায় কুপার্সের প্রসঙ্গ উঠে আসার অর্থ পুরভোটে সিলমোহর পড়া। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতেই উপনির্বাচনে কুপার্সের ভোটব্যাঙ্ক তৃণমূলে ঝুঁকতে চলেছে বলে দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। কুপার্স টাউন তৃণমূলের সভাপতি দিলীপকুমার দাস বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে কুপার্সের বাসিন্দারা নতুন আশা পেয়েছেন। মানুষ জানেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মানেই কথা দিয়ে কথা রাখা। তাই উপনির্বাচনে ভোটাররা জোড়াফুলেই আস্থা রাখবেন।