সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
শুক্রবার রাতে এমনই এক মৃত্যু-বিষাদের সাক্ষী থাকল নবদ্বীপ শ্মশান। মৃতের নাম দেবাশিস চক্রবর্তী (৫৪)। বাড়ি নবদ্বীপ পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তেলিপাড়া রোডের নন্দীপাড়ায়। দেবাশিসবাবু শান্তিপুরের শ্রীরামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ৬ আগস্ট পর্যন্ত তিনি স্কুলে গিয়েছিলেন। শিশুদের খুবই স্নেহ করতেন। এমনকী, নিজের টিফিনও বাচ্চাদের খাওয়াতেন।
গত ১০ আগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যাদবপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান। ওইদিনই ছিল দেবাশিসবাবুর বিবাহ বার্ষিকী। রৌমদীপ বলছিলেন, ‘চার বছর আগে মা মারা যাবার পর থেকে বাবা ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন। বারবার মায়ের কাছেই যেতে চাইতেন। মাকে খুব ভালবাসতেন। একে অপরকে ছেড়ে এক মুহূর্তও থাকতে পারতেন না। প্রতিবছরই বাড়িতে বাবা, মায়ের বিবাহ বার্ষিকী করা হতো।’
দেবাশিসবাবু ১৯৯১ সালের ১২ আগস্ট খড়দহে বিয়ে করেন। তাঁর স্ত্রীর নাম রুমা চক্রবর্তী। তাঁদের একমাত্র সন্তান রৌমদীপ একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি এদিন জানিয়েছেন, বাড়িতে বৃদ্ধ ঠাকুরমা, ঠাকুরদা আছেন। মা ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মারা যান। প্রথমে ক্যানসার পরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়। মা মারা যাবার পর তাকেও কনের সাজে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বাবা আর মায়ের মধ্যে ভীষণ ভালবাসা ছিল। মা মারা যাবার পর থেকে বাবা প্রায়ই বলতেন, ‘আমি ওর কাছে যেতে চাই।’
রৌমদীপ বলছিলেন, ‘ঘর ভর্তি মায়ের স্মৃতি আঁকড়ে এতদিন বেঁচে ছিলেন বাবা। প্রতিবছর ১২ আগস্ট বাবা-মায়ের বিবাহবার্ষিকী পালন করা হতো। আর এই দিনেই বাবাও চলে গেলেন। বাবা মারা যাবার পর মনে মনে ঠিক করলাম , বিবাহবার্ষিকীর দিনটি পালন করব। তাই মাকেও যেমন কনের সাজে শ্মশানে পাঠিয়ে ছিলাম, একই ভাবে বাবাকেও বরের সাজে কাঁধে করেই শ্মশানে নিয়ে গেলাম। তারপর কেক কেটে বিবাহবার্ষিকী পালন করলাম। মৃত্যু মানেই তো সবকিছুর শেষ নয়।’ চোখের জল মুছলেন রৌমদীপ।