যে কোনও ব্যবসায় অগ্রগতি আশা করা যায়। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের কর্মের প্রয়োগ পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা হতে ... বিশদ
সেই ছেলেকে নিয়ে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে প্রতিবন্ধী শংসাপত্রের আবেদন করতে এসেছিলেন মা। চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালের ফিজিওথেরাপি ওয়ার্ডে ছেলেকে নিয়ে যাওয়া শুরু করেন। ছ’মাসের চেষ্টায় সরকারি হাসপাতালেই ফল মিলল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ওয়াহেদপুরের দিনমজুর তফজ্জল হকের ছেলে আদিল আমানের ক্ষেত্রে। মানসিক সমস্যা থাকলেও ছেলে হাঁটতে পারায় খুশি বাবা-মা। গত ছ’মাসে ওই ফিজিওথেরাপির প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে হাঁটতে শিখেছে আর দুই শিশু। রতুয়া থানার বাহারাল সাহাপুরের পরিযায়ী শ্রমিক শেখ নাসিমুদ্দিনের কন্যা এলিজা পারভিনও আট বছর বয়সে হাঁটতে শুরু করেছে।
চাঁচলের রায়পাড়ার জ্যোতি রায় বৃহস্পতিবার ফিজিওথেরাপি ওয়ার্ডে হাঁটা শুরু করতেই হাসি ফোটে দিনমজুর বাবা বিশ্বজিৎ রায়ের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ফিজিওথেরাপি বিভাগ চালু হয়। তিনজন চিকিৎসক দ্বারা ওই ওয়ার্ডটি চলে মঙ্গলবার,বৃহস্পতিবার ও শনিবার।
গত চার বছরে শতাধিক শিশু ফিজিওথেরাপি করে সুফল পেয়েছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ সহ বিভিন্ন ব্লক থেকে চাঁচলে ফিজিওথেরাপি করাতে আসেন বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা। শিশুদের হাঁটতে শেখানোটাই ফিজিওথেরাপি প্রশিক্ষক মলয়কান্তি বিশ্বাস, সুজয় কিস্কু ও সুনির্মল ঘোষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন।
তাঁদের কথায়, বিভিন্নভাবে শরীরচর্চা ও মেশিন দ্বারা ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে শিশুকে সুস্থ করার চেষ্টা করা হয়। এর সুফলও মিলছে। হাঁটার যোগ্য করে তোলার জন্য অনেক শিশুকে নিখরচায় ক্যালিপা শ্যু দেওয়া হয়। আমরা সবরকমভাবে চেষ্টা করছি।
চাঁচল হাসপাতালের সুপার সুমিত তালুকদার বলেন, শিশুদের প্রথম হাঁটা দেখে আমরাও আনন্দিত। ফিজিওথেরাপি বিভাগের প্রশিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে অনেক বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটছে। অত্যাধুনিক কিছু মেশিনের প্রয়োজন রয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এদিন এলিজা পারভিনকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন তার মা রবিনা খাতুন। তিনি বলেন, একবছর বয়সে হঠাৎ মেয়ের খিঁচুনি হয়। হাসপাতালে ১৫ দিন চিকিৎসাধীন ছিল। হাঁটার বয়স পার হলেও মেয়ে দাঁড়াতে পারতো না। স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছিলাম না। শংসাপত্র নিতে এসে ফিজিওথেরাপির খোঁজ পাই। মেয়ে এখন হাঁটতে পারছে। সমস্ত কৃতিত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
রায়পাড়ার বিশ্বজিৎ রায়ের কথায়, ছেলের হাঁটার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। হাসপাতালের প্রশিক্ষকদের চেষ্টায় ছেলে আসতে আসতে দৌড়াতেও পারছে। নিজস্ব চিত্র।