সংবাদদাতা, বানারহাট: অভিযানে নেমে আক্রান্ত হলেন রেভিনিউ অফিসার। বানারহাট ব্লকের আংরাভাসায় বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হন ধূপগুড়ি বিএলআরও অফিসের রাজস্ব আধিকারিক অরূপ পাঠক সহ দুই কর্মী। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় বানারহাটে। 
অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকেই সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেআইনিভাবে চলছে বালি পাচার আবার কখনও বালি-পাথর ওভারলোডিং করে রাস্তায় ছুটছে গাড়ি। বৃহস্পতিবার অভিযানে নামে ভূমিদপ্তরের টিম। এশিয়ান হাইওয়ে ৪৮ দিয়ে যাওয়া বালি-পাথর বোঝাই ডাম্পারগুলি থামিয়ে গাড়ির কাগজপত্র ও বালি-পাথর পরিবহণের নথি খতিয়ে দেখে ভূমিদপ্তর টিম। বেশ কয়েকটি গাড়ি দাঁড় করান তাঁরা। আর এ খবর পেয়ে একদল বালি ব্যবসায়ী ঘটনাস্থলে পৌঁছে রেভিনিউ অফিসার অরূপ পাঠককে ঘেরাও করেন। তাঁর সঙ্গে কথা কাটাকাটিয়ে জড়ান। তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। গাড়ি ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এমনকী তারা সরকারি কর্মীদের প্রাণে মারার হুমকিও দিতে থাকে। রেভিনিউ অফিসারকে মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে বানারহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ভূমিদপ্তর। 
বানারহাট থানার আইসি সমীর দেওসা জানান, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর থেকে অভিযোগ পেয়েছি। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
এদিকে বালি ব্যবসায়ীদের দাবি, বৈধ কাগজপত্র থাকার পরেও ডাম্পার চালকদের অযথা হয়রানি করা হচ্ছিল। গাড়ি আটক করা হচ্ছে কেন জানতে চাইলে দুর্ব্যবহার করা হয়। কারও গায়ে হাত দেওয়া হয়নি। মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। আক্রান্ত রেভিনিউ অফিসার বলেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে বালি-পাথর বোঝাই গাড়ির নথিপত্র দেখা হচ্ছিল। একটি ওভারলোডিং ডাম্পার থামিয়ে নথি দেখার সময় বোঝা যায়, যেপরিমাণ রয়্যালটি কাটা রয়েছে তার থেকে বেশি বহন করা হচ্ছে। ডাম্পার মালিকের সঙ্গে কথা বলি, উনি ৩০ মিনিট সময় চান। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখি ২৫-৩০ জন এসে আমার সঙ্গে তর্কজুড়ে দেয়। আমাকে এবং সহকর্মীদের হেনস্তা করে। আচমকাই আমার গায়ে ওরা হাত দেয়। মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এক সহকর্মী মোবাইলে ভিডিও করেন। জোর করে সেই ভিডিও ডিলিট করা হয়। পুলিসকে জানানো হয়েছে। ধূপগুড়ির বিএলআরও জয়দীপ ঘোষ রায় বলেন, রেভিনিউ অফিসার সরকারি  নির্দেশ পালন করছিলেন। গাড়ির নথিপত্র মিলিয়ে দেখার সময় ওই অফিসার দেখেন রয়্যালটিতে লেখা ৩৫০ ঘনফুট, অথচ ডাম্পারে ছিল সাড়ে আটশো ঘনফুট বেডমিশালি (বালি-পাথর)। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী ওই অফিসার ফাইন করেন। এরপরেই সেখানে বেশ কয়েকজন এসে রেভিনিউ অফিসারকে মারধর করে, মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করে দেয়। প্রাণে মারারও হুমকি দেওয়া হয় অফিসারকে। আমরা পুলিসকে সবটাই লিখিতভাবে জানিয়েছি।  বানারহাটে অভিযানে রেভিনিউ অফিসার। নিজস্ব চিত্র