সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ৩০ মার্চ: লকডাউনের মেয়াদ ১৪ এপ্রিলের পর আরও বাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত নেই। আজ কেন্দ্র এই ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গউবা বলেছেন, লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়ানো হচ্ছে, এই মর্মে গুজব ছড়াচ্ছে। এই জল্পনা সম্পূর্ণ অসত্য ও ভিত্তিহীন। এরকম কোনও সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত সরকার নেয়নি। ক্যাবিনেট সচিব বলেছেন, করোনা নিয়ে যেভাবে গুজব, অসত্য সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে সেটা উদ্বেগজনক। তাই সরকার স্পষ্ট জানাতে চায়, লকডাউনের সময়সীমা এখনও ১৪ এপ্রিল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রয়েছে। মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত গুজব বৃদ্ধির প্রবণতা নিয়ে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলি অত্যন্ত সমস্যায় পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী বারংবার বলেছেন গুজব না ছড়াতে। আজ ক্যাবিনেট সচিবও সেকথা আবার জানিয়েছেন। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। রাজ্য সরকারগুলিকে এ বিষয়ে বিশেষ নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। রাজ্য পুলিসের সাইবার ক্রাইম সেল সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নজরদারি করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট আইন এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনকে ব্যবহার করে করোনা নিয়ে গুজব ও মিথ্যা সংবাদ ছড়ালে গ্রেপ্তার করা হবে। কেন্দ্রী লাগাতার আবেদন করছে, করোনা সংক্রান্ত কোনও তথ্য যাচাই না করে শেয়ার করতে। আজই মুম্বইয়ে এই আইনে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুম্বইয়ের বিশেষ কিছু এলাকায় করোনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে বলে ওই ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। তাই করোনা নিয়ে মিথ্যা তথ্য তথা গুজব ছড়ানোর শাস্তি যে গ্রেপ্তারি, এই কঠোর বার্তাই দিতে চাইছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলেছে, করোনা সংক্রান্ত যে কোনও তথ্যই নিয়ম করে আপডেট হিসেবে প্রকাশ করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও কেন্দ্র। তাই সেই তথ্যই অনুসরণ করা উচিত।
অন্যদিকে করোনা সংক্রমণের প্রবণতা বেড়ে চলায় এবার কেন্দ্রীয় সরকার ক্লাস্টার আইসোলেশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছে। গতকালই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। অর্থাৎ যে রাজ্যগুলিতে আচমকা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে দেখা যাচ্ছে, তার মধ্যে ঠিক কোন এলাকায় সংক্রমণ বেশি এটা যাচাই করে, সামগ্রিক লকডাউনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সেই এলাকাগুলিকে বিশেষ আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হতে পারে। রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাশাপাশি সবথেকে বড় যে উদ্বেগ সামনে এসেছে সেই ভিনরাজ্যের শ্রমিকদের থাকা ও খাওয়ার কী ব্যবস্থা হচ্ছে, সেটা জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে স্ট্যাটাস রিপোর্ট চেয়েছে আজ সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, কেন্দ্র যেহেতু একটি অভিমুখ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এ ব্যবস্থা প্রয়োগ করছে, তাই নতুন করে কোনও নির্দেশিকা এই শ্রমিকদের সম্পর্কে দেবে না। লকডাউনের মধ্যে খাদ্যসঙ্কটের সম্ভাবনা দূর করতে কেন্দ্র অত্যাবশকীয় পণ্যকেই শুধু জোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করে স্থির হয়েছে, জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের মসৃণ সাপ্লাই নিশ্চিত করা হবে।