নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: বেলঘরিয়া শ্যুটআউট এবং হুমকি ফোনের পর কয়েকদিন চুপচাপ থাকলেও, ফের স্বমূর্তিতে ফিরেছে বেউর জেলে বন্দি গ্যাংস্টার তথা জুয়েল থিফ সুবোধ সিং। এই পর্বে আদালতের প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট নিয়ে তাকে বিহারের জেল থেকে এ রাজ্যে আনার তোড়জোড়ও শুরু করেছে সিআইডি এবং বারাকপুর পুলিস কমিশনারেট। কিন্তু সেসব তোয়াক্কা না করেই সুবোধ সিং তার পুরনো মেজাজে। ফের বেউর জেলের সেক্টর-৩’এর ওয়ার্ড নম্বর ২২’এর ঘাঁটিতে বসে ফের বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সম্পন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে ‘তোলা’ চেয়ে ফোন শুরু করেছে কখনও সুবোধ সিং আবার কখনও তার সহযোগী রমেশ সিং, কখনও সানয় সিং। শাগরেদরা বিহারের নম্বরের সিমকার্ড ব্যবহার করলেও, হুমকি ফোনের ক্ষেত্রে সুবোধ সিং পুরনো পন্থা ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি) পদ্ধতিই ব্যবসার করছে। কয়েকদিন আগে সেরকমই এক ভিওআইপি কলের (সাইপ্রাসের সার্ভার ব্যবহার করে) মাধ্যমে বারাকপুরের এক প্রতিষ্ঠিত বিরিয়ানি ব্যবসায়ীর পুত্র তথা তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে হুমকি দিয়ে ২০ লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছে গ্যাংস্টার সুবোধ। হুমকি ফোনের জেরে আতঙ্কিত গোটা ব্যবসায়ী মহল। কারণ ওই বিরিয়ানি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তোলা চেয়ে না মেলায়, গত ২০২২ সালের মে মাসে নিজের শ্যুটারদের দিয়ে গুলি চালিয়ে দু’জনকে জখম করেছিল সুবোধ। ফের সেই ব্যবসায়ী পুত্রকে টার্গেট করে সুবোধ তোলা চেয়ে হুমকি দেওয়ায় ঘুম ছুটেছে পরিবারের। আতঙ্কিত ব্যবসায়ী পুত্র অনির্বাণ দাস ও পরিবারের লোকজন পুলিস কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছেন।
অনির্বাণবাবুর অভিযোগ, হুমকি ফোনের পাশাপাশি নিয়মিত তাঁকে অনুসরণ করছে কয়েকজন মোটর বাইক আরোহী। সোমবার গভীর রাতে বাড়ি ফেরার পথে সেরকমই এক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে তিনি টহলদারি পুলিসের সাহায্য নিতে বাধ্য হন। চম্পট দেয় মোটর বাইক আরোহী অনুসরণকারীরা। পুলিস সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে অনুসরণকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। অনির্বাণ বলেন, তাঁকে বারুইপুর আদালতে এক সুবোধ সিং গ্যাংয়ের এক দুষ্কৃতীর সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছিল। সেখানে গিয়েও তিনি দেখা করতে পারেননি। পরে বারাকপুর আদালতেও একবার গিয়েছিলেন। সেখানেও তিনি নিরাশ হন। তবে অনির্বাণের একজন লোক বারাকপুর আদালতে গিয়ে ওই গ্যাংয়ের অপর সদস্য সুজিত সিংহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সময় তাঁর কাছে ২০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল। টিটাগড়ের বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লা খুনের মামলায় বারাকপুর জেলে বন্দি রয়েছে সুজিত। বেউর থেকে সুবোধ সিংয়ের অঙ্গুলিহেলনেই মনীশ খুন হয়েছিলেন বলে ওঠা অভিযোগের তদন্ত এখনও চলছে। এই সব আবর্তের মাঝে তাঁকে অনুসরণ করার ঘটনায় আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ী অনির্বাণ দাস।