নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: জেলার ২৯টি ব্লকে বেসরকারি হোটেল ও লজগুলিকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসাবে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। বাইরে থেকে আগতদের মধ্যে যাঁদের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে এবং বাড়িতে একান্তে থাকার মতো জায়গা নেই, তাঁদের জন্য এই উদ্যোগ। এজন্য পয়সা দিতে হবে। তবে তা সাধ্যের মধ্যে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি জেলায় এম আর বাঙ্গুর ছাড়াও সোনারপুর, ক্যানিং, গোসাবা সহ যে সব সরকারি হাসপাতালগুলি শুধুমাত্র করোনার চিকিৎসার জন্য তৈরি হচ্ছে। সেখানকার চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আলাদা থাকার জন্য সরকারি অতিথি আবাস, বাংলো, পথের সাথী সহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাতে সব মিলিয়ে ২০৯৯ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী সেখানে থাকতে পারবেন। এর নাম দেওয়া হয়েছে উইলনেস সেন্টার। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বিদেশ ও ভিন রাজ্য থেকে সাড়ে বারো হাজারের বেশি মানুষ এ জেলায় ফিরেছেন। আরও কয়েক হাজার মানুষ এখন আটকে ভিন রাজ্যে। শুধু তাই নয়, অনেকে গোপনে ঢুকছেন। বিশেষ করে সুন্দরবনের গোসাবা, সাগর, কাকদ্বীপ ও পাথরপ্রতিমাতে এটা বেশি হচ্ছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, যাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা গিয়েছে, তাঁদের হাসপাতালে প্রাথমিক পরীক্ষার পর কোনও উপসর্গ পাওয়া না গেলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এও বলা হচ্ছে, বাড়িতে গিয়ে টানা ১৪ দিন গৃহবন্দি রাখতে হবে। সবাই তা শুনছেন না। কোথাও কোথাও গৃহবন্দি হয়ে থাকার জায়গাও বাড়িতে নেই। এমন মানুষের কথা ভেবেই বেসরকারি হোটেল ও লজ চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলাশাসক পি উলগানাথন সোমবার বলেন, বিদেশ ও ভিন রাজ্য থেকে আগতদের মধ্যে যাঁদের আর্থিক অবস্থা ভালো এবং বাড়িতে আলাদাভাবে স্বেচ্ছাবন্দি জীবন কাটাবার কোনও ব্যবস্থা নেই, তাঁদের কথা ভেবেই বেসরকারি হোটেল ও লজগুলিকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হয়েছে। আপাতত সব মিলিয়ে এখানে ৪০৫০ জনের থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা থাকবে।
এদিকে, বাইরে কাজ করতে যাওয়া প্রচুর মানুষ দলে দলে গোসাবায় বাড়ি ফিরছেন। এদিন গোসাবা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য তাঁদের লম্বা লাইন দেখা গেল। অভিযোগ, গৃহবন্দি থাকার আশ্বাস দিয়ে যাঁরা হাসপাতাল থেকে কাগজ নিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের অনেকে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ছোট মোল্লাখালি, গোসাবা বাজার, কুমিরমারিতে এমন মানুষদের দেখা গিয়েছে। তা নিয়ে ওই এলকার পঞ্চায়েত থেকে জনপ্রতিনিধিরাও আতঙ্কিত।