ব্যবসায়ে যুক্ত হলে এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাবে না। প্রেম প্রণয়ে বাধা। কারও সাথে ... বিশদ
হাওড়ার খবরে জানা যাচ্ছে, এই লকডাউন পর্বে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ, কিংবা মুটে-মজদুর, ঠেলা ও রিকশচালকদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে বেশ কিছু সংস্থা এবং প্রশাসন। কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়, তাই এলাকার বিভিন্ন ক্লাব, সমবায়কে যতটা সম্ভব আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন জানালেন হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়। করোনা সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ইমার্জেন্সি রিলিফ ফান্ড বা জরুরি ত্রাণ তহবিল গড়েছেন। সেখানে টাকা জমা দেওয়ার অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া আছে। সরাসরি ওই অ্যাকাউন্টে আর্থিক সাহায্য করতে ক্লাব এবং সমবায় সংস্থা ও সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে আহ্বান জানিয়েছেন অরূপবাবু। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বেশ কিছু সংস্থা ওই অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করেছে। এদিন অরূপবাবু নিজেও তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর যৌথ অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ত্রাণ তহবিলে এক লক্ষ টাকা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা এদিন তাঁর বিধানসভা এলাকায় এরকম কিছু মানুষের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বণ্টন করেন। রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বালিতে ঘুরে জিনিসপত্রের দাম খতিয়ে দেখেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাজারে ভিড় ভেঙে পড়া সামলাতে কিছু নিয়ন্ত্রণ লাগু হয়েছিল। সেইমতো এদিনও হাওড়ার বাজারগুলিতে মানুষ নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করেছে। পুরসভা এবং দমকলের যৌথ উদ্যোগে হাওড়ার বিভিন্ন বাজারকে জীবাণুমুক্ত করার কাজ এদিন সকাল থেকে শুরু হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্তর কোনও খবর নেই। তবে পাঁচ শতাধিক মানুষকে গৃহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
চুঁচুড়ার খবরে জানা গিয়েছে, হুগলিতে জনসচেতনতা বেড়েছে অনেকটাই, আবার করোনা সংক্রমণের কোনও হদিশও আপাতত জেলায় মেলেনি। তিনজন আইসোলেশানে থাকা ব্যক্তিকেও নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছে। এই অবস্থায় এবার জেলাজুড়ে দুঃস্থ, অসহায় মানুষদের সাহায্যের জন্যে প্রশাসন থেকে রাজনৈতিক দল নেমে পড়েছে। চন্দননগর কমিশনারেটের কমিশনার হুমায়ুন কবীর নিজ উদ্যোগে ইতিমধ্যেই খাদ্যদ্রব্য দিয়ে সাহায্যের জন্যে একটি ফান্ড গড়েছেন। আজ শনিবার শ্রীরামপুর থেকে সেই ফান্ডের থেকে সাহায্য করা শুরু হবে। অন্যদিকে চাঁপদানি ফাঁড়ি করোনা পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্যে স্যোসাল মিডিয়া নম্বর করে দিয়েছে। চুঁচুড়া পুরসভার এক কাউন্সিলার তাঁর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মারফত খাদ্য দ্রব্য সরবরাহের জন্যে রাস্তায় নেমেছেন। মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, বিধায়ক অসিত মজুমদাররা খাদ্যদ্রব্য দিয়ে সাহায্য শুরু করেছেন। পথে নেমেছে এসএফআই, ডিআইএফআই মতো ছাত্র-যুব সংগঠনও। গৃহবন্দি মানুষের কাছে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তারাও।
ব্যক্তিগত উদ্যোগেও কাজ শুরু করেছেন অনেক মানুষ। বৃহস্পতিবারই নিজের বাড়ি করোনা চিকিৎসার জন্যে ব্যবহার করতে দিতে চেয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলেন চুঁচুড়ার এক বাসিন্দা। শুক্রবার চুঁচুড়ার ময়নাডাঙার এক ব্যবসায়ী স্থানীয় মুদি দোকান মারফত গরিব মানুষের কাছে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। আদতে কাশ্মীরের বাসিন্দা আরশাদ হোসেন গত ১২ বছর ধরে চুঁচুড়াতেই আছেন। তিনিই গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ওই উদ্যোগে নিয়েছেন।
সচেতনতা, আমজনতার অন্য মানুষের পাশের দাঁড়ানোর উদ্যোগের মধ্যেই উদ্বেগের পরিস্থিতিও আছে। জেলায় খাদ্যদ্রব্য নিয়ে সংকট তৈরি হওয়ার পরিস্থিতি এসেছে। চালের দাম আচমকা বেড়ে গিয়েছে, আটা অমিল হয়ে গিয়েছে। ফল, মাছের জোগান নিয়েও উদ্বেগের পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এমনকি অনেক রেশন দোকান থেকে বিনামূল্যের খাদ্যসামগ্রী মিলছে না বলেও অভিযোগ এসেছে।