অনুষ্ঠানটা ছিল ছবির মিউজিক লঞ্চের। কিন্তু প্রথামাফিক সেই ইভেন্ট হল না। বদলে সেদিন উইন্ডোজের অফিসের রুফটপে মুখার্জিদার বউয়ের কলাকুশলীরা যা করলেন তাকে নিছক আড্ডা বলাও ঠিক নয়। বলা যায় মিউজিক্যাল আড্ডা। এই আড্ডায় ছবির পরিচালক থেকে অভিনেতা, গায়ক সকলকে পাওয়া গেল ভিন্ন মেজাজে। পরিচালক পৃথা চক্রবর্তী অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব সামলালেন। অনুষ্ঠান শুরু হল ছবির খুদে সদস্য অ্যাডোলিনার গান দিয়ে। সামনে পুজো না হলেও তার গলায় ‘আয় রে ছুটে আয় পুজোর গন্ধ এসেছে’ শুনতে মন্দ লাগল না। পৃথার আবদারে ছবির কাহিনীকার সম্রাজ্ঞী কবিতা পাঠ করলেন। এরপরই সকলকে চমকে দিয়ে ছবির অন্যতম অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য নিজেকে ‘অসুর’ সম্বোধন করেও গেয়ে উঠলেন ‘তুমি যাকে ভালোবাসো।’ দর্শকাসনে তখন হাততালির বন্যা। অনুষ্ঠান দেখতে হাজির ছিলেন উইন্ডোজের আর এক ছবি ‘রসগোল্লা’র নায়িকা অবন্তিকা। পৃথার অনুরোধে অবন্তিকাকে পাওয়া গেল বাচিক শিল্পী রূপে। পূর্ণেন্দু পত্রীর কবিতা শোনালেন। মুখার্জিদার বউ ছবিটা যাকে ছাড়া অসম্পূর্ণ সেই মুখার্জিদা ওরফে বিশ্বনাথ বসু এরপর মঞ্চের দখল নিলেন। বললেন,‘শাশুড়ি বউমার সমস্যা চিরকালীন। তবে এই ছবি সমস্যার পাশাপাশি সমাধানের কথাও বলে।’ বিশ্বনাথ মঞ্চে থাকবেন আর গান হবে না তাও কি হয়? স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই ‘শিং নেই তবু’গেয়ে আসর জমালেন তিনি। পৃথা একসময় গায়িকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। তাঁর সেই স্বপ্ন তিনি যে চাইলেই পূরণ করতে পারেন তা বোঝা গেল তাঁর গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘সখী ভাবনা কাহারে বলে’তে। ছবির সুরকার ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। গান গেয়েছেন ইমন, শোভন, ঈশান। এরপর তাঁরাও একে একে মঞ্চে এসে ছবিতে তাঁদের গাওয়া গানগুলি শোনালেন। ছবিতে চারটি গান রয়েছে। মুখার্জিদার বউদের ছাড়া অনুষ্ঠান অসম্পূর্ণ। তাই পৃথার সঙ্গে মঞ্চে হাজির হলেন ছবির দুই মুখার্জিগিন্নি- কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনসূয়া মজুমদার। শুধু তাই নয় পরিচালককে সঙ্গে নিয়ে দুই গিন্নি গেয়ে উঠলেন ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’। অনুষ্ঠানের একেবারে শেষে সুরকার যখন গান ধরলেন তখন ষোলোকলা পূর্ণ হল। ইন্দ্রদীপ শোনালেন জগজিৎ সিংয়ের গজল ‘গরজ বরষ’। এক সন্ধ্যায় এতজন পরিচিত মানুষের অজানা প্রতিভার প্রকাশ দেখতে বেশ লাগল। ছবির এহেন ভিন্ন আঙ্গিকের প্রোমোশনের জন্য উইন্ডোজের প্রশংসা প্রাপ্য।

মানসী নাথ                 

ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়