বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
এদিন তারামায়ের পুজো দেওয়ার পর অনেকটাই আত্মবিশ্বাসীর সুর শোনা গেল শতাব্দী রায়ের গলায়। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নই তৃতীয়বার তাঁকে বীরভূম আসনে জিতিয়ে আনবে। পাশাপাশি বলেন, বিরোধীরা অমিতাভ বচ্চনকে প্রার্থী করলেও আমার পরাজয়ের ভয় নেই।
এদিন তারামায়ের মন্দিরে তাঁকে স্বাগত জানান দলের ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায় ও মহিলা কর্মীরা। পরে গর্ভগৃহে ঢুকে মাকে স্পর্শ করে পুজো দেন শতাব্দী রায়। সঙ্গে ছিল মেয়ে সামিয়ানা। বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তারামায়ের আশীর্বাদে দু’বার মানুষের হয়ে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তাঁর আশীর্বাদ আছে বলেই তৃতীয়বারও প্রার্থী হয়েছি। প্রতিদ্বন্দ্বিতা কার সঙ্গে হবে বলে মনে করছেন? প্রশ্নের উত্তরে তাঁর জবাব, গতবার দ্বিতীয় পজিশনে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী। এবারও হয়তো তাদের সঙ্গে লড়াই হবে। কারণ, সিপিএমের অবস্থা খুবই খারাপ। তাঁর বিশ্বাস, গত দু’বারের তুলনায় এবার জয়ের মার্জিন আরও বাড়বে। ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, প্রথমবার মানুষের ভালোবাসা ছিল। ভরসা ও বিশ্বাসের জায়গা ছিল। কিন্তু, কোনও প্রমাণ ছিল না। দ্বিতীয়বার আমার প্রতি মানুষের মনে বিশ্বাস জন্মেছিল যে ভোট দিয়ে ভুল করিনি। এই ১০ বছরে উন্নয়নের প্রচুর কাজ হয়েছে। মানুষের কাছে তার সুবিধা পৌঁছেছে। শুধু রাস্তাঘাটের উন্নয়ন নয়, ব্যক্তিগতভাবে সবুজশ্রী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী সহ নানা সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তাঁরা পেয়েছেন। সেগুলি তো মানুষ মনে রাখবে। তাছাড়া গত ১০ বছরে দলের সংগঠন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জয়ের মার্জিন অনেক বেশি হবে।
এর আগে প্রায়ই শতাব্দী রায় বলতেন, সব কাজ হয়ে গিয়েছে। এদিন অবশ্য তারকা প্রার্থী বলেন, ১০০ শতাংশ কাজ হয়নি। এলাকায় কিছু ব্রিজ আছে যেগুলির সংস্কারের প্রয়োজন। এমপি ল্যাডের টাকায় ওই কাজ করা সম্ভব নয়। কেন্দ্র থেকে যাতে ওই ব্রিজগুলি নির্মাণের টাকা আনা যায়, সে ব্যাপারে তৎপর হব। জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কংগ্রেস ২ শতাংশে নেমেছে। সিপিএমের অবস্থাও তাই বলে আমি মনে করি। ফলে জোটের কোনও প্রভাব পড়বে না। তাছাড়া এখনও ওরা সিদ্ধান্তেই পৌঁছতে পারেনি জোট হবে কি না। যেখানে উপর তলার নেতারাই জোট করতে পারছেন না, সেখানে নিচুতলার কর্মীরা কী করে সেই জোটকে সমর্থন করবেন? ২০১৬ সালেও জোট করেছিল। কিন্তু, দল আরও ভালো ফল করেছিল।
বীরভূমের মানুষ যে তাঁকে ভালোবাসে তা বারবার জানিয়েছেন গুরুদক্ষিণা সিনেমার এই নায়িকা। তিনি বলেন, এখানকার মানুষ আমাকে অসম্ভব ভালোবাসে। আর অনুব্রত মণ্ডল তো আমাকে বলেছেন, তুমি তিন লাখ ভোট বেশি পেয়ে জিতবে। নিশ্চিন্তে থাকো।
গত পাঁচ বছরের অধিকাংশ সময় শতাব্দী রায় একাই বিভিন্ন গ্রাম ঘুরেছেন। কখনও রাস্তায় যাওয়ার সময় গাড়ি থেকে নেমে দুঃস্থদের হাতে বস্ত্র ও খাবারের প্যাকেট তুলে দিয়েছেন। আবার কখনও প্রতিবন্ধী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এলাকার স্কুলগুলির উন্নয়ন করেছেন। তাঁর দাবি, এতে জয়ের পথ আরও সুগম হবে।
এদিকে, বিজেপি এই কেন্দ্রে সেলিব্রিটি প্রার্থীকে দাঁড় করাতে চলেছে বলে খবর। তারাও এই কেন্দ্র নিয়ে আশাবাদী। এপ্রসঙ্গে শতাব্দী রায় বলেন, যে সেলিব্রিটিদের আনছে, তাঁরা কেউই আমার বরাবর নয়। তবে এটা আমার অহংকার নয়। যদি আমার সমকক্ষ কেউ আসে, তাহলেও কোনও ব্যাপার নয়। সেক্ষেত্রে অমিতাভ বচ্চন প্রার্থী হলেও যে কোনও ফ্যাক্টর নয়, সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এদিন মন্দির থেকে বেরিয়ে তারাপীঠে দলীয় কার্যালয়ে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে ভোটের জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য বলেন। পরে ফুলিডাঙার মাজারে যান তিনি। দুপুরে রামপুরহাটের তুম্বনীতে শ্যামপাহাড়ি রামকৃষ্ণ শিক্ষাপীঠের প্রতিষ্ঠাতা তথা এলাকার শিক্ষাবিদ মুকুন্দবিহারী সাহার স্মরণসভায় যোগ দেন শতাব্দী রায়। আজ, শুক্রবার সাঁইথিয়ার নন্দিকেশরী মন্দিরেও পুজো দেবেন তিনি।