নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ২০০১-২০০২ মরশুম। পয়লা বৈশাখের ফুরফুরে আবহেও মোহন বাগান তাঁবুতে টেনশনের চাপা স্রোত। গোয়ার ফাতোরদা স্টেডিয়ামে সেবার ব্যারটোদের প্রতিপক্ষ চার্চিল ব্রাদার্স। জিততেই হবে, অন্যথায় খেতাব পাবে চার্চিল। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে আব্দুল স্যালিউর গোলে চার্চিলকে পরাস্ত করে সুব্রত ভট্টাচার্যের দল। প্রায় সন্ধ্যার মুখে মোহন বাগান তাঁবুতে সেই খবর পৌঁছতেই শুরু অকাল দীপাবলি। পরদিন ব্যারেটোদের স্বাগত জানাতে জনবিস্ফোরণ দেখা যায় বিমানবন্দরে। সোমবার যুবভারতীতেও প্রায় একই পরিস্থিতি। জাতীয় লিগের বদলে মঞ্চ এবার আইএসএল। হাবাস ব্রিগেডের প্রতিপক্ষ মুম্বই সিটি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে হারালেই প্রথমবারের জন্য লিগ-শিল্ড ঘরে তুলবে মোহন বাগান। অন্যদিকে ছাংতে, বিপিনদের দরকার এক পয়েন্ট। সবুজ ঘাসে স্ফুলিঙ্গ ছোটার অপেক্ষা। উন্মাদনা ইতিমধ্যেই আকাশ ছুঁয়েছে। শুক্রবার ক্লাব তাঁবুতে সমর্থকদের জটলায় প্রায় দু’দশক আগের সেই চার্চিল ম্যাচের স্মৃতিচারণ। মুখে মখে ফিরছে ঘরের ছেলে বাবলুর যুদ্ধজয়ের কাহিনি। গল্ফগ্রিনের বাড়িতে বসে সুব্রতও নস্টালজিক। জনি কাউকোদের জন্য তাঁর বার্তা, ‘ভয়ডরহীন ফুটবল খেলুক মোহন বাগান। প্রতিপক্ষকে ঘাড়ে চাপতে দেওয়া চলবে না। লিগ-শিল্ড দিমিত্রিরাই জিতবে। দারুণ ছন্দে রয়েছে দল। সেই আগ্রাসন ধরে রাখতে হবে। মোহন বাগান জিতলেই তো আনন্দ।’
বারপুজোর পরদিন মহারণ। হাজার হাজার সবুজ-মেরুন সমর্থক মাঠ ভরাতে তৈরি। উন্মাদনা আঁচ করে অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইন টিকিট বিক্রির পরিকল্পনাও সারা। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের বক্স অফিস ছাড়াও মোহন বাগান তাঁবু থেকে মিলবে টিকিট। তথ্যাভিজ্ঞমহলের ধারণা, হাউসফুল স্টেডিয়ামে আছড়ে পড়বে শব্দব্রহ্ম। পালতোলা নৌকার দ্বাদশ ব্যক্তির কাজ করবে হাঁটু কাঁপানো জনগর্জন। মিশন বেঙ্গালুরু সম্পূর্ণ করে শুক্রবার বিকেলে শহরে ফিরলেন জনি কাউকোরা। শনিবার শুরু যুদ্ধের প্রস্তুতি। ২১ ম্যাচে ছাংতে, মেহতাব সিংদের পয়েন্ট ৪৭। সমসংখ্যক ম্যাচে ৪৫ পয়েন্টে রয়েছেন বিশাল কাইথরা। তবে কান্তিরাভায় চার গোলে জয় দলের মেজাজটাই পাল্টে দিয়েছে। সূত্রের খবর, সোমবার আন্তোনিও লোপেজ হাবাসকে ডাগ-আউটে বসাতে মরিয়া টিম ম্যানেজমেন্ট। অসুস্থতা কাটিয়ে আগের চেয়ে ফিট তিনি। সহকারী ম্যানুয়েলকে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। মেগা ম্যাচে হাবাসের মতো টাফ কোচ বেঞ্চে থাকলে মানসিকভাবে আরও উদ্দীপ্ত হবেন ফুটবলাররা। পাশাপাশি সাহাল আব্দুল সামাদকে নিয়েও আশাবাদী কর্তারা। তিনি স্কোয়াডে ফিরলে দল আরও শক্তিশালী হবে।