ব্যবসার গতি ও বেচাকেনার সঙ্গে লাভও বাড়বে। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। শত্রু সংখ্যা বাড়বে। ... বিশদ
বীরভূমের পাঁচামি, মল্লারপুর, রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই সহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পাথর শিল্পাঞ্চল। রয়েছে বড় বড় পাথর খাদান। যদিও পরিবেশ আদালতের নির্দেশে ২০১৭ সাল থেকে ২১৭টি খাদানের মধ্যে ২১১টি বন্ধের নির্দেশ থাকলেও অধিকাংশই চলছে। জেলার অর্থনীতির মূল ভিত্তি এই পাথর শিল্পা। পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই শিল্পের উপর নির্ভর করে দিন গুজরান করেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের মুখে সেই পাথর শিল্পাঞ্চল জুড়ে আতঙ্কের ছায়া।
নলহাটির চন্দননগর গ্রামের বাসিন্দা পাথর শিল্পপতি বুধিশল সোরেন বলেন, গত ২২ মে আমার কাছে প্রথম ফোন আসে। দিল্লি থেকে এনআইয়ের নাম করে হিন্দিতে কথা বলছিল। রামপুরহাটের হোটেলে নির্দিষ্ট এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য বলে। আমি দিতে পারব না বলি। এরপর অনেকবার ফোন করে ব্যবসার ক্ষতি হয়ে যাবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। গত রবি ও সোমবারও ফোন এসেছিল। ব্যবসা করে খাই বলে কোথাও অভিযোগ করে ঝামেলায় জড়াতে চাইনি। তবে যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, সেটা প্রশাসন তদন্ত করে দেখলেই কথোপকথন পেয়ে যাবে। তাঁর দাবি, শুধু আমাকে নয়, আরও কয়েকজন পাথর ক্রাশার ও খাদান মালিককে ফোন করা হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোটের সময় ওই শিল্পাঞ্চলের তৃণমূল প্রার্থী মনোজ ঘোষকে বিস্ফোরক মজুতের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে এনআইএ। এখনও তিনি জেলে। স্বভাবতই এনআইয়ের নাম করে পাথর ব্যবসায়ীদের কাছে ফোন আসায় শিল্পাঞ্চলে তীব্র আতঙ্কের পাশাপাশি চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
দিন দুয়েক আগে নলহাটির বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা তথা পাথর ব্যবসায়ী অনিল সিংও নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, খাদান ও ক্রাশার মালিকদের সিবিআই, ইডির ভয় দেখিয়ে ফোন করে হোটেলে ডেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হচ্ছে। এদের ডাকে গিয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার হবেন না।
এব্যাপারে তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যেমন সত্যিকারের এনআইএ দিয়ে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। তেমনি এই সুযোগে নিয়ে বিজেপির বেশ কিছু নেতা এনআইয়ের নাম করে বড় বড় ব্যবসায়ীদের আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলা তুলছেন। নানা দাবি করে রাজনৈতিক আনুগত্য কামনা করছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
যদিও বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মণ্ডল বলেন, বিজেপি নেতারা এনআইয়ের চাকর নয়। এনআইএ একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে। যেখানে যেখানে এনআইএ তদন্ত হচ্ছে, সেগুলি সবই কোর্টের নির্দেশে। কেউ যদি এনআইএর নাম করে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে থাকে তাহলে পুলিস ব্যবস্থা নেবে। এটা বিজেপিকে বদনাম করতে তৃণমূলের চক্রান্তও হতে পারে। আর তদন্তে যদি দেখা যায় সত্যিই আমাদের কেউ ফোন করছেন, তাহলে দল তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।