পেশা ও ব্যবসায় অর্থাগমের যোগটি অনুকূল। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পেতে পারে। ... বিশদ
ছোট্ট একটি মাটির ঘরে পূজাদের পরিবারের বসবাস। রাজমিস্ত্রির কাজের পাশাপাশি অন্যের জমি ভাগে চাষ করে সংসার চালাতেন তাঁর বাবা। মা দুধ ও ঘুগনি-ফুচকা বিক্রি করেন। কিন্তু অভাব পূজাকে থামাতে পারেনি। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঠের কাজ, গোরুর দেখাশোনা, সবকিছুই সামলাতেন পূজা। আর্থিক অনটনের মধ্যেই পূজা ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্স স্নাতক হন। পূজা জানান, বিয়ে না দিয়ে আমার পড়াশোনা চালানোর জন্য বাবা-মাকে নানারকম টিপ্পনি শুনতে হয়েছে। ফলে, আমারও জেদ চেপে গিয়েছিল।
পূজার বাবা শিবনারায়ণ মূলা নিরক্ষর। মা মণিমালা মূলা ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। কিন্তু শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে তাঁরা ওয়াকিবহাল। তাই কষ্টের সংসারেও মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে তাঁরা কখনও দ্বিধা করেননি। পূজার মা বলেন, আমার মেয়ে প্রচণ্ড জেদি। ও সব সময় নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকে। কোনও কিছুকেই পাত্তা দেয়নি। আমাদের কিছু না বললেও ওর চোখে-মুখে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর একটা তীব্র বাসনা দেখা যেত। আমাদের বলত, তেমরা আশীর্বাদ করো, আমি যাতে তোমাদের দুঃখকষ্ট দূর করতে পারি। অবশেষে মেয়ে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছেছে।
পূজা গ্র্যাজুয়েশনের পরই বেলঘরিয়ায় চলে যান। সেখানে ডব্লুবিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির পরিকল্পনা করেন। কিন্তু টাকার অভাবে কোনও বড় প্রতিষ্ঠানে কোচিং নেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই ওখানে একটি মেসে থেকে প্রাইভেট টিউশনি করে একটি অনামি প্রতিষ্ঠানে কোচিং নেন। দু’বার ডব্লুবিসিএসের প্রিলিমিনারিতে বসেন। পুলিসের বিভিন্ন পরীক্ষা দিতে শুরু করেন। পূজা বলেন, ২০২২ সালে প্রথমে পুলিসের কনস্টেবলে চাকরি পাই। তাতে যোগ দেওয়ার কিছুদিন পরেই পুলিসের এসআই পরীক্ষায় সফল হই।
বাড়ি এলে এখনও মা-বাবার কাজে আগের মতোই সহযোগিতা করেন পূজা। ফুচকা তৈরি, আলু সেদ্ধ করা, স্যালাড কেটে দেওয়া সবই করেন। পূজা বলেন, পৃথিবীতে কোনও কাজই ছোট নয়। আমি এই বাবা-মা’র সন্তান হিসেবে গর্ববোধ করি। আশা করি তাঁদের কষ্ট এবার দূর করতে পারব। পূজা মূলা। নিজস্ব চিত্র