উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
গ্রামের বেকার ছেলে-মেয়েদেরও কীভাবে যুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে রূপরেখা তৈরি করছে কৃষিদপ্তর। প্রাথমিকস্তরে আলোচনা শেষ। দ্রুততার সঙ্গে ওই কারখানা তৈরির জন্য প্রশাসনিক প্রস্তুতি চলছে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ব্রিকেট’ হল এক ধরনের জ্বালানি। বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কারখানায় ব্রিকেট বেশি ব্যবহার হয়। যা জমির খড় ও নাড়া থেকে তৈরি করা হবে। কৃষিদপ্তরের দাবি, বহু চাষি খড় ও নাড়া পুড়িয়ে নষ্ট করে। খড় ও নাড়া পোড়ানোর ফলে বিভিন্ন ক্ষতিকারক গ্যাস, তাপ, ধোঁয়া, ছাই-কণা উৎপন্ন হচ্ছে। সেই সঙ্গে জৈব পদার্থ, উদ্ভিদ খাদ্য, মাটির উপকারী জীবাণু পুড়ে নষ্ট হচ্ছে। খড় পোড়ালে প্রচুর কার্বন-ডাই অক্সিসাইড, কার্বন মনোক্সাইড, ছাই, সালফার ডাই অক্সাসাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, এরোসন কণা এবং অনান্য গ্যাস উৎপন্ন হয়। এর জন্য ঘন ধোঁয়াশা উৎপন্ন হয়ে বায়ুর দৃশ্যমানতা হ্রাস করে। এর ফলে, বিশেষত শীতকালে যানাবাহন ও বিমান চলাচল বিঘ্নিত হয়। এই উৎপন্ন গ্রিন হাউস গ্যাসগুলি বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ী। এক একরে ১২-১৬ কুইন্টাল খড় উৎপন্ন হয়। খড়ের মধ্যে থাকা নাইট্রোজেন, ফসফরাস,পটাশিয়াম,সালফার, কার্বন ও অনুখাদ্য পুড়ে নষ্ট হয়। এক ইঞ্চি গভীরতা পর্যন্ত মাটিতে উপস্থিত উপকারী জীবাণু, কেঁচো হ্রাস পেয়ে পরবর্তী ফসলের সমস্যা দেখা দেয়। তাপের প্রভাবে জমির উপরের মাটি শক্ত হয়। তাই জমিতে বাঁচাতে খড় ও নাড়া থেকে ব্রিকেট তৈরির এই নতুন ভাবনা।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় তিনটি ব্রিকেট কারখানা হবে। প্রাথমিক আলোচনা অনুযায়ী গলসি-২, রায়না-২ এবং কালনা-১ ব্লকে ওই তিনটি কারখানা হওয়ার প্রস্তাব হয়েছে। কৃষিদের জমি থেকে কীভাবে ওই খড় ও নাড়া সংগ্রহ করা হবে, কারা সংগ্রহ করবেন, কীভাবে ওই খড় ও নাড়া কারখানায় পাঠানো হবে ইত্যাদি বিষয়গুলি এখন ঠিক করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই তিনটি ব্লকের চাষিদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছে কৃষিদপ্তর। পূর্ব বর্ধমান জেলা কৃষিদপ্তরের উপ অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, জমিতে খড় ও নাড়া পোড়ালে জমির মারাত্মক ক্ষতি এবং পরিবেশেরও ক্ষতি। তাই জমিতে কোনও চাষি যাতে খড় ও নাড়া না পোড়ান তার জন্য আমরা সচেতনতামূলক প্রচার করছি। বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় হোর্ডিং দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্যই আমাদের জেলায় খড় ও নাড়া থেকে তিনটি ব্রিকেট কারখানার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।