বিএনএন, বহরমপুর: কোনও সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই বহরমপুরের ভাকুড়ি বকুলতলার প্রতিবন্ধী চা দোকানের মালিককে খুন করা হতে পারে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস এমনটাই জানতে পেরেছে। পুলিস মৃত ওই যুবকের এক বন্ধুকে আটক করে দফায়-দফায় জেরা করছে। তার কথার মধ্যে তদন্তকারীরা বেশ কিছু অসঙ্গতি পেয়েছেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আটক হওয়া যুবকের সঙ্গে মৃত তরুণ হালদারের ভালো সম্পর্ক ছিল। ওই যুবকের বাড়ির পাশেই তরুণবাবুর চায়ের দোকান ছিল। সে তরুণের বাড়িতেও প্রায় যেত। তরুণবাবু গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে ওই যুবকই তাঁর বাড়িতে খবর দেন। প্রথমে সে তাঁর ভাইকে বলে, তরুণবাবু পথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেও কেন সে বাড়ির লোকজনদের ভুল তথ্য দিল তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। তাছাড়া আটক হওয়া যুবক পুলিসকে প্রথমে জানিয়েছিল, চা দোকানদারকে দুষ্কৃতীরা মাথায় গুলি করে। শব্দ পেয়ে তিনি গ্যারেজের বাইরে এসে দেখেন, ওই যুবক টলতে টলতে হাঁটছেন। আধিকারিকদের দাবি, খুব কাছে থেকে কাউকে মাথায় গুলি করলে সে আর হাঁটার মতো অবস্থায় থাকে না। তাই তার এই তথ্যও কতটা সত্য সেটাও পুলিস খতিয়ে দেখছে। এক আধিকারিক বলেন, ঘটনাটি যথেষ্টই রহস্যজনক। সেই রাতের বেশ কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে। সেখানে এখনও পর্যন্ত কাউকে বাইক নিয়ে পালাতে দেখা যায়নি। এই ঘটনার মোড় সম্পূর্ণ অন্যদিকে ঘুরে যেতে পারে। ওই রাতে ফিস্ট করার সময় বন্ধুদের সঙ্গে কোনও গণ্ডগোল হয়নি। সেটা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। তবে মদের আসর বসেছিল। আটক হওয়া যুবক রহস্য উন্মোচন করতে পারে। আপাতত তাকে দফায়-দফায় জেরা করা হচ্ছে।
জেলার পুলিস সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বুধবার ভোরে ওই চা দোকানদারকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। তাঁর ওই বন্ধু দাবি করেন, ভোরের দিকে দুই দুষ্কৃতী বাইকে আসে। তাদের একজন দূরে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। অন্যজন গুলি করে পালিয়ে যায়। ওই বন্ধুর কথাতে পুলিস নানা অসঙ্গতি পেয়েছে। সেকারণেই তাকে আটক করে তদন্তকারীরা জেরা শুরু করেছে। বিভিন্ন সময় সে ভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিসকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ। মৃত যুবকের স্ত্রী লক্ষ্মী হালদার বলেন, কারা ওকে খুন করেছে বুঝতে পারছি না। সবার সঙ্গে ওর ভালো সম্পর্ক ছিল। আটক হওয়ার যুবকের সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক ছিল।