কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
বিধাননগর পাইনঅ্যাপেল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সজল ঘোষ বলেন, আনারস চাষিরা যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেন সেই তুলনায় তাঁদের আয় কম হয়। পাইনঅ্যাপেল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারটির পরিকাঠামোগত ব্যর্থতার জন্য কেউ সেখানে ব্যবসা করতে চান না। যাওয়ার রাস্তাটি খুবই সরু। সোনার বাংলা অ্যাগ্রো ফার্মার প্রোডিউসিং কোম্পানির সিইও প্রদীপ সিংহ বলেন, বিধাননগর থেকে আনারসের আড়তদারেরা ভিমভারে নতুন মার্কেটে চলে গেলে তাঁদের ব্যবসার সমস্যা হতে পারে। তাই নানা অজুহাত খাড়া করছেন তাঁরা। এই বিষয়ে ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার বলেন, আমি নতুন এসেছি এখানে। আমার এই বিষয়ে কিছু জানা নেই। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব। রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, এক সময় সেখানে কতগুলো পরিকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছিল। সেখানে একটা রাস্তা চওড়া করার বিষয় ছিল। কিন্তু আদিবাসীদের জমি নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। বর্তমানে কাজ কোন অবস্থায় রয়েছে, তা আমার জানা নেই। খুব শীঘ্রই এসজেডিএ’র সঙ্গে আলোচনায় বসব।
জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বিধাননগরের ভিমভারে পাইনঅ্যাপেল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারটি নির্মাণ করে। প্রায় ১৭ একর এলাকা জুড়ে মোট ৫৬টি আড়ত বা দোকানঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল আনারস ব্যবসায়ীদের জন্য। পাশাপাশি যানজট সমস্যা মেটাতে জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভেতরে ভিমভারে এই আনারন উন্নয়ন কেন্দ্র তৈরি করা হয়। দোকান ঘর, পাকা রাস্তাসহ সব রকমের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছিল এই নতুন বাজারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাইনঅ্যাপেল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয় আনারস ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে যে রাস্তাটি পাইনঅ্যাপেল ডেভলপমেন্ট সেন্টারের দিকে গিয়েছে সেটি খুবই সরু। এর ফলে আনারস বোঝাই বড় গাড়ির আনাগোনার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়।
জানা গিয়েছে, গত শতকের ষাটের দশক থেকে আনারসের জয়যাত্রা শুরু হয় বিধাননগরে। এ তল্লাটে ভালো বৃষ্টি হয়। কিন্তু জল দাঁড়ায় না। খটখটে রোদও মেলে। সব মিলিয়ে আনারস চাষের আদর্শ আবহাওয়া। ৫০ বিঘা জমিতে যে চাষ শুরু হয়েছিল, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টরে। বিধাননগরে প্রায় দেড় লক্ষ আনারস চাষি রয়েছেন। কিন্তু প্রতি বছর আনারস চাষিদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ। বছরে প্রায় ৫ লক্ষ মেট্রিক টন আনারস উৎপাদিত হয় বিধাননগরে। সব মিলিয়ে ৩ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আনারস চাষের সঙ্গে যুক্ত। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগর-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত ও চটহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু অংশে আনারসের চাষ হয়। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী খড়িবাড়ি ব্লকেও আনারসের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলা হর্টিকালচার আধিকারিক বিপ্লব সরকার বলেন, হেক্টর প্রতি ৪৭,৪০০ টাকা সরকারি অনুদান দেওয়া হয় চাষিদের। জ্যাম, জেলি, জুস, আচার, স্কোয়াশ সহ অন্যান্য খাদ্য তৈরি করা হয় আনারস দিয়ে। রাজ্যের পাশাপাশি দিল্লি, কানপুর, পাঞ্জাবের জলন্ধর, লুধিয়ানা, অমৃতসর, জম্মু, উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর সহ পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল ও ভুটানেও রপ্তানি করা হয় বিধাননগরের আনারস।