কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
পুলিসের দাবি, অনেকেই টাকা দেওয়া নিয়ে মুখ খুলতে চাইছে না। যাঁরা মুখ খুলেছেন সেখান থেকেই তিন কোটির মতো প্রতারণার হদিশ মিলেছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, একবর্ণার বাসিন্দা ওই প্রতারক মহিলা কল্পনা কর্মকার তার দুই ছেলে কার্তিক ও সুবীর কর্মকারকে নিয়েই প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল। ওই মহিলা আচার-ব্যবহার এবং কথাবার্তায় যেমন চৌখস তেমনি তার দুই ছেলেও প্রচণ্ড স্মার্ট। আর সেই কথাবার্তা ও আচারব্যবহার দিয়েই মানুষের মন কেড়ে তারা কোটি টাকার প্রতারণা করেছিল বলে পুলিস জানিয়েছে। চাঁচলের মহকুমা পুলিস আধিকারিক সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে ওই মহিলা ও তার দুই ছেলে গায়েব হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ এসেছিল। আমরা তদন্ত শুরু করে বেশ কয়েক জায়গায় হানা দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রতারকদের হদিশ মেলেনি। শেষে খবর আসে যে পাঞ্জাবে ওই তিনজন গা ঢাকা দিয়েছে। তখন আমরা সেখানে অভিযান চালাই। শনিবার ধৃতদের জেলায় আনা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য আমরা তৈরি হচ্ছি।
রতুয়ার এক বাসিন্দা তাপস মণ্ডল বলেন, এক পরিচিত’র মাধ্যমে জেনে দ্বিগুন টাকার জন্যে টাকা খাটাতে দিয়েছিলাম। প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু দ্বিগুণ তো দূরে থাকা আসল টাকাও পাইনি। মা ও তার দুই ছেলে কথাবার্তায় এমন চৌখস যে ভাবতেই পারিনি প্রতারণার ফাঁদে পড়েছি। ইংলিশবাজার ব্লকের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতারিতও একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পুলিসের এক কনস্টেবল ও এক সিভিক ভলান্টিয়ারও প্রতারিতদের তালিকায় আছেন।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্পনা কর্মকার তার দুই ছেলেকে নিয়ে পুখুরিয়ার একবর্ণায় থাকত। ওই মহিলার পরিবারের কয়েকজন শিক্ষকতার চাকরি পাওয়ার পরেই তাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছে এমন প্রচার শুরু হয়। ওই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করে মা ও দুই ছেলে মিলে প্রতারণার ছক কষে। প্রথমে একজন, দু’জন করতে করতে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলতে শুরু করে। এর পাশাপাশি ছেলেরা আরও একটি প্রতারণা চক্র ফেঁদে বসে। বাজারে টাকা খাটিয়ে দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেওয়ার চক্র তৈরি করেছিল ওই তিনজন। প্রথম প্রথম যাঁরা টাকা দিয়েছিল সকলেই দ্বিগুণ করে টাকা ফেরত পেতে শুরু করে। এরপর বিষয়টি ছড়াতেই প্রচুর টাকা জমা পড়তে শুরু করে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওই তিনজনের কাছে টাকা জমা পড়তে শুরু করে। কিন্তু এরই মধ্যে চাকরি না পাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসে পড়ায় ওই তিনজনের উপরে টাকার জন্যে চাপ শুরু হয়। তখনই তারা ঘোরাতে শুরু করে বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে গত আগস্ট মাসে কোটি কোটি টাকা বাজার থেকে তুলে নিয়ে তিনজন গা ঢাকা দেয়। পাওনাদারেরা তাদের কোনও হদিশ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত কয়েকজন মিলে গত সেপ্টেম্বরে পুখুরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এরপরই পুলিস তদন্তে নামে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে রাজ্যেরই একাধিক জায়গায় ওই তিনজন লুকিয়ে আছে বলে জানা যায়। কিন্তু অভিযান চালিয়ে সফলতা মেলেনি। এরপর খবর আসে যে পাঞ্জাবে ওই তিনজন আশ্রয় নিয়েছে। শেষপর্যন্ত এসআই চিরঞ্জিত নন্দীর নেতৃত্বে একটি দল পাঠানো হয়। তাঁরাই পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনের কাছের একটি হোটেল থেকে মা ও দুই ছেলেকে ধরে আনে।