নিউ ইয়র্ক, ৪ ফেব্রুয়ারি (পিটিআই): অবশেষে মানব পাচার কাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে নিজের দোষ কবুল করলেন মার্কিন প্রবাসী ভারতীয় যাদবেন্দ্র সিং ভাম্বা। ভারত থেকে বহু সংখ্যক যুবককে অনৈতিকভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করানোর অভিযোগে ৬০ বছরের যাদবেন্দ্রকে ডোমিনিকান রিপাবলিকান পুলিস গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে পুয়ের্তো রিকো জেলা পুলিসের হাতে হস্তান্তরিত করা হয়। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে যাদবেন্দ্রকে ধরার পর তদন্ত শুরু করেন মার্কিন গোয়েন্দারা। তাতে জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জন ভারতীয়কে অনৈতিকভাবে মার্কিন মুলুকে নিয়ে আসেন যাদবেন্দ্র। এর জন্য মোটা অঙ্কের টাকাও নিতেন তিনি। প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার থেকে ৮৫ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত নিয়েছিলেন বলে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি পুয়ের্তো রিকোর একটি আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন যাদবেন্দ্র। জেলা বিচার বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, মানব পাচারই ছিল যাদবেন্দ্রর অন্যতম কাজ। লাভজনক পেশা হিসেবে তিনি তা বেছে নিয়েছিলেন। মানব পাচারের ষড়যন্ত্রে যাদবেন্দ্রই ছিল মূল পাণ্ডা। এই ষড়যন্ত্রে তাঁর কয়েকজন সহযোগীও ছিল। পুয়ের্তো রিকোর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যাদবেন্দ্র তাঁর ষড়যন্ত্রের গোটা প্রক্রিয়ার কথা নিজমুখে স্বীকার করেছেন বলে ওই সূত্রটির দাবি। তাঁর শাস্তি বিধান নিয়ে পরবর্তী শুনানি হবে আগামী এপ্রিল মাসে।
কীভাবে ভারতীয়দের মার্কিন মুলুকে নিয়ে যেতেন যাদবেন্দ্র? তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, চুক্তির বিনিময়ে ভারতে বসবাসকারী যুবকদের আমেরিকায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতেন যাদবেন্দ্র। বিমানে করে তাঁদের প্রথমে থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, আর্জেন্তিনা, ইরান, পানামা, ভেনেজুয়েলা এবং হাইতিতে নিয়ে আসতেন। সেখান থেকে ভারতীয়দের ডোমিনিকান রিপাবলিকের কয়েকটি গোপন আস্তানায় রাখা হত। ওইসব আস্থানায় কিছুদিন রাখার পর তাঁদের ধাপে ধাপে জলযানে করে পুয়ের্তো রিকো কিংবা ফ্লোরিডায় নিয়ে আসতেন যাদবেন্দ্র। এই দু’টি জেলাতেও তাঁর বেশ কয়েকজন সহযোগী ছিল। অনুপ্রেবশকারী ভারতীয়দের পাসপোর্ট, ভিসা এবং বিমানবন্দরে বাধাহীন চেকিং ব্যবস্থা পাকা করার পর তাঁদের নিউ ইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া সহ আমেরিকার বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দিতেন যাদবেন্দ্র। তাঁর এই মানব পাচার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আমেরিকার অভিবাসন দপ্তরের কর্মী, পাসপোর্ট কন্ট্রোল বিভাগের বেশ কয়েকজন অফিসার জড়িত বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানানো হয়েছে।