পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি।প্রতিকার: আজ দই খেয়ে শুভ ... বিশদ
দ্বিতীয় তৃণমূল সরকার গঠনের মাস দুয়েকের মাথায় ২০১৬ সালে ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চে এসে জোড়াফুল শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন কংগ্রেসের এক বিধায়ক। সেই শুরু, তারপর একে একে ডজনখানেক কংগ্রেস ও কয়েকজন বাম বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেন। এই দল ভাঙানোর মঞ্চ হিসেবে বেশ কয়েক বছর ধরে একুশে জুলাইয়ের সভাকেই ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। উল্টে বলা যায়, লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে অন্য দল থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার একটা বাড়তি আকর্ষণও রয়েছে নেতাদের কাছে। কংগ্রেস পরিষদীয় নেতা আব্দুল মান্নানের মতে, শহিদ দিবস চাপা পড়ে গিয়ে তা ‘দলবদলু’ দিবসে পর্যবসিত হয়েছিল। একুশে জুলাই এলেই কে দল ছাড়লো, তা নিয়ে বাড়তি টেনশন হতো। এবার বোধহয় দল ভাঙানোর পথ ছাড়বে তৃণমূল। বহরমপুরের বিধায়ক তথা কংগ্রেস পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে কাকে হাজির করবে তৃণমূল, এই নিয়ে আগে থেকেই চাপা উদ্বেগ কাজ করে। এবার লোকসভা ভোটে ধাক্কা খেয়ে এই দল ভাঙানোর খেলা যদি তৃণমূল বন্ধ করে, তাহলে তা গণতন্ত্রের পক্ষে ভালো।
লোকসভা ভোটে এবার গতবারের চেয়ে ১২টি আসন কমে গিয়েছে তৃণমূলের। অন্যদিকে, বিজেপি বিপুল ভোট বাড়িয়েছে শুধু নয়, ১৬টি আসন বাড়িয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। কংগ্রেস দুটি আসন ধরে রাখতে পারলেও বামেরা খাতা খুলতে পারেনি। ফলে, তৃণমূল বিরোধী অ-বিজেপি শিবিরের দু’দলের ভোট প্রায় তলানিতে নেমে এসেছে। যার ফায়দা লুটেছে বিজেপি। ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট, বাম ও কংগ্রেসের এই ক্ষয় শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপির। অর্থাৎ বাম ও কংগ্রেস যত দুর্বল হয়েছে, ততই তৃণমূল বিরোধী ভোট বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে। মান্নানের ব্যাখ্যা, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে দুর্বল করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব নয়। একথা তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিধানসভা ভবনে সাক্ষাতে বলেছিলেন বলে দাবি করেছেন। এদিন তিনি বলেন, এবারের ভোটে অভূতপূর্ব মেরুকরণ লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই মেরুকরণে তৃণমূল বিরোধিতার সঙ্গে ধর্মীয় বিভাজন সক্রিয় ছিল। তৃণমূল নানা ফন্দি করে বিরোধী দলকে দুর্বল করতে গিয়ে সেই মেরুকরণকেই উৎসাহিত করেছে। ভোটে তার ফল হাতেনাতে পেয়েছে।
লোকসভা ভোটের পর পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেছে তৃণমূল। অ-বিজেপি শক্তিকে আক্রমণের প্রশ্নে দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে তারা। সদস্য সমাপ্ত বিধানসভা অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে শাসক তৃণমূলের সঙ্গে যৌথভাবে কংগ্রেস ও বামেরা সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী প্রস্তাব পাশ করেছে। অর্থাৎ রাজনৈতিকভাবে বিজেপিকে একঘরে করার প্রক্রিয়ায় মমতা কংগ্রেস ও বামকেও পাশে চাইছেন। এই বার্তা স্পষ্ট হতেই একুশে জুলাইয়ের মুখে দল ভাঙনের শঙ্কামুক্ত হয়ে স্বস্তি পেয়েছেন কংগ্রেস নেতারা।