উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
এনআরসি নিয়ে তাঁর অবস্থান যেমন স্পষ্ট, তেমনই নাগরিকত্ব সংশোধনী নিয়ে নিজের মনোভাব মঙ্গলবার সাফ করে দিয়েছেন মমতা। জানিয়েছেন, কোনও অবস্থাতেই এ রাজ্যে ওই বিল কার্যকর করতে দেবেন না। এদিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এনআরসি হবে না, নাগরিকত্ব সংশোধনীও হবে না। কেন ভয় পাচ্ছেন? হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, রাজবংশী, কামতাপুরি সহ বাংলায় যাঁরা থাকেন, তাঁরা সবাই নাগরিক। কোনও ভেদাভেদ এখানে চলবে না। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যই বাংলার সম্পদ। নাম না করে গেরুয়া শিবিরকে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, নাগরিকত্ব সংশোধনীর নামে কেউ কেউ কোথাও কোথাও গিয়ে সংখ্যালঘুদের ভয় দেখাচ্ছে, কোথাও ভয় দেখাচ্ছে রাজবংশীদের, কোথাও তফসিলি জাতির লোকজনকে, কোথাও আবার হিন্দু উদ্বাস্তুদের। তাঁর কথায়, যদি হিন্দু উদ্বাস্তুদের উপর এতই দরদ, তবে কেন অসমে নাগরিক তালিকা থেকে ১৩ লক্ষ নাম বাদ দেওয়া হল? কেন বাদ গেল এক লক্ষ হিন্দিভাষীর নাম আর কেনই বা এনআরসি’তে ঠাঁই হল না এক লক্ষ গোর্খা ভাই-বোনের। তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, আসলে এসবই ফাঁদ। প্রথমে ছ’ বছরের জন্য নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে। সমস্ত সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত। তারপর দয়া হলে মিলবে নাগরিকত্ব। এখানে করতেই দেব না নাগরিকত্ব সংশোধনী। গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের যে সব এলাকায় হিন্দু উদ্বাস্তু আর তফসিলি জাতিভুক্ত মানুষ নাগরিকত্ব লাভের আশায় গেরুয়া শিবিরের ভোটবাক্সে সমর্থন উজাড় করে দিয়েছে, তার মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর অন্যতম। এই জেলাতেই এখন মূল চর্চার বিষয় এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। এহেন জেলায় এসে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী নিয়ে মমতা তাঁর নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করাটাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
গঙ্গরামপুরের সভা সেরে মালদহে পৌঁছেই ফের বিকেল পাঁচটা নাগাদ রথবাড়ি মোড়ের দুর্গাকিঙ্কর অডিটোরিয়ামে এই জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন মমতা। মালদহের বিভিন্ন প্রান্তে ‘ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি’র পতাকাতলে যখন-তখন পথ অবরোধ চলতে থাকার ক্রমবর্ধমান ঘটনায় ক্ষোভ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয়, অসন্তুষ্ট মমতা খাকি উর্দি ছেড়ে নাটকে অভিনয় এবং গান লেখার পরামর্শ দেন পুলিসকে। তাঁর কথায়, কোনও কথা শুনতে চাই না। গত তিন বছর ধরে লাগাতার এসব চলছে। একটা বিশেষ পার্টির মদতে ঝাড়খণ্ডের অর্থ আর মুষ্টিমেয় লোকজনের মাধ্যমে মালদহে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। কাকে ভয়, কীসের ভয় আপনাদের (পুলিস)? আদিবাসী ভাই-বোনকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের টাকায় বাংলা চলবে, নাকি মালদহ চলবে! রাজ্য পুলিসের ডিজি বীরেন্দ্র এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে তাঁর নির্দেশ, সিআইডি, এসটিএফ এবং এনফোর্সমেন্টকে কাজে লাগান। কারা এসবের নেপথ্যে রয়েছে আর কারাই বা বাইরে থেকে মদত দিচ্ছে, খুঁজে বের করতেই হবে।