উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, প্রবল ঝড় ও বৃষ্টির জেরে সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ সহ বসিরহাটের অন্যান্য ব্লকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ ও বসিরহাটে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রচুর বাড়ি ঘর, গাছ, ইলেকট্রিক পোস্ট ভেঙে পড়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর, এনডিআরএফ ও সিভিল ডিফেন্সের পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে রাস্তাঘাট পরিষ্কার করার কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে আমরা সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষকে চিঁড়ে,গুড়, গুঁড়ো দুধ ও প্যাকেট জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও রান্না করা খাবার দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের সুন্দরবন লাগোয়া এলাকায় শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত দফায় দফায় ঝড় ও বৃষ্টি হয়। তাতে তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হলেও রাত দেড়টার পর থেকে ঝড় ও বৃষ্টির দাপট বাড়তে থাকে। রাত আড়াইটার পর ঝড় ও বৃষ্টির দাপট মারাত্মক ভাবে বেড়ে যায়। ৩টা ২০ মিনিট থেকে ঝড়ের তাণ্ডবে চরম বিপর্যয় শুরু হয়। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১ ও ২,হাসনাবাদ, মিনাখা ব্লকের একের পর এক গ্রাম কার্যত লণ্ডভণ্ড হতে শুরু করে। গাছ পড়ে একের পর এক বাড়ি ভেঙে পড়ে। ইলেকট্রিক পোস্টও দেদার উল্টে পড়ে। প্রবল ঝড় ও বর্ষার কারণে, একরের পর একর ধান জমি ও মাছ চাষের ভেড়ি ভেসে যায়। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মানুষের মনে মুহূর্তে আয়লার স্মৃতি ভেসে ওঠে। ওই সময় গাছ চাপা পড়ে বসিরহাট ১ ব্লকের গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের শসিনা গোকনা গ্রামের রেবা বিশ্বাস(৪৭), হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের ছোট সাহেবখালি এলাকার বাসিন্দা প্রকৃতি মৃধা(৬০), সন্দেশখালির দারির জঙ্গল এলাকার বাসিন্দা বিদেশি সর্দার(৫৬), হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের গোবিন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মালেকানা ঘুমটি গ্রামের বাসিন্দা সুচিত্রা মণ্ডল(৬৫) মারা যান। এই চার জন ঘরের মধ্যেই ঘুমিয়ে ছিলেন। ঝড়ের দাপটে উল্টে পড়া গাছ ঘরের চাল ভেঙে নীচে পড়ে। গাছ ও ঘরের চাল সরিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা রবিবার ভোরে তাঁদের উদ্ধার করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। চিকিৎসক পরীক্ষার পর তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। বসিরহাট ১ ব্লকের গোটরা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাটনিয়া গ্রামের বাসিন্দা এলাকার মইদুল গাজি(৫৯) রবিবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে বাড়ির বাইরে বের হন। আচমকা ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি তার উপর উল্টে পড়ে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের দুলদুলি ফেরিঘাটে তিনটি বোট জলে ডুবে গিয়েছে। এখানকার গোবিন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি স্লুইসগেট বসে গিয়ে নদীর জল ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিন সাত সকালে সন্দেশখালির ধামাখালি পৌঁছন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এরপর সেখান থেকে লঞ্চে জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, বসিরহাটের পুলিস সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই সহ অন্যান্য পুলিস ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে যান। রাত পর্যন্ত তাঁরা সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক পরিদর্শনের পাশাপাশি প্রশাসনিক বৈঠক করেন।