হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
টালিগঞ্জ থানার মধ্যে পুলিস আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় রীতিমতো অসন্তুষ্ট পুলিস কমিশনার। বাহিনীর সুনাম রক্ষায় তিনি যথেষ্ট তৎপর। থানায় এই ধরনের ঘটনা যে বরদাস্ত করা হবে না, তা অফিসারদের পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেছেন। পাশাপাশি আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, সমস্ত বিষয় কন্ট্রোল রুম থেকে শীর্ষকর্তাদের জানাতে হবে। যাতে তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ফোর্স পাঠানো যায় এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সেই সঙ্গে টালিগঞ্জের ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে ওসির ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয় লালবাজার। কেন তিনি সকাল অবধি বিষয়টি লালবাজার ও শীর্ষকর্তাদের না জানিয়ে আপসে মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, পুলিসের অভ্যন্তরীন তদন্তে তাঁর গাফিলতির বিষয়টি উঠে আসছে।
কমিশনারের মেজাজ বুঝেই রীতিমতো তেড়েফুঁড়ে মাঠে নেমেছেন লালবাজারের কর্তারা। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৩২ এর মতো কড়া ধারা (কর্তব্যরত পুলিসকর্মীদের মারধর) যুক্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেছে পুলিস। থানার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তা দেখে গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন, চেতলার ১৭ নম্বর বস্তির অধিকাংশ বাসিন্দাই রবিবার রাতে থানায় চলে এসেছিল। এরপর একে একে শনাক্ত করার কাজ শুরু হয়। গোয়েন্দা অফিসাররা এর ভিত্তিতেই পুতুল ও আকাশকে চিহ্নিত করেন।
ফুটেজে দেখা গিয়েছে, পুতুলের নেতৃত্বে বড় দলবল থানায় ঢুকছে। তাদের হাতে রয়েছে লাঠিসোটা। অশ্রাব্য গালিগালাজ করতে করতে তারা থানার উপরে উঠে যায়। পুতুলের নেতৃত্বে শুরু হয় তাণ্ডব। কর্তব্যরত পুলিসকর্মীদের পুতুল মারধর করে বলে অভিযোগ। তদন্তকারী অফিসারদের কথায়, ডিউটি অফিসারের উর্দি ধরে টানাটানি করছিল তার মেয়ে নিশা। পুলিসকে মারধরের কথা মেনে নিয়েছে সে। তার পাল্টা দাবি, পুলিস তাদের মারধর করেছে। গোটা ঘটনার জন্য অবশ্য ক্ষমাও চেয়েছে। তার সঙ্গী ছিল, পুতুলের ডানহাত বলে পরিচিত আরও এক মহিলা। তাকেও খুঁজছেন গোয়েন্দা অফিসাররা। ফুটেজ বিশ্লেষণ করার পর গোয়েন্দারা জানতে পারছেন, কনস্টেবল বিমান দাসকে মারধর করছিল আকাশ ও গুল্লু।
রবিবার রাতেই চেতলা থানার ওই বস্তিতে তল্লাশিতে যান অফিসাররা। সেখানে পুতুলের দলের সামনে রীতিমতো বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। এই সময় আকাশ, গুল্লু, রণজয় এলাকায় ছিল। সুযোগ বুঝে তারা এলাকা ছেড়ে পালায়। সমস্ত বাধা দূর করে গ্রেপ্তার করা হয় ছোটকা ও দীপককে। তাদের জেরা করে জানা যায়, পুতুলই ডেকে নিয়ে এসেছিল সবাইকে। ধৃত দুজনের কাছে তথ্য পেতে তাদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিস। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে ফের ওই এলাকায় তল্লাশিতে যায় গোয়েন্দা বিভাগের টিম। সেখান থেকেই ধরা হয় পুতুল ও তার সহযোগী পূর্ণিমাকে।
এদিকে টালিগঞ্জের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁর বক্তব্য, পুলিসকে মারধর করা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। অপরাধীদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিস। কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে পুলিসকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিসের হাতে সেই আইন রয়েছে।