হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক থানার ভবানীপুরের বাসিন্দা বাবলু ঘোষের ছেলে বিশ্বজিতের বিয়ে ঠিক হয় গাজোলের আলমপুরে। বুধবার গভীর রাতে ছিল বিয়ের লগ্ন। পাত্র এবং তাঁর কয়েকজন ঘনিষ্ঠ পরিজন ও বন্ধুবান্ধব আগেই চলে যান বিয়েবাড়িতে। বাকি আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা একটু দেরি করেই বেরিয়েছিলেন। সকলেই বরাযাত্রী হিসেবে বিয়েতে অংশ নেওয়ার আনন্দে মশগুল হয়েছিলেন। মোট সাতটি গাড়ি বরযাত্রীদের জন্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। দু’টি গাড়ি আগেই রওনা দিয়ে দেয় পাত্রীর বাড়ির উদ্দেশ্যে। বাকি গাড়িগুলি রওনা দেয় বেশ কিছুক্ষণ পরে। পাঁচটি গাড়ির মধ্যে দু’টি গাড়ি বাকিগুলির থেকে খানিকটা এগিয়ে যায়। সেই দু’টি আগেই সুজাপুরে চলে আসে। তারপর সুজাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছে একটি জলাশয়ের পাশে গাড়ি দু’টি কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়িয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, সেই সময়েই তীব্র গতিতে ছুটে আসা একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে একটি গাড়ির পিছনে। ওই গাড়িটিতে ঠাসাঠাসি করে বসেছিলেন ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে চারজন মহিলা সহ দু’টি শিশুও ছিল। লরির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুবোধ ঘোষ(৫০), বাপন ঘোষ(২০), তপন মণ্ডলের(২৫)। সজোরে ধাক্কার বেগ সামলাতে না পেরে গাড়িটি জাতীয় সড়কের পাশে থাকা নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারে নামেন অপর গাড়ির যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। নয়ানজুলি থেকে উদ্ধার করা হয় শেখর ঘোষ(২৮) ও গাড়িটির চালক সারওয়ার হোসেনের(৩৫) নিষ্প্রাণ দেহ। উদ্ধার করা হয় আহত শিশু এবং মহিলাদেরও।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কালিয়াচক থানার পুলিস। ততক্ষণে পৌঁছে যায় বরযাত্রীদের বাকি গাড়িগুলিও। মৃত ও আহতদের পাঠানো হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পাঁচজনকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আরও দুই যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় কলকাতায়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পথে নদীয়ার কৃষ্ণনগরের কাছে মৃত্যু হয় ধনঞ্জয় ঘোষ(৪০) নামে আরও এক বরযাত্রীর। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ছয়।
মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ঘাতক লরিটিকে আটক করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন ঘটনার পরেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। পরে তিনি মৃতদের বাড়িতেও যান। সাবিনা বলেন, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করা যায় কি না, সেবিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।