বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
কাশ্মীরের পুলওয়ামার জঙ্গিহানায় পাক যোগ স্পষ্ট হতেই আন্তর্জাতিক মহলে একঘরে হয়ে পড়েছে পাকিস্তান। নিরাপরাধ ৪৯ আধাসেনার মৃত্যুতে পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। তারমধ্যে রয়েছে, তড়িঘড়ি পাকিস্তানের উপর থেকে সবথেকে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের তকমা তুলে নেওয়া। পাক পণ্যের উপর ২০০ শতাংশ শুল্ক চাপানো। ভারতের নদীর জলের পাকিস্তানে প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত। ভোর-রাতে সীমান্ত পেরিয়ে বিমানহানা চালিয়ে বালাকোটে অবস্থিত জয়েশ-ই-মহম্মদের সবথেকে বড় জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। সন্ত্রাসদমনে ভারতের পদক্ষেপকে কুর্নিশ জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া সহ ৪৯টি দেশ।
অর্থ সাহায্য বন্ধ করে সন্ত্রাসদমনে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পাকিস্তানকে আগেই বলেছিল এফএটিএফ (ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স)। পুলওয়ামায় পাক মদতপুষ্ট জয়েশ জঙ্গিদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলতেই পাকিস্তানের উপর আরও চাপ বাড়িয়েছে প্যারিসের এই আন্তর্জাতিক সংগঠন। গত জুন মাসে জঙ্গিদমন, অর্থ তছরুপ এবং সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিক সাহায্য রোধে দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল এফএটিএফ। সেইমতো পাকিস্তানকে ‘ধূসর তালিকাভুক্ত’ করেছিল তারা।
শনিবার পাক অর্থমন্ত্রক বলেছে, এশিয়া-প্যাসিফিকের জয়েন্ট গ্রুপ-এ ভারতের উপস্থিতির জন্যই এফএটিএফ স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। এ বিষয়ে ভারতের জায়গায় অন্য দেশকে এপিজির সদস্য করতে এফএটিএফ প্রেসিডেন্ট মার্শাল বিলিংসলিকে চিঠি লিখেছেন পাক অর্থমন্ত্রী আসাদ উমর। মন্ত্রীর চিঠি উদ্ধৃত করে ‘এক্সপ্রেস ট্রাইব্যুন’ তার প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘ভারতের পাক বিদ্বেষের কথা সকলেরই জানা। এবং আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাক ভূখণ্ডে সম্প্রতি বোমাবর্ষণ ভারতের সেই শত্রুভাবাপন্ন মনোভাবেরই পরিচয় দিয়েছে।’
এপিজির ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন রিভিউ গ্রুপের (আইসিআরজি) উপসংস্থা হল জয়েন্ট গ্রুপ। অন্যদিকে, এপিজি সদস্য দেশ হল পাকিস্তান। আর এফএটিএফের কাছে পাকিস্তান সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করেছে এপিজি। আবার ভারতের আর্থিক গোয়েন্দা শাখার (ফিউ) ডিরেক্টর জেনারেল হলেন জয়েন্ট গ্রুপের সহ চেয়ারম্যান। সেদিক থেকে সন্ত্রাসদমন নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এফএটিএফের সিদ্ধান্তে ভারতের মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেজন্যই জয়েন্ট গ্রুপের সহ-চেয়ারম্যানের পদ থেকে ভারতকে সরানোর দাবিতে বন্ধু দেশগুলিকে নিয়ে লবি করবে পাকিস্তান বলে জানিয়েছেন উমর।
এ প্রসঙ্গে সর্বশেষ এফএটিএফ বৈঠকে নয়াদিল্লি নিজেদের সদস্যপদের অপব্যবহার করেছে বলেও দাবি করেছে ইসলামাবাদ। উমরের আরও দাবি, এফএটিএফের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আলাদা একগুচ্ছ তথ্যপ্রমাণ জমা দিয়েছে ভারত। আগামী মে মাসে শ্রীলঙ্কায় বৈঠকে বসছে জয়েন্ট গ্রুপ। তারপর জুন মাসে আমেরিকায় বসবে এফএটিএফের প্লেনারি মিটিংয়ের আসর। মনে করা হচ্ছে, এই দু’টি বৈঠকেই ভারত বিরোধিতার প্রশ্ন সরব হবে পাকিস্তান।
যদিও, শনিবারই বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানিয়ে দিয়েছেন, সেদেশের মাটিতে বেড়ে ওঠা ও মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়, সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর চাপ বাড়াবে ভারত।