বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় বসা ইস্তক বিধানসভাকে উপেক্ষা করে চলেছেন। তাঁর দপ্তরের কোনও নির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকলে তা করার উপায় থাকে না। প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি হাজির থাকেন না। বিরোধীদের তরফে এই অভিযোগ এবার তোলার উপায় ছিল না। চলতি বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন থেকে প্রায় রোজই বিধানসভায় হাজির হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্নোত্তর পর্বে নিজের দপ্তরের পাশাপাশি অন্যান্য দপ্তরের বিষয়েও সভায় জবাব দিয়েছেন। বিরোধী ও শাসকপক্ষের তোলা বিভিন্ন প্রশ্নে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি। তবে, তাঁর হাতে থাকা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের পুলিস তথা স্বরাষ্ট্র দপ্তর নিয়ে অতীতের মতো এবারেও আলোচনা হল না। স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য, সংখ্যালঘু বিষয়ক, তথ্য ও সংস্কৃতি, পার্বত্য বিষয়ক এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। এগুলির মধ্যে স্বাস্থ্য দপ্তর ছাড়া সব বাজেট গিলোটিনে গিয়েছে। অর্থাৎ দফাওয়াড়ি বাজেট প্রস্তাব নিয়ে যে বিতর্কের অবকাশ ছিল, গিলোটিনের কবলে তা সম্ভব হয়নি। তাই পরিষদীয় রীতি মেনে ওইসব বিভাগীয় বাজেট বিনা আলোচনায় পাশ হয়ে গিয়েছে।
এতেই আপত্তি তুলেছে বিরোধীরা। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী সদনে হাজির থাকলেও নিজের ঘরে বসে থাকছেন, অথচ নিজের দপ্তরের বাজেট নিয়ে বিতর্কের সুযোগ দিচ্ছেন না। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, মুখ্যমন্ত্রী গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। তাঁর এই আচরণে সেটাই স্পষ্ট। গত কয়েক বছর তিনি সেভাবে বিধানসভামুখী হননি। যখন খুশি এসে কিছু বক্তৃতা দিয়ে চলে যেতেন। এবার কোনও এক অজ্ঞাত কারণে তাঁর সেই আচরণ কিছুটা বদলেছে। রোজই সভায় আসছেন। কিন্তু পুলিস বাজেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা এড়িয়ে গেলেন স্রেফ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে। মান্নানের দাবি, বিধানসভায় উপস্থিতি বাড়লেও বিরোধীদের উপেক্ষার স্বৈরাচারী মনোভাব বদলায়নি মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি বলেন, বিরোধীরা সরকারের গোমস্তা নয়, তাই সভা বয়কট করেছে। একইভাবে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী মনে করেন, বিগত পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে ব্যাপক সন্ত্রাস হয়েছে। পুলিস রাজনৈতিক পক্ষাপাতিত্ব করেছে। এমন ভোট নিয়ে সারা দেশে শোরগোল পড়েছিল। তারপর এটাই ছিল প্রথম পুলিস বাজেট। মুখ্যমন্ত্রী সেই বাজেট বিতর্ক এড়িয়ে গেলেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই গণতন্ত্রকে হত্যা করছেন।
এদিন অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে গিলোটিন প্রসঙ্গ আসতেই কংগ্রেস ও বিরোধী সদস্যরা সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে কক্ষত্যাগ করেন। পরে বাইরে নকল অধিবেশন বসান কংগ্রেস ও বাম সদস্যরা। সেখানে মনোজ চক্রবর্তী, তন্ময় ভট্টাচার্য, ইমরান আলি রামজ, আলবিরুনি, অসিত মিত্র, সুখবিলাস বর্মা, রমা বিশ্বাস, অশোক ভট্টাচার্য প্রমুখ অংশ নেন। রাজ্যের পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায়ের মতে, বিরোধীদের এইসব নাটক মঞ্চস্থ করতে হচ্ছে নিজেদের রাজনৈতিক হতাশাকে ঢাকা দিতে। কেননা, বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকেই (বিএ) কোন কোন দপ্তরের বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে, তা স্থির করা হয়। সেখানে বিরোধী সদস্যদের উপস্থিতিতে গিলোটিন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তারপরেও বাইরে তা নিয়ে হট্টগোল পাকানো মোটেই সংসদীয় আচরণ নয় বলে দাবি করেন তাপসবাবু।