হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাত বলেন, এক বছর ধরে আমাদের কাছে চিকিৎসাধীন থাকা ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির পরিচয় জানা গিয়েছে। উনি উনার পরিবারের সদস্যদের চিনতে পেরেছেন। উনাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উনার মা বনগাঁয় আসছেন। হ্যাম রেডিও পরিবারের সহযোগিতায় মায়ের হাতে ছেলেকে তুলে দেওয়ার জন্য আমরা উদগ্রীব হয়ে রয়েছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে বনগাঁ স্টেশন লাগোয়া এলাকায় রাস্তার ধারের আবর্জনা থেকে খাবার খুঁজে খাচ্ছিলেন জানকি আর। কেউ দেখতে গেলেই তিনি তাঁদের তাড়া করছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মারফৎ খবর পেয়ে পুলিস তাঁকে উদ্ধার করে বনগাঁ হাসপতালে পাঠায়। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার কারণে তিনি প্রথমে চিকিৎসক ও নার্সদের দেওয়া ওষুধ খেতে অস্বীকার করেন। খাবার খাওয়াও বন্ধ করে দেন। চিকিৎসক বা নার্স কথা বলতে গেলে তাঁদের আক্রমণও করতেন তিনি। ধীরে ধীরে চিকিৎসক ও নার্স তাঁর আস্থা অর্জন করে চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু তাঁর ভাষা মাসখানেক আগেও কেউ বুঝতে পারেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাঁর পরিচয় উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়ে হ্যাম রেডিও কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালের শঙ্করপ্রসাদ মাহাত তাঁর জন্য নতুন জামা ও প্যান্ট কিনে দেন। সেই জামা পেয়ে বেজায় খুশি হওয়া জানকিবাবুকে নিজের চেম্বারে ডেকে নিয়ে যান সুপার সাহেব। এরপর তাঁর বলা কথা মোবাইলে রেকর্ড করে হ্যাম রেডিও কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠান। সেই সূত্র ধরে রাতভর খোঁজের পর শুক্রবার জানকি আরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব হ্যাম রেডিও সংগঠনের সদস্য মঞ্জুনাথ আর। তামিলনাড়ুর ভিল্লুপুরম জেলার পুরানগরাই গ্রামে গিয়ে তাঁর ছবি মা মিশিয়ামালা ও গ্রামের সকলকে দেখান। ওই ছবি দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মা। ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে তিনি বলেন, ১১ বছর আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছেলে হারিয়ে গিয়েছিল। ছেলে যাওয়ার তিন বছরের পর বউমা নাতিকে নিয়ে চলে যায়। এত বছর পর ছেলেকে ফিরে পাব ভাবিনি।
ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগবিশ্বাস বলেন, ১১ বছর ধরে নিখোঁজ জানকি আরের পরিচয় জানা গিয়েছে। তিনি পুরনো ছবি দেখে নিজের ভাই ভাদামালাই আরকে চিনতে পেরেছেন। আমরা দ্রুত মায়ের হাতে ছেলেকে তুলে দিতে মুখিয়ে রয়েছি। উনার স্ত্রী ও পুত্র রয়েছে। এরপর আমরা উনার স্ত্রী ও পুত্রের খোঁজ করব। বাড়ি ফেরার পর উনাকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিস ও প্রশাসনের সঙ্গে আমরা কথা বলছি।