উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
বৈঠক শেষে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্যদের ভাইস চেয়ারম্যান অর্পিতা ঘোষ বলেন, জেলা পরিষদে যে পরিমাণ টাকা আছে তা দিয়ে দ্রুত উন্নয়নের কাজ শুরু হবে। এদিনের বৈঠকে বেশকিছু নতুন পরিকল্পনা ঠিক হয়েছে। প্রতিমাসে প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা পরিষদ নিয়ে বৈঠক হবে।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সফরে এসে গঙ্গারামপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। সেখানে জেলা পরিষদের উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে থাকা নিয়ে তিনি ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কেন কাজ হচ্ছে না, তা নিয়ে জেলাশাসকের কাছে জানতে চান। জেলাশাসককে কড়া ভাষায় ধমকও দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে জেলাশাসককে সাফ জানিয়ে দেন, সভাধিপতি না এলে সহকারী সভাধিপতিকে নিয়ে করুন। এটা বিয়ে বাড়ি না যে সবাইকে ডাকতে হবে। সেই ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বুধবার সকালে জেলাশাসক তড়িঘড়ি জেলা পরিষদ নিয়ে বৈঠক ডাকেন।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সভাধিপতি বিজেপিতে চলে যাওয়ার পর থেকেই জেলা পরিষদের উদ্যোগে উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রায় ২৬ কোটি টাকা এসে পড়ে থাকলেও জেলার উন্নয়নে ছিটাফোঁটাও কাজ হয়নি। সেই টাকা কীভাবে খরচ করা যাবে তা নিয়েই এদিন আলোচনা হয়। সভাধিপতি ছাড়া সেই কাজ করা সম্ভব কি না তা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা চলে। তৃণমূলের সদস্যরা দাবি করেন, সভাধিপতি ছাড়া কাজ করা সম্ভব। তবে প্রশাসনিক মহল থেকে এনিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সভাধিপতি ছাড়া কাজ করা জটিল বলেই অনেকে মনে করেন। বৈঠকে উপস্থিত প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা পঞ্চায়েত আইনের বই ঘেঁটে দেখেন। তারপরই কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের তহবিলে বিএডিপি ফান্ডের প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা, আরআইডিএফের প্রায় সাড়ে নয় কোটি টাকা, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের প্রায় দেড় কোটি টাকা, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার ১২ কোটি টাকা সহ প্রায় ২৬ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। এই টাকা খরচ করার বিষয়েই এদিন বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জেলার রাস্তাঘাট, সেতু সহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
তবে সভাধিপতি ও বিজেপির সদস্যদের ছাড়া অর্থের বৈঠক করে জেলা পরিষদের থাকা টাকা কীভাবে খরচ করা যাবে তা নিয়ে প্রশাসনের একাংশে সংশয় রয়েছে। এনিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতির লিপিকা রায় বলেন, আমি উন্নয়নের পক্ষেই রয়েছি। আমি জেলা পরিষদ নিয়ে একাধিকবার বৈঠক ডাকলেও জেলাশাসক তা বাতিল করেছেন। বুধবারের বৈঠক নিয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। ফলে ওখানে কী কাজ করা হবে, না হবে, কীভাবে হবে কিছুই জানি না।
জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর জেলাশাসক এদিন বৈঠকে আমাদের ডাকেন। জেলা পরিষদে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তাই কাজ করতে কোনও অসুবিধা হবে না। সভাধিপতি ও বিজেপির সদস্যরা আমাদের যদি সহযোগিতা না করেন তাহলেও সমস্যা হবে না। সাত দিনের মধ্যে যাবতীয় প্রকল্পের জন্য টেন্ডার করা হবে। এদিনের বৈঠকে জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রণব ঘোষ, সহকারী সভাপধিপতি, অর্পিতা ঘোষ, শঙ্কর চক্রবর্তীর পাশাপাশি তৃণমূলের ১৩ জন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১২টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বৈঠক চলে।