কর্মপ্রার্থীদের কর্মলাভ কিছু বিলম্ব হবে। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য লাভ ঘটবে। বিবাহযোগ আছে। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে ... বিশদ
তবে শুধু থিমপুজো বা প্যান্ডেলের আকর্ষণই নয়, মঙ্গলবারই পুজো শেষ বলে ভাসানোর শোভাযাত্রা নিয়ে এদিন থেকেই কৌতূহল দেখা গিয়েছে বাঁশবেড়িয়া, চুঁচুড়ার অলিগলিতে। কার্তিক সংক্রান্তিকে সামনে রেখে কার্তিকের সঙ্গে অনেক ধরনের দেবদেবীর পুজো যেমন এখানকার একটি বিশেষত্ব আছে, তেমনি আছে ভাসান নিয়ে শোভাযাত্রার প্রতিযোগিতা। ফলে জমাট বাঁধা ভিড় বুধবারের শোভাযাত্রা নিয়েও চর্চায় মশগুল ছিল। আর সেই শোভাযাত্রায় এবার আলোকমালায় সেজে হ্যারি পটারের হাজির হওয়ার গুঞ্জন এখনই ছড়াতে শুরু করেছে।
একে কার্তিকের নানান বাহার, তার সঙ্গে হরেক দেবদেবীর পুজোর কেন্দ্রভূমি বাঁশবেড়িয়া, সাহাগঞ্জে এদিন দুপুর থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় জমতে শুরু করে। দুপুরে বাঁশবেড়িয়ার দুটি খেয়াঘাটের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণে বহিরাগতদের ভিড় করতেও দেখা গিয়েছে। এই ভিড় কখনও পাক খেয়েছে শতাব্দী পার করে আসা কার্তিক পুজোর সনাতন মণ্ডপগুলিতে কখনও বা ঘুরেছে আধুনিক সময়ের দাবিতে তৈরি থিমের রংবাহারি মণ্ডপের খোঁজে। কার্তিক পুজোর ভিড়ে মূলত দু’ধরনের কার্তিকের সমাবেশ বেশি। তার একটি জামাই কার্তিক। মাঝের সড়ক জুনিয়র সবুজ সংঘের মাঠে সেই জামাই কার্তিকের মণ্ডপে এদিন ঠাসা ভিড় দেখা গিয়েছে। ময়ূরপঙ্খী বজরায় বসে থাকা জামাইবেশী কার্তিক দেখতে স্থানীয় যুবকযুবতীরা তো বটেই ভিড় করেছিলেন ভিনজেলার মানুষও। এই ক্লাবকর্তাদের শোভাযাত্রাতেও চমক দিতে হ্যারি পটারের নানান অভিযানকে আলোর সাজে সাজিয়ে তুলছে। ক্লাবকর্তা বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দর্শকদের আমরা শোভাযাত্রাতেও থাকার আমন্ত্রণ করছি। তাই হ্যারি পটারের অভিযান দেখার কথাও জানানো হচ্ছে।
বাঁশবেড়িয়ার আরেক চর্চিত কার্তিক হল, বাবু কার্তিক বা রাজা কার্তিক। রাজবেশে দেব সেনাপতিকে হাজির করে দর্শক টানছে জামাইগলি আমরা ক’জনের উদ্যোক্তারাও। তবে এখানে কার্তিক কোনও রাজমহলে নেই। তাঁকে রাখা হয়েছে সুরের বাহারে। নানান বাদ্যযন্ত্রের মডেল দিয়ে তৈরি মণ্ডপেই বিরাজ করছেন রাজা কার্তিক। ভিড়ের দাপট দেখা গিয়েছে, নব উদয় সংঘের মণ্ডপেও। তামিলনাড়ুর মীনাক্ষী মন্দির গড়ে উঠেছে এই ক্লাব প্রাঙ্গণে। প্ল্যাস্টার অব প্যারিসের সঙ্গে আলোকসজ্জার মনোরম শোভা আমজনতা দেখেছেন তারিয়ে তারিয়ে। এখানকার কার্তিকও অবশ্য আকর্ষণীয়। কারণ, বাঁশবেড়িয়ার কার্তিকের ভিড়ে অর্জুন কার্তিকের সংখ্যা বিশেষ বেশি নয়। খুব পরিচিত রাজা কার্তিকের পুজোর আয়োজন করলেও প্যান্ডেলের শোভায় দর্শক টেনেছে। শালপাতা, পাট, তালাপাতা দিয়ে এই মণ্ডপে বার মাসে তের পার্বণের থিম সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সোমবারের ভিড়ের অন্যতম কেন্দ্র ছিল এই মণ্ডপ।
রবিবার পুজোর দিনই জনস্রোত উদ্যোক্তাদের চমকে দিয়েছিল। কিন্তু উদ্যোক্তাদের ধারণা ছিল পুজো মরশুম ও ছুটির দিনের যুগলবন্দিই মানুষকে উৎসাহিত করেছিল। কিন্তু সোমবার দুপুর থেকেই দর্শকদের ভিড় শহরজুড়ে বাড়তে থাকে। দুপুরের সময় যানবাহন নিয়ে বিধিনিষেধ না থাকায় গাড়ি নিয়ে ঠাকুর দেখার ভিড় দেখা গিয়েছে। আর আলো ঢলে পড়তেই আবালবৃদ্ধবনিতা পায়ে পায়ে ঠাকুর দেখার আনন্দ নিয়ে নেমে পড়েন। শহর জুড়ে মায়াবি আলোর বাহারে চারপাশটাও এক স্বপ্নপুরীতে পরিণত হয়েছিল যেন। বাঁশবেড়িয়া, সাহাগঞ্জের পাশাপাশি চুঁচুড়া, মগরা এমনকী আশপাশের জেলা থেকেও অনেক মানুষের সমাগম হয়েছিল। সেই বিপুল ভিড় সামলাতে গভীর রাত পর্যন্ত পুলিস থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের নাকাল হতে দেখা গিয়েছে।