কর্মপ্রার্থীদের নতুন কর্ম সংস্থানের সুযোগ আছে। সরকারি বা আধাসরকারি ক্ষেত্রে কর্ম পাওয়ার সুযোগ আছে। ব্যর্থ ... বিশদ
হাওড়া থেকে ট্রেনে হরিদ্বার। তারপর বাসে উত্তরকাশী হয়ে ভাটোয়ারির পথে লাতাসরাইতে নেমে পড়তে হবে।
প্রথম দিন: লাতাসরাই (১ হাজার ৪৭৮ মি)— সৌরি গ্রাম (১ হাজার ২১৮ মি)— দুগাড্ডা-বেলাক খাল (২ হাজার ৯৬৬ মি) ১৫ কিমি যাত্রাপথ।
ভাগীরথীরে উপর পুল পেরিয়ে উঠে আসবেন সৌরি গ্রামে। গ্রাম ছাড়িয়ে একটানা চড়াইপথ। পাথর বাঁধান পুরনো পথ। পথ ক্রমে ঢুকে পড়বে গভীর অরণ্যের মাঝে। অসীম নির্জনতা ভেদ করে ভেসে আসবে পাখির কলোবর আর বনের সোঁদাগন্ধ। সব মিলিয়ে এপথে পাবেন অনাবিল আনন্দ। চড়াই ওঠার ক্লান্তি দূর হবে। পথিমধ্যে একটা ঘর দেখতে পাবেন। এ জায়গাটির নাম দুগাড্ডা। ক্রমে রডোডেনড্রনের আধিক্য নজরে পড়বে। ছায়া ছায়া পথে উঠে আসবেন বেলাক খালের উপরে। এখানে বকরিওয়ালাদের কয়েকটি ঘর আছে।
দ্বিতীয় দিন: বেলাক খাল— পাংরানা (২ হাজার ২০৩ মি)— ঝালা (২ হাজার ৪৩৯ মি)— থাতিকাটুর (১ হাজার ৫২৪ মি) ১৬ কিমি যাত্রাপথ।
চারদিকের ঘন সবুজের সমারোহ দেখতে দেখতে বনের মধ্যে দিয়ে নামতে থাকুন। নেমে আসবেন পাংরানা চারণক্ষেত্রে। মেষপালকদের ঘর আছে। একই রকম পথ ধরে নামা আর নামা। নেমে যাবেন ঝালা চটিতে। গুটি কয়েক ঘর আছে। এরপর ধর্মগঙ্গার উপর পুল পেরিয়ে চলতে হবে ওঠানামা পথে। অনেকটা পথ পেরিয়ে পৌঁছে যাবেন ধর্মগঙ্গা ও বালগঙ্গার সঙ্গমস্থলের কাছে থাতিকাটুর গ্রামে। এখানেই বুড়াকেদার বা বৃদ্ধকেদার মন্দিরটি। টিহরী থেকে এখানে গাড়িপথেও আসা যায়।
তৃতীয় দিন: থাতিকাটুর— বেনাক খাল (২ হাজার ০৪২ মি)— কালদি (১ হাজার ৩১১ মি)— ভৈরবঘাটি (২ হাজার ৪৯৩ মি) ১৬ কিমি যাত্রাপথ।
গাড়িপথ চলে যাবে টিহরী অভিমুখে। চড়াইপথে উঠে আসবেন বেনাক খালের ওপরে। এখানে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট আছে। তারপর সহজপথে চলে আসবেন কালদি গ্রামে। গ্রাম ছাড়িয়ে হালকা চড়াইপথে উঠে আসবেন ভৈরবঘাটি। ভৈরবনাথের মন্দির আছে। আছে কালীকমলী ধর্মশালা। বালগঙ্গা ও ভীলঙ্গনা গঙ্গার মাঝে জল বিভাজিকার উপর এই মন্দিরটি।
চতুর্থ দিন: ভৈরবঘাটি— কোপোড়ধার— ঘুত্তু (১ হাজার ৬৭৭ মি) ৮ কিমি পথ।
হালকা বনের মধ্যে দিয়ে উতরাই পথ। নেমে আসবেন এক আপাত সমতল প্রান্তে। তারপর ওঠানামা পথে পৌঁছে যাবেন কোপোড়ধার নামক জায়গায়। এপথে লোকজনের চলাচল নজরে পড়বে। এরপর একটানা নেমে আসবেন একটা নালার ধারে। নালাটি পেরিয়ে আরও নীচে নেমে আসবেন টিহরী-ঘুত্তু বাস পথের উপরে। ভীলঙ্গনার ডানতটের এই গাড়িপথে বেশ খানিকটা এগোলেই ঘুত্তুর জনবসতি।
পঞ্চম দিন: ঘুত্তু (১ হাজার ৫২৪ মি)— গওয়ানা (১ হাজার ৬৭৭ মি)— গায়ানমাণ্ডা (২ হাজার ১৩৪ মি)—পাওয়ালি কাঁটা (৩ হাজার ৯৬৪ মি) ১৬ কিমি যাত্রাপথ।
পুল পেরিয়ে চলে আসতে হবে ভীলঙ্গনার বামতটে। পূর্বদিক থেকে নেমে আসা গওয়ানা গাডের উপর পুল পেরিয়ে গওয়ানা গ্রামটিকে বাঁদিকে রেখে শুরু হবে চড়াই পথ। অতীতে প্রচলিত কথা ছিল যে ‘পাওয়ালি কা চড়াই হাতি কা লড়াই’ অর্থাৎ একদিনে ১৬ কিমি পথে উঠতে হবে প্রায় সাতহাজার ফুট। একটানা চড়াই ভেঙে উঠে আসবেন গোয়ানমাণ্ডা খড়কে। পাহাড়ের ঢালে সামান্য গাছপালা আছে। দুফাণ্ডা খড়ক হয়ে উঠে আসবেন পাওয়ালি কাঁটায়। পাস সংলগ্ন বিস্তীর্ণ চারণভূমি। সেই সুন্দর প্রান্তরের মধ্যে দিয়ে কয়েক পা নামলেই কালীকমলীর চটি ও কয়েকটি ঘর আছে।
ষষ্ঠ দিন: পাওয়ালি কাঁটা— রাজখড়ক (৩ হাজার ৮১০ মি)— তালি (৩ হাজার ৮৭১ মি)— কিউখোলা খাল (৩ হাজার ৬৫৯ মি)— মুগ্গু চটি (৩ হাজার ০৪৯ মি) ১২ কিমি যাত্রাপথ।
পাওয়ালি কাঁটা জায়গাটি অতীব সুন্দর। এখান থেকে উত্তরদিকে একসারি তুষারাবৃত পর্বতচূড়া দেখা যাবে। সকালটা এখানে কাটিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। সুন্দর চারণভূমির মধ্যে দিয়ে প্রায় সমতল পথে রাজখড়ক হয়ে নেমে আসবেন তালি বুগিয়ালে। এ জায়গাটিও খুব সুন্দর। অল্প অল্প গাছপালা আর চারণভূমির মধ্যে দিয়ে ওঠানামা পথে কিউখোলা খালে পৌঁছে যাবেন। এখান থেকে উতরাই পথ। নামার পথে মেষপালকদের ঘর দেখতে পাবেন। নেমে আসবেন মুগ্গু চটিতে। এখানে রাত কাটানোর নামমাত্র ব্যবস্থা আছে।
সপ্তম দিন: মুগ্গু চটি— ত্রিযুগীনারায়ণ (১ হাজার ৯৮২ মি) ৭ কিমি পথ।
রডোডেনড্রন বনের মধ্যে দিয়ে সুন্দর প্রশস্ত পথে নেমে আসবেন ত্রিযুগীনারায়ণ। এখানে থাকা ও খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা আছে। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস যে এখানে শিব ও পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল। মন্দির দর্শন করে ১২ কিমি গাড়িপথে নেমে আসবেন শোনপ্রয়াগ। শোনপ্রয়াগ থেকে বাসপথে ফিরে আসবেন হরিদ্বার।
উত্তরকাশী বা ভাটোয়ারি থেকে মালবাহক নিতে হবে।
পুরো পথের রসদ একসঙ্গে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। পথিমধ্যে অনেক জায়গায় রসদ পাওয়া যাবে। এ প্রোগ্রামটি উল্টোভাবে অর্থাৎ ত্রিযুগীনারায়ণ থেকে ভাটোয়ারি যেতে পারেন।
একই সময় লাগবে।