বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
ফ্যান, রইস, হ্যারি মেট সেজাল, জিরো—সেই ২০১৬ থেকে শাহরুখের একটি সিনেমাও ব্লকবাস্টার হিট হয়নি। ফ্যানদের সেই আক্ষেপ এবার পুষিয়ে দিয়েছেন বাদশা—মার্ভেলের ধাঁচে তৈরি এই ওয়াইআরএফের ‘স্পাই ইউনিভার্স’-এ। সিদ্ধার্থ আনন্দের গল্পে নতুনত্ব তেমন কিছু নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ের সব উপাদানই রয়েছে। ছবির শুরু হয় ভারত সরকারের কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের খবর দিয়ে। আজাদ কাশ্মীর থেকে কোভিডের মতো মহামারী, কিছুই বাদ যায়নি। এমনকী মার্ভেলের মতো কার্যত একটি পোস্ট ক্রেডিট সিনও আছে। আর রয়েছে পরতে পরতে টুইস্ট। গোপন মিশন, বিশ্বাসঘাতকতা, বুদ্ধিমান ভিলেন, একেবারে শেষ মুহূর্তে দেশকে রক্ষা করা—বিনোদনের যাবতীয় মশলা মজুত। তার জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য চিত্রনাট্যকার শ্রীধর রাঘবনের। দুর্দান্ত সংলাপ লিখেছেন আব্বাস টায়ারওয়ালা।
গত কয়েক বছরে রিলিজ করা স্পাই থ্রিলারগুলির সৌজন্যে চরিত্রগুলিও পরিচিত। এক সুপার স্পাই বনাম আর এক সুপার স্পাইয়ের লড়াই। পাঠান (শাহরুখ) এবং জিম (জন আব্রাহাম)। জিম নিজেও প্রাক্তন ‘র’ এজেন্ট। অন্যদিকে, রুবাই ওরফে রুবিনা (দীপিকা পাড়ুকোন) আইএসআই গুপ্তচর। তিনজনকে গিরে আবর্তিত হয়েছে গল্প। ছোট পরিসরে চোখ টানেন ডিম্পল কাপাডিয়া। আশুতোষ রানাকে সেভাবে ব্যবহার করা হয়নি বললেই চলে। তবে চরিত্ররা নয়, পাঠানের মূল আকর্ষণ একমাত্র অ্যাকশন, অ্যাকশন এবং অ্যাকশন। এবং সেটা পুরোপুরি হলিউডি কায়দায়। স্বয়ং টম ক্রুজের ‘মিশন ইমপসিবল’ ফ্র্যাঞ্চাইজি, ‘টপ গান: মাভেরিক’ এবং পরিচালক জর্জ মিলারের ‘ম্যাড ম্যাক্স ফিউরি রোড’ ছবির দুই অ্যাকশন ডিরেক্টর ক্যাসি ও’নিল এবং ক্রেইগ ম্যাকরে কাজ করেছেন ‘পাঠান’-এ। ক্লাইম্যাক্সে মার্ভেলের অ্যাভেঞ্জার ফ্যালকনের মতো উইং পিঠে নিয়ে আকাশে যুদ্ধ ‘মিশন ইমপসিবল’ সিরিজের কথা মনে করাতে বাধ্য। প্রতিটি মারপিটের দৃশ্যই খুব দক্ষ হাতে ফ্রেমবন্দি করেছেন সিনেমাটোগ্রাফার সৎচিথ পলোসে। তবে যে বিষয়টির কথা না বললেই নয়, সেটা ছবির গতি। ২ ঘণ্টা ২৬ মিনিটের ছবি এক মুহূর্তের জন্যও চোখ সরাতে দেবে না। এর জন্য কৃতিত্ব দিতেই হবে এডিটর আরিফ শেখকে। প্রথমার্ধে একাধিক ফ্ল্যাশ ব্যাক সেই গতি খানিক আটকালেও দ্বিতীয়ার্ধ পুরো টানটান। আর বিরতির কয়েক মিনিট পরেই আসে সেই দৃশ্য, স্পাই ইউনিভার্সের সূচনাপর্ব। দেখামাত্র সিটি এবং চিৎকারে ফেটে পড়ে প্রেক্ষাগৃহ।
ছবিটিকে আন্তর্জাতিক মানের করে তুলতে কোনও খামতি রাখেননি পরিচালক সিদ্ধার্থ আনন্দ। তবে সিজিআই-এ খামতি ধরা পড়ে। যদিও স্পাই সিনেমা মানেই উগ্র দেশপ্রেমের কাহিনি—বলিউডের সেই মিথকে আবারও ভেঙেছে এই সিনেমা। তাই তো এই সিনেমায় পাকিস্তানি জেনারেল কাদির ভারতকে শিক্ষা দিতে প্রধান ভিলেনকে (জন) নিয়োগ করলেও, সে কখনও উগ্র ধর্মান্ধ কিংবা ভারতবিরোধী নয়। তাঁর এই অবস্থানের ব্যক্তিগত কারণ রয়েছে। সেটা অবশ্য কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন থাকে। আর ‘বেশরম রং’? গানে ‘বিতর্কিত’ পোশাক এবং নাচ রয়েছে কয়েক সেকেন্ড। কয়েকটি দৃশ্য যে বাদ গিয়েছে মালুম হয়। ছবির একটি মাত্র জায়গায় এসেছে ধর্মের উল্লেখ। যেখানে রুবাই প্রশ্ন করে পাঠানকে, ‘মুসলমান হো?’ পাঠান নিরুত্তাপভাবে উত্তর দেয়, ‘জানি না আমার বাবা-মা কে! দেশই আমাকে লালনপালন করেছে।’ সেই রেশ ধরা থাকে ছবির শেষেও। আর থাকে একটি প্রশ্ন। ভিলেন জিমের মতো যা আমাদেরও ভাবায়—প্রথমে জোয়া (এক থা টাইগার) তারপর রুবাই, আইএসআই কি ভারতীয় স্পাইদের ডেটিং সাইট?