সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
আর তাই বদ্রুন্নিসা (আলিয়া) ভালোবেসে হামজাকে (বিজয়) বিয়ে করলেও – সেই ভালোবাসায় মারধোরও জড়িয়ে থাকে। কখনও চালে কাঁকড় বেশি বলে, কখনও কেবল পানীয়ের ডোজটা একটু বেশি হয়ে গিয়েছে বলে আবার কখনও হামজার কথা অমান্য করে সোসাইটি মিটিং’এ বদ্রু চলে গিয়েছে বলে। মারের উপলক্ষের অভাব হয় না, তবু বদ্রু পরদিন সকালে উঠে বরের জন্য বান-ওমলেট বানায়।
জসমিত কে রিন’এর প্রথম পরিচালনা ‘ডার্লিংস’ ছবির প্রথমার্ধ দর্শকের কাছে এমন কিছু নতুন দৃশ্য নয়। এই ২০২২’এও অনেক পরিবারে মহিলারা স্বামীর জুলুমের শিকার হয়ে থাকে আর ভাবে একদিন নিশ্চয়ই সব ঠিক হবে! বা ধরে নেয় এমনটাই বুঝি স্বাভাবিক। বদ্রুও তাদের থেকে আলাদা নয়। তাই হামজার নেশা ছাড়ানোর উপায় খোঁজে, আর ভাবে একবার বাবা হলেই সে মদ ছেড়ে দেবে।
পরিচালক ‘ডার্ক কমেডি’র আধারে, ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স ঘরে ঘরে আজও কতটা স্বাভাবিক সেটাই তুলে ধরতে চেয়েছেন যা দর্শককে অস্থিরতায় ফেলতে বাধ্য। এই ছবির ইউ এস পি মুখ্য চরিত্রদের অভিনয় আর মা -মেয়ে অর্থাৎ বদ্রু আর শামসু’র (শেফালি) রসায়ন। একসময় হামজার অত্যাচার সহ্য করতে করতে বদ্রু ভাবে অনেক হয়েছে, আর নয়। এবার সে রুখে দাঁড়াবে। (বহত হো গয়ি হ্যায় ফিল্ডিং, আব ব্যাটিং চালু)। মধ্যবিত্ত পরিবারের মা-মেয়ে কী করে একসঙ্গে মুম্বইয়ের মতো ব্যস্ত আর কঠিন শহরে পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পাওয়ার শক্তি সঞ্চয় করে, তাই নিয়েই ছবির দ্বিতীয়ার্ধ।
প্রায় আড়াই ঘণ্টার কাছাকাছি এই ছবির দৈর্ঘ্য হলেও সবটাই বেশ টানটান। রিনের সঙ্গে এই ছবির সহ-লেখক পরভিন শেখ। গল্পের মধ্যে দিয়ে রাগ, উদ্বেগ, অসহায়তা -এই সব অনুভূতিগুলিই দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন। বিজয় মৌর্যর লেখা সংলাপে এমন কিছু ওয়ান-লাইনার আছে যা সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলোকে নাড়িয়ে দিয়ে যায়। আলিয়ার ‘বদ্রু’ দেখতে দেখতে কোথাও ‘গালি বয়’ ছবির ‘সফিনা’র কথা মনে পড়বে। এই চরিত্র যেন তাঁর জন্যই লেখা। শেফালি ‘শামসু’র চরিত্রে অত্যন্ত দক্ষ। আর ছবি জুড়ে হামজাকে দেখতে দেখতে যে রাগ আর ঘৃণা তৈরি হয় – তার জন্য যথেষ্ট তারিফের যোগ্য বিজয় বার্মার অভিনয়। জুলফির চরিত্রে রোশন ম্যাথিউকেও বেশ লাগে।
প্রশ্ন উঠতে পারে ‘জুলুমের বদলা জুলুম’ এই কি তবে ছবির ভিত্তি ছিল? এই সময় দাঁড়িয়ে তা ঠিক কতটা সমস্যার? সব ছবিই কিছু না কিছু প্রশ্নচিহ্ন রেখে যায়। তবে সিনেমা যেহেতু অনেক অংশেই দর্শককে অনুপ্রেরণা জোগায়, তাই ‘ডার্লিংস’ দেখে কিছু মেয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস পেলেই এই ছবি সার্থক।