Bartaman Patrika
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

সাংসারিক টানাপোড়েন এড়িয়ে চলবেন কীভাবে?

টেনশন, মেজাজ হারানো, রাগ ইত্যাদি দৈনন্দিন জীবনের নিত্য ঘটনা। কিন্তু তা এড়িয়ে ভালো থাকার উপায়ও জানা চাই। সাংসারিক টানাপোড়েনের মাঝেও নিজেকে ভালো রাখার উপায় জানালেন ডঃ অমিত চক্রবর্তী।

শাশুড়ি-পুত্রবধূ
সাংসারিক সম্পর্ক এবং সেই সংক্রান্ত টেনশন বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে গোড়াতেই যে সম্পর্কের কথা মনে হয় তা, শাশুড়ি ও পুত্রবধূ। এই সম্পর্কে তিক্ততা যেন সমাজসিদ্ধ একটা ঘটনা। সম্পর্কটা খারাপের বদলে ভালো হলেই বরং তা বিস্ময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। প্রশ্ন হল এই সম্পর্কে টেনশন থাকলে তা কাটাবেন কী করে? মনোবিদ হিসেবে এই ধরনের পারিবরিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি আমাদের সভ্যতার আদিতেই রয়েছে পুরুষতন্ত্রের একটা বিশাল ভূমিকা। নারী হলেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। নানাবিধ নারী উন্নয়নের পরেও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির বিশেষ একটা পরিবর্তন চোখে পড়ে না। এই যখন পরিস্থিতি, তখন মহিলারা সচেতন বা অবচেতন মনে একজন পুরুষকে অধিকার করতে চান। সেই অধিকার কিন্তু সম্পূর্ণ পরোক্ষে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার হওয়ার আশায়। অর্থাৎ যে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকার নারী তার জন্মগত কারণে হারিয়েছে, একটি পুরুষের উপর অধিকারের মাধ্যমে তা পাওয়ার আশা রাখে তারা। এখান থেকেই শাশুড়ি ও পুত্রবধূর সম্পর্কের যাবতীয় দ্বন্দ্ব ও তিক্ততার সূত্রপাত। এখানে শাশুড়ি বা পুত্রবধূ কারও কাছেই কিন্তু অপরপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং ‘ছেলে’ বা ‘স্বামী’-টিই গুরুত্বপূর্ণ। তাকে ঘিরেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। শাশুড়ি (ছেলের মা) চান ছেলের উপর তাঁর অধিকার বজায় থাক, আর পুত্রবধূ চায় নিজের স্বামীকে অধিকার করতে। আর সেখান থেকেই অধিকাংশ শাশুড়ি-বউমার সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়। ফলে শাশুড়ি এবং পুত্রবধূ দু’জনেই যদি নিজের স্বভাবসিদ্ধ ‘আমিত্ব’-কে বিসর্জন দিতে পারে তাহলে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়। এক্ষেত্রে সম্পর্কগুলোকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে। অর্থাৎ ‘আমার ছেলে’ বা ‘আমার স্বামী’ হিসেবে ভাবলে চলবে না। বরং পুত্র বা স্বামীর অস্তিত্বকে সাংসারিক গণ্ডিতে আবদ্ধ রাখতে হবে। অর্থাৎ মায়ের ক্ষেত্রে তাঁর পুত্র এবং বউয়ের ক্ষেত্রে তাঁর স্বামী আর পাঁচজন সাংসারিক সদস্যের মতোই একজন। এবং সংসার সুষ্ঠুভাবে পরিচালনের ক্ষেত্রে শ্বশুর, শাশুড়ি, পুত্রবধূর মতোই তাকেও দরকার। এই সারসত্যটা যখনই শাশুড়ি এবং পুত্রবধূ উপলব্ধি করবেন তখনই ‘আমার ছেলে’ বা ‘আমার স্বামী’ জাতীয় ধারণা থেকে তাঁরা বেরিয়ে আসতে পারবেন এবং পারস্পরিক দ্বন্দ্বের সিংহভাগেরই সমাধান হবে। 
এই দ্বন্দ্ব থেকে যে টেনশন তৈরি হয় তা কাটিয়ে উঠতে বাড়ির ছেলেটিরও একটা বড় ভূমিকা থাকে। সে যদি মা এবং স্ত্রীয়ের সম্পর্কের প্রতি একটু মনযোগী হয়, তাহলে কিন্তু সমস্যা অনেকটাই কমে। মা ও স্ত্রীর সম্পর্কের টানাপোড়েনঘটিত টেনশনে ছেলেরা হয় কোনও একপক্ষে ঝুঁকে পড়ে অথবা তা এড়িয়ে যেতে চায়। দু’ক্ষেত্রেই সমস্যা ঘনীভূত হয়। কিন্তু তার বদলে যদি ছেলেটি খুব বুঝে শুনে ব্যালান্স করে চলতে পারে তাহলে শাশুড়ি বউমার সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং সেই থেকে তৈরি হওয়া টেনশন অনেকটা লাঘব হয়। ছেলেটিকে মা ও স্ত্রীর মধ্যে একটা ব্যালান্স তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে মাকে বোঝাতে হবে, আবার দরকারে স্ত্রীকেও। অনেক ক্ষেত্রে আগে থে঩কেই সমস্যার আঁচ পেয়ে ঘটনার মোকাবিলা করতে হয়। এইভাবে মা ও স্ত্রীর মধ্যে যদি ছেলেটি একটা সেতুর কাজ করতে পারে তাহলে ঝগড়া, দ্বন্দ্ব এবং সেই থেকে তৈরি টেনশন অনেকটাই কমানো যেতে পারে। এমন হলে অনেক সময় শাশুড়ি-পুত্রবধূ একে অপরের বন্ধুও হয়ে ওঠে।
‌এই সম্পর্কে টেনশনের আর একটা দিকও রয়েছে, তা হল সংসারকেন্দ্রিক। এটা অবশ্য সেখানেই হয় যখন ছেলে-বউ বাবা মায়ের সঙ্গে থাকে। অন্যথায় এই সমস্যা ততটা দেখা যায় না। শাশুড়ির সংসারে পুত্রবধূ প্রাথমিকভাবে অতিথি হয়েই আসে। সে ‘বাইরের লোক’। কিন্তু এমনই একজন যে পরবর্তীকালে বাড়ির সদস্য হয়ে উঠবে। এক্ষেত্রে শাশুড়ির মনে প্রথম থেকেই একটা ভয় কাজ করে, সাংসারিক আধিপত্য হারানোর ভয়। নিজের হাতে তৈরি সংসার অন্যের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আশঙ্কা। এখান থেকেও শাশুড়ি বউয়ের সম্পর্কের তিক্ততা শুরু হয়। এক্ষেত্রে সাংসারিক দ্বন্দ্ব এবং টেনশন এড়ানোর দায় প্রায় পুরোপুরিই শাশুড়ির উপর বর্তায়। তিনি যদি নিজের স্বাভাবিক ইগো দূরে রেখে পুত্রবধূকে আপন করে নিতে পারেন, তাহলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমস্যা মিটে যায়। এখানে শাশুড়িদের যেটা সব সময় মনে রাখতে হবে তা হল, পুত্রবধূটি নিজের বাড়ি, পরিচিত পরিবেশ ও প্রিয়জনদের ছেড়ে একটা নতুন জায়গায় আসছে। স্বাভাবিকভাবেই তার মনে একটা কুণ্ঠা ও ভয় কাজ করবে। তার মনখারাপ থাকবে। এগুলো সামলে উঠে নতুন জায়গাকে আপন করে নিতে তার সময় লাগবে। ফলে তাকে একটা সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশ দিতে হবে, তার ভালোমন্দ সমেত তাকে গ্রহণ করতে হবে। এবং সেই যে সাদরে গ্রহণ করা, তার দায় প্রধানত শাশুড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির লোকের। 
শাশুড়িকে মনে রাখতে হবে ‘নিজের সংসার’ আগলে রাখার তাগিদে তিনি পুত্রবধূর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠার আগেই তা নষ্ট করে দিচ্ছেন এবং পরোক্ষে নিজের পুত্রটির সঙ্গেও সম্পর্কে শীতলতা আনছেন। আঁকড়ে রাখার কারণে তিনি নিজের ছেলেকে অযথা কষ্ট দিচ্ছেন। তাছাড়া পরিবারেও একটা খারাপ আবহাওয়ার সৃষ্টি করছেন। এগুলো সবই শাশুড়ি নিজের মনোভাব বদলের মাধ্যমে পাল্টে ফেলতে পারেন। সংসারে যে নতুন এসেছে তাঁকে ভালোবাসতে না পারলেও স্বাভাবিক সৌজন্য বজায় রাখাই যথেষ্ট। তাতেই এই সম্পর্ক অনেকাংশে মধুর ও পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। একইসঙ্গে পুত্রবধূটিকেও মনে রাখতে হবে, সে শ্বশুরবাড়িতে নতুন। শাশুড়ির কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার মনোভাব তাকে ত্যাগ করতে হবে। যে কোনও সম্পর্কই যেমন সময়ের সঙ্গে পরিণত হয়, এই সম্পর্কটার ক্ষেত্রেও তেমনটাই হবে বলে তাঁকে আশা করতে হবে।  সম্পর্ককে পরিণত করার, একে অপরকে চেনার সময়টা যদি শাশুড়ি এবং পুত্রবধূ দু’জনেই দিতে পারেন, তাহলেই সম্পর্কটা ভালো থাকবে। এই সম্পর্কের ভালোমন্দ দু’জনের বুদ্ধিমত্তার উপর অনেকটাই নির্ভর করে। শাশুড়ি পুত্রবধূর সম্পর্কের তিক্ততা এতটাই বেশি আলোচিত যে অনেকক্ষেত্রেই পুত্রবধূটির মনে শাশুড়ি ও শ্বশুরবাড়ি সম্পর্কে আগে থেকেই একটা ধারণা তৈরি হয়। এগুলোকে সচেতনভাবে এড়িয়ে যদি একেবারে পরিষ্কার মন নিয়ে কেউ এই সম্পর্কের মধ্যে ঢোকে, তাহলেই সম্পর্কটা সুস্থ মানের হয়ে উঠবে। 
আর একটা ব্যাপারও শাশুড়িকে মনে রাখতে হবে, ক্রমশ তাঁর বয়স বাড়বে, তিনি অথর্ব হবেন। এমন অবস্থায় তাঁর কাছের লোকেদের প্রয়োজন বাড়বে। ফলে অযথা নিজের ইগো ও মেজাজের কারণে তাঁদের দূরে ঠেলে না দিয়ে বরং সম্পর্কের সাধারণ সৌজন্য বজায় রেখে যদি তাঁদের কাছে রাখতে পারেন, তাহলে আখেরে লাভ কিন্তু তাঁরই। কারণ আমাদের সমাজে অনেক কিছুই বৃদ্ধি পাচ্ছে যেমন, তেমনই আবার একটা দিকে আমরা খুবই গরিব হয়ে যাচ্ছি, তা হল লোকবল। সংসার ছোট হচ্ছে, সন্তানের সংখ্যা কমছে এবং ক্রমশ আমাদের চারপাশের লোকজনও কমে আসছে। সম্পর্কগুলো ক্রমশ দূরের হয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে যেটুকু কাছের, তাকেও শুধুমাত্র নিজের ইগো বজায় রাখতে গিয়ে দূরে ঠেলে না দেওয়াই শ্রেয়। ব্যবহারিক সৌজন্য অত্যন্ত জরুরি একটা জিনিস। শাশুড়ি এবং পুত্রবধূ, দু’জনেই যদি একে অপরের প্রতি সেটা বজায় রাখতে পারেন তাহলে এই সম্পর্কের টেনশন অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। 

স্বামী-স্ত্রী 
সাংসারিক ক্ষেত্রের সবচেয়ে বড় অংশ জুড়েই থাকে স্বামী এবং স্ত্রীর সম্পর্ক। এই সম্পর্কটি অম্লমধুর। কখনও রোদ আবার কখনও বৃষ্টি। অর্থাৎ আড়ি-ভাব মিলিয়েই চলে স্বামী স্ত্রী-র সম্পর্ক। সাংসারিক জটিলতার মোকাবিলা করতে গিয়ে যখন স্বামী-স্ত্রীর মাঝে টেনশন, দ্বন্দ্ব এবং তিক্ততা তৈরি হয় তখন তা এড়ানো যায় কীভাবে? নারীর সামাজিক অবস্থান যতই উন্নত হোক না কেন, এখনও কিন্তু আমাদের সমাজে অনেক স্ত্রীই গৃহবধূ। তাঁদের আর্থিক সচ্ছলতা নেই। স্বামীর রোজগারেই সংসার চলে। সেক্ষেত্রে অনেক সময়ই স্বামীটির তরফে একটা ‘আমিই শ্রেষ্ঠ’ গোছের মনোভাব দেখা দেয়। এই মনোভাব থেকেই তাঁর ইগো প্রকট হয়ে ওঠে। সেই ইগো থেকে তিনি অহেতুক খারাপ ব্যবহার করে ফেলেন, যার ফলে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। এখানে কয়েকটা জিনিস প্রথমেই পরিষ্কার করে বুঝে নেওয়া প্রয়োজন। প্রথমত, আমাদের সমাজ যতই উন্নত হোক না কেন, আমাদের মানসিকতায় কিন্তু খুব একটা বদল ঘটেনি। আজও আমরা পুরুষতন্ত্রেই মূলত বিশ্বাসী। তার উপর স্বামী যখন সংসারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি হন তখন তাঁর আচরণে একটা হামবড়াই ভাব চলে আসে। তিনি ভুলে যান যে, বাইরে বেরিয়ে তিনি যেমন রোজগার করছেন একইরকমভাবে তাঁর স্ত্রী নিজের শ্রম দিয়ে সংসারটাকে সুষ্ঠুভাবে চালাচ্ছেন। ফলে কৃতিত্বের ভাগী তাঁরা দু’জ঩নেই। এই কথাটা সারাক্ষণ রোজগেরে স্বামীটিকে মনে রাখতে হবে। তাহলেই তাঁর ইগোর প্রশ্ন উঠবে না, এবং অহেতুক স্ত্রীর উপর তিনি মেজাজও দেখাবেন না। সম্পর্ক ভালো থাকবে। 
দ্বিতীয়ত, কাজের ক্ষেত্রে আমরা মনে মনে কিছু স্টিরিওটাইপ মেনে চলি। অর্থাৎ কোনও কাজকে মেয়েলি এবং কিছু কাজকে পুরুষালি তকমা দিই। গৃহকর্মের যে কোনও কাজ, যেমন বিছানা পাতা, তোলা, রান্না করা, ঘর গোছানো ইত্যাদি ওই মেয়েলি কাজের মধ্যে পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাড়ির পুরুষটির সেই কাজে দারুণ অনীহা। আবার ব্যাঙ্ক, বাজার, দোকান, পোস্টঅফিস সংক্রান্ত কাজগুলো পুরুষালি কাজের আওতায় পড়ে বলে সেগুলো স্ত্রীরা অনায়াসেই এড়িয়ে যান। অবশ্যই এই নিয়মের ব্যতিক্রম রয়েছে। কিন্তু আজও সামগ্রিক সমাজচিত্র এটাই। কাজের এই স্টিরিওটাইপগুলো ভেঙে দিতে হবে। কোনও কাজই যদি পুরুষালি বা মেয়েলি না হয় তাহলে সব কাজই স্বামী ও স্ত্রী মিলেমিশে করবেন। সেক্ষেত্রে স্ত্রীর নিজের কাজটাকে অহেতুক বা অযথা মনে হবে না। আবার স্বামীও বাইরে বেরিয়ে রোজগার করছেন বলে নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করার সুযোগ পাবেন না। যখন কাজের সঠিক ভাগ থাকবে তখন স্বামী নিজের অবসরে বাড়ির কিছু কাজ করে স্ত্রীকে সাহায্য করতে পারবেন আবার স্ত্রীও নিজের সাধ্যমতো বাইরের কাজে স্বামীর সহায়তা করবেন। এইভাবে চললে একে অপরের উপর মেজাজ দেখানোর সুযোগ অনেকটাই কমে যাবে। 
তৃতীয়ত, বাড়ির পুরুষ বা স্বামীটিকে মনে রাখতে হবে তিনি রোজগার করছেন বলে কারও মাথা কিনে নেননি। ঘরকন্নার কাজটাও অফিস সামলানোর তুলনায় কিছু কম ঝক্কিপূর্ণ হয়। স্ত্রী যখন রান্না করছেন, বাচ্চা পড়াচ্ছেন, শ্বশুর শাশুড়ির খেয়াল রাখছেন তখন তিনিও একটা সংসারে রোজগেরে ব্যক্তিটির মতোই সমান মূল্যবান। ফলে যে কোনও ঝগড়ায় স্বামীর তরফে, ‘বাইরে বেরিয়ে দেখো এক টাকা রোজগার করতে কতটা পরিশ্রম করতে হয়’ গোছের মনোভাব রাখা চলবে না। তাঁকে মনে রাখতে হবে তিনি রোজগার করলে তাঁর স্ত্রীও ঘর সামলাচ্ছেন। 
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে আর একটা বড় দিক হল স্বচ্ছতা। একে অপরের কাছে যদি তাঁরা কোনও কিছু লুকিয়ে না রাখেন তাহলেই তাঁদের জীবনের টেনশন অনেকটা কমে যাবে। আজকের যুগে আমরা সকলেই কম বেশি মোবাইল এবং ইন্টারনেট আসক্ত। সেক্ষেত্রেই কিন্তু প্রচণ্ড গন্ডগোল বাঁধে। অনেক স্বামী বা স্ত্রী মনে করেন তাঁদের মোবাইলের পাসওয়ার্ড একে অপরকে জানাবেন না। তাতেই অহেতুক কিছু সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে। সেই সন্দেহ থেকেই সম্পর্কে স্ট্রেস ও টেনশন তৈরি হয়। এগুলো খুবই ছোটখাট ঘটনা। কিন্তু এর থেকেই সম্পর্ক খারাপ হতে হতে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। অনেক ক্ষেত্রে হয়তো ডিভোর্সেও গড়িয়ে যায়। অথচ সামান্য সতর্কতা থাকলেই এই জিনিসগুলো এড়িয়ে যাওয়া যায়। ফলে একে অপরের কাছে নিজেকে খুলে ধরুন, দেখবেন সম্পর্কে জটিলতা আসবে না।
এছাড়া একটা বড় জিনিস হল স্পেস। এখন সকলেই নিজের স্পেস চায়। নিজের একটু জায়গা যেখানে সে তার মতো থাকতে পারে। এই স্পেস আসলে নিজস্বতা বজায় রাখার একটা উপায়। এবং তা অবশ্যই জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত স্পেসেরও আবার দরকার নেই। অর্থাৎ সারাক্ষণ বাড়িতে স্বামী স্ত্রীকে একে অপরের সঙ্গে লেগে থাকতে হবে এমন নয়, আবার সারাক্ষণই তাঁরা নিজেদের মতোই থাকলেন এমনটাও চলবে না। বাড়ি ফিরে যদি ঘণ্টাখানেক একে অপরের সঙ্গে কাটিয়ে তারপর যে যার নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আবার নিজেদের কাজ খানিকক্ষণ সামলে একে অপরের সঙ্গে, পরিবারের অন্যদের সঙ্গে সময় কাটান তাহলেই কিন্তু জটিলতা সৃষ্টি হয় না। একটা মধ্যম পন্থা বজায় রাখা দরকার। আরও যা দরকার, তা হল স্বামী-স্ত্রীর মিলিতভাবে কিছু কাজ করা। সেটা দৈনন্দিন সকালে চা খাওয়া হতে পারে, সাপ্তাহিক বাজার যাওয়া হতে পারে আবার একসঙ্গে একই ঘরে বসে বই পড়া, টিভি দেখা ইত্যাদিও হতে পারে। এই যে সময়টা তাঁরা একে অপরের সঙ্গে কাটাবেন তাতেই দেখবেন সম্পর্কটা অনেক কাছের থাকবে। নিজেরাই নিজেদের মধ্যে কোনও ঝগড়া বা মতবিরোধ সামলে নিতে পারবেন। বন্ধুবান্ধবও যদি একে অপরের পরিচিত হয়, তাহলে তা মন্দ নয়। আর যদি পরিচিত নাও হয় তাহলেও তাদের সম্পর্কে স্বামী বা স্ত্রীর অবগত থাকাটা খুবই জরুরি। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রী যখন ভিন্ন ক্ষেত্রে রয়েছেন, তখন তাঁরা কাদের সঙ্গে মেলামেশা করছেন সেই সম্পর্কে অন্যজনের একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। সেটা সহকর্মীদের সঙ্গে নামে পরিচিত হওয়া হতে পারে অথবা কাজ বিষয়ে অল্পবিস্তর জ্ঞানও হতে পারে। কিন্তু একে অপরের পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা অত্যন্ত দরকার। তাতে সম্পর্কের টেনশন অনেকটাই কমে যায়। 
এই সম্পর্কে টানাপোড়েনের আর একটা কারণ হল স্বভাবে কোনও সত্তার মাত্রা বৃদ্ধি হওয়া। অর্থাৎ স্বামীটি যদি অতিরিক্ত পুরুষালি হয়, তাহলে অল্পতেই তাঁর পৌরুষে ঘা লাগে। সেখান থেকেই গণ্ডগোল শুরু হয়। একইভাবে স্ত্রীও যদি অতিরিক্ত মেয়েলি হয় তাহলেও সে ‘ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যায়’, তখনও মুশকিল হয়। এমন ক্ষেত্রে দু’জনকেই খুব সচেতনভাবে নিজের স্বভাবের ‘পৌরুষ’ বা ‘মেয়েলিত্ব’ বেঁধে রাখতে হবে। নিজেদের আচরণগুলো বারংবার বিশ্লেষণ করতে হবে। অযথা রাগ করলে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না, উল্টে তা আরও বেড়ে যায় সেটা বুঝতে হবে।  
স্বামী স্ত্রী-র সম্পর্কে টানাপোড়েন বা টেনশনের একটা বড় ক্ষেত্র সন্তান। এই ক্ষেত্রটা অতিরিক্ত প্রকট হয়ে ওঠে যখন স্বামী স্ত্রী উভয়ই চাকরিরত হন বা কাজে বাইরে বেরন। যেহেতু একটা অলিখিত নিয়ম আমাদের মনে বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছে যে, মা-ই সন্তানের গুরুদায়িত্ব সামলাবেন সেহেতু অনেক বাবাই হাত উল্টে বাচ্চার দায়িত্ব মায়ের উপর ফেলে দেন। সেক্ষেত্রে মা চাকরি, ঘরকন্না ও বাচ্চার সম্পূর্ণ দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে হিমশিম খান। আবার কোনও কাজে সামান্য গাফিলতি হলেও বাবাটি ভুল ধরতে ছাড়েন না। তখনই সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। অনেক সময় স্ত্রী নিজের কাজে ভুল হয়ে যাচ্ছে ভেবে অতিরিক্ত টেনশন করে ফেলেন। এক্ষেত্রে স্বামীটিকে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। স্ত্রী যখন চাকরিরত তখন সংসারের অর্ধেক দায়িত্ব স্বামীকেই নিতে হবে। স্ত্রী যদি হোমমেকারও হন, তাহলেও সন্তান কিন্তু স্বামী স্ত্রী দু’জনেরই। ফলে দায়িত্ব দু’জনকেই সমানভাবে নিতে হবে। তার পড়ানোর দায়িত্ব থেকে সে কী খাচ্ছে, কাদের সঙ্গে মিশছে, সবই বাবা মা দু’জনকে মিলিয়ে সামলাতে হবে। তার ভবিষ্যৎ চিন্তার ক্ষেত্রেও বাবা এবং মাকে সমানভাবে যুক্ত থাকতে হবে। এইভাবে চললে টেনশন অনেকটাই কমবে। অনেক স্বামী মনে করেন স্ত্রী চাকরিরত হলে বাচ্চার দায়িত্ব তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর বাবা-মায়ের উপর বর্তাবে। তখন বাচ্চাকে স্কুল থেকে আনা, মায়ের অনুপস্থিতিতে তাকে রাখা সব দায়িত্বই দাদু বা দিদিমাকে নিতে হয়। এই মনোভাব থেকেও কিন্তু স্বামীকে বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ এই যে দাদু-দিদিমার উপর নিজের বাচ্চার দায়িত্ব দেওয়া, এর থেকেও সমস্যা হয়। দাদু-দিদিমা বাচ্চার দেখভাল করলেও তার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার  সম্পূর্ণ স্বাধীনতা তাঁদের থাকে না। অনেকক্ষেত্রেই বাচ্চার বাবা খবরদারি করেন, পান থেকে চুন খসলে বিরক্ত হন। এই ধরনের আচরণের ফলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে তিক্ততা আসে। এইগুলো এড়িয়ে চলতে গেলে নিজের আচরণ বিষয়ে স্বামীকে সচেতন হতে হবে। তিনি যখন হাতেকলমে কোনও কাজ করতে অক্ষম, তখন সে বিষয়ে উপর থেকে মত দেওয়ার মনোভাবও তাঁকে ত্যাগ করতে হবে। এর পরেও সমস্যা হলে স্বামী, স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি (উভয় ক্ষেত্রে) এক জায়গায় বসে খোলামেলা আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এবং তখন সকলেই ইগো সরিয়ে রেখে, মেজাজ ঠিক রেখে ঠান্ডা মাথায় আলোচনা করবেন এটাই কাম্য। 

সাংসারিক অন্যান্য সম্পর্ক
ভাই-বোন, একাধিক ভাই, একাধিক বোন, একাধিক জা, ননদ, দেওর— পারিবারিক সম্পর্কে ছোটখাট নানা ভাগ থাকে। এগুলোকে সাংসারিক খুচরো সম্পর্ক বলে চিহ্নিত করা যায়। তবে এগুলোও সাংসারিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। টুকরো টুকরো বিবাদ বা ঝগড়ার কারণেও আমাদের টেনশন হয়, মন খারাপ থাকে। ফলে সব সম্পর্ককে উন্নত করে তোলা দরকার। ভাইয়ে ভাইয়ে, ভাই বোনে বা বোনে বোনে মতানৈক্য হলে তা আলোচনা করা উচিত। একে অপরের কাছে পরিষ্কার থাকা উচিত। জায়েদের ক্ষেত্রে বা ননদ, দেওর জাতীয় শ্বশুর বাড়িতুতো সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই স্বচ্ছতা বজায় রাখা সম্ভব হয় না। তখন একটা আপাত ভদ্রতা বজায় রাখতে পারলে ভালো। অনেক সম্পর্ক এমনও হয় যেগুলো আমাদের মানসিকভাবে পীড়া দেয়। দুই জা হয়তো একে অপরকে সহ্য করতে পারে না, এ ওর পিছনে কুৎসা রটিয়ে বেড়ায়। বা ননদ হয়তো বউদি অথবা ভাইয়ের বউকে সহ্য করতে পারে না, দেখা হলে স্বাভাবিক ভদ্রতাটুকুও বজায় রাখতে পারে না। সেক্ষেত্রে সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কিছু সম্পর্ক থাকে যেগুলো অহেতুক আমাদের কষ্ট দেয়। সেই সম্পর্কগুলো বয়ে না বেড়িয়ে বরং তার থেকে বেরিয়ে আসাই ভালো। তবে সব সম্পর্ক থেকে অনায়াসে বেরিয়ে আসা যায় না। আমরা তো সামাজিক জীব, কিছু লৌকিকতা বজায় রাখতেই হয়। তাই সম্পর্কগুলোকে দুটো ভাগে বিভক্ত করা উচিত— প্রাইমারি (বাবা মা, স্বামী স্ত্রী, সন্তান) ও সেকেন্ডারি (ভাই বোন, আত্মীয়, বন্ধু)। প্রাইমারি সম্পর্ক খারাপ হলেও তা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় থাকে না। কিন্তু সেকেন্ডারি সম্পর্কগুলো যখন পীড়াদায়ক হয়ে ওঠে তখন তা থেকে বেরিয়ে আসতেই হয়। 

 বাবা-মায়ের সঙ্গে ছেলে-মেয়ের সম্পর্ক
আমাদের সমাজে সন্তান বহুদিন পর্যন্ত তার বাবা মায়ের সঙ্গে থাকে। আজকাল তাও উচ্চশিক্ষা এবং চাকরি সূত্রে বাইরে যাওয়ার চল দেখা দিয়েছে, কিন্তু আগে তা একেবারেই ছিল না, ফলে বিয়ের আগে পর্যন্ত সন্তান বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকত। এই নিয়মেই আমরা কমবেশি আজও অভ্যস্ত। ফলে বাবা-মায়ের সন্তানের প্রতি অধিকারবোধ প্রবল হয়ে যায়। তারপর যখন তার বিয়ে হয়, ছেলে মেয়ে উভয় ক্ষেত্রেই, তখন সন্তানের উপর বাবা মা নিজের দাবি ছাড়তে পারেন না। আর সেখান থেকেই ঝগড়া, মনোমালিন্য, রাগ, টেনশন ইত্যাদির সূত্রপাত। এক্ষেত্রে দুই তরফেই বাবা মাকে ছাড়তে জানতে হবে। মেয়ের বাবা-মায়ের মনে রাখতে হবে বিয়ের পর মেয়ে নিজের সংসারে (শ্বশুরবাড়িতে বা আলাদা) ব্যস্ত থাকবে। তখন প্রতি ক্ষেত্রে বাপের বাড়িতে সে মনোযোগী হতে পারবে না। সেই ছাড়টা তাকে দিতেই হবে। আবার সময়ের সঙ্গে সবটা অ্যাডজাস্ট হয়ে যাবে। মেয়ে নতুন সংসারে পুরনো হলে বাপের বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির মধ্যে সময় বণ্টন করতে পারবে। এগুলো মাথায় রেখে মেয়ের বাবা-মা যদি নিজেদের চাহিদার মাত্রাটা কম রাখেন তাহলেই মনোকষ্ট, টেনশন, ঝগড়া বা সম্পর্কে দূরত্ব কিছুই আসে না। আর ছেলের বাবা-মায়ের যে ছেলের উপর অধিকারবোধ কমিয়ে দিতে হবে, সে কথা তো গোড়াতেই বলেছি। পুত্রবধূকে গ্রহণ করার দায়িত্ব শাশুড়ি এবং শ্বশুর দু’জনেরই। তার মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। ছেলের ভার শুধু নয়, সংসারের ভারও তার হাতে ছাড়তে হবে। এগুলো যদি সচেতনভাবে মেনে চলা যায় তাহলে টেনশন অনেকটাই কমানো সম্ভব। 

রাগ ও টেনশন করার স্বভাব থাকলে
অনেকে আছেন যাঁরা সহজেই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। অল্প কিছু নিয়েই চিৎকার করেন। এই স্বভাব থাকলে সেটাকে সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে আপনার কথার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। ফলে কী বলছেন, সে বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। দ্বিতীয়ত, রাগের মাথায় গালাগালি দিলেন বা খারাপ কিছু বললেন আবার রাগ পড়ে গেলে ক্ষমা চাইলেন— এটা কিন্তু কোনও কাজের কথা নয়। ক্ষমা করে দিলেও খারাপ লাগাটা থেকেই যায়। ফলে রাগ হলে সেইখান থেকে চলে যাওয়াই ভালো। তৃতীয়ত, অতিরিক্ত বদমেজাজি লোকের বন্ধু টেকে না। তাঁরা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। ফলে সেটাও মাথায় রাখা জরুরি। একটা সময় আসে যখন নিঃসঙ্গ হয়ে বেঁচে থাকা বেদনাদায়ক শুধু নয়, অসম্ভব হয়ে যায়। টাকার বিনিময়ে হয়তো বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়া যায়, কিন্তু সঙ্গী পাওয়া যায় না। আন্তরিক সম্পর্ক জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফলে একটু মেপে কথা বলে, সচেতনভাবে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রেখে চলতে পারলে আখেরে লাভ কিন্তু আপনারই। রাগ অনেকটাই পরিবেশ এবং পরিস্থিতির কারণে বাড়ে। সেই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সচেতনভাবে বের করে আনতে হবে। আমার বাবা যদি খুব বদমেজাজি হন, চিৎকার চেঁচামেচি করতে অভ্যস্ত হন তাহলে আমাকে সচেতনভাবে সেই বদমেজাজি স্বভাবটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আমি যদি ছোট থেকে অতিরিক্ত প্রশ্রয়ে মানুষ হয়ে থাকি এবং যা বলছি সেটাই শোনা হচ্ছে এমন একটা পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত হই, তাহলে সেই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে বের করে আনতে হবে। তার জন্য যদি কাউন্সেলিং দরকার হয় তাহলে তা-ই করতে হবে। প্রয়োজনে পরিবারের পাঁচজনের সাহায্য নিতে হবে। 
টেনশন আয়ত্তে রাখার ক্ষেত্রেও প্রাথমিক কিছু সচেতনতা বজায় রাখা উচিত। চারটে জিনিস আছে যেগুলো জানা থাকলে টেনশন অনেকটাই আয়ত্তে রাখা সম্ভব হয়। তার মধ্যে প্রথমটা হল, ব্যস্ততা। যদি আমার প্রচুর কাজ থাকে তাহলে আমি নিজেকে তাতে ব্যাপৃত রাখতে পারব। সেক্ষেত্রে টেনশন করার সময়ই পাব না। দ্বিতীয়ত, কেউ যদি শারীরিকভাবে খুব সক্রিয় থাকতে পারে তাহলেও তার টেনশনের সুযোগ কমে যায়। অর্থাৎ নানা ধরনের অ্যাক্টিভিটির মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। সেটা খেলাধুলো বা এক্সারসাইজ হতে পারে। মূল কথা হল নিজের মনটাকে অন্যদিকে ব্যস্ত রাখা। এছাড়া টেনশন কমানোর তৃতীয় উপায় হল, আদানপ্রদান। যে যত বেশি সামাজিক, তার টেনশন তত কম হবে। নিজের টেনশন হলে অন্যের সঙ্গে যদি সেই কষ্টটা ভাগ করে নেওয়া যায় তাহলে টেনশন আপনিই কমে।  টেনশন কমানোর চতুর্থ উপায় হল, মেডিটেশন বা ধ্যান। এটা আর কিছুই নয়, নিজের সঙ্গে কিছুটা সময় অন্তরঙ্গভাবে কাটানো। এই জিনিসটা আমাদের জীবনে অত্যন্ত জরুরি। এমন সময় আমরা নিজেদের সঙ্গে একাকী কাটাব যখন তৃতীয় কোনও ব্যক্তি বা বস্তু তার মধ্যে থাকবে না। এই সময়টা নিজের মনকে শান্ত করার জন্য প্রচণ্ড দরকার। আর শান্ত মনে টেনশন বাসা বাঁধতে পারে না। ফলে এই উপায়গুলো জানা থাকলে মন শান্ত হবে, ভালো থাকবেন আপনি।
মডেল: নন্দিনী ভৌমিক ও সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা
08th  September, 2024
ডুয়াল পার্সোনালিটি হয় কেন

দ্বৈত সত্তা! কাদের থাকে, কেন হয়? এ থেকে বেরিয়ে আসার উপায়ই বা কী? জানালেন মনোবিদ ডঃ অমিত চক্রবর্তী। বিশদ

12th  September, 2024
হার্ট ও কোলেস্টেরলের সমস্যায় রোজ কটা ডিম খাবেন?

পরামর্শে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ আশিস মিত্র। বিশদ

12th  September, 2024
অন্ধত্বের চিকিৎসায় স্কুল উদ্বোধন

এই রাজ্যে প্রায় ১.৬৬ শতাংশ জনসংখ্যা অন্ধত্বে আক্রান্ত। এমতাবস্থায় এই রাজ্যে উদ্বোধন হল শঙ্কর নেত্রালয়া এলিট স্কুল অফ অপটোমেট্রি (এসএনইএসও)-এর। বিশদ

12th  September, 2024
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে হোমিওপ্যাথিক ফোরাম

সম্প্রতি অভয়া হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছিল পশ্চিমবঙ্গ হোমিওপ্যাথিক ফোরাম। প্রায়৭০০ জনেরও বেশি চিকিৎসক মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের দলমত নির্বিশেষ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকরা  শিয়ালদহ থেকে মানিকতলা পর্যন্ত রাজপথ জুড়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদী মিছিলে হাঁটলেন। বিশদ

12th  September, 2024
বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের জন্মদিন পালন

বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ জে এন কাঞ্জিলালের ১১৬ তম জন্মদিন পালিত হল কলকাতার বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামে। বিশদ

12th  September, 2024
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়!

প্রতিটি সমস্যাই আসলে জীবনের শিক্ষা!’— একথা আমরা পড়েছি পাঠ্যবইয়ে। সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় সেকথা উপলব্ধি করেছেন নিজের জীবন দিয়ে। একদা চলচ্ছক্তিহীন মেয়েটি মেরুদণ্ড শক্ত করে উঠে দাঁড়িয়েছেন নিজের পায়ে। দাঁড় করিয়েছেন ব্যবসা। আরও এক লড়াকু মেয়ের সঙ্গে পরিচয় করালেন স্বরলিপি ভট্টাচার্য।  বিশদ

08th  September, 2024
পাঁচ ভেষজে রোগ নিরাময়

ভেষজ নিয়ে ঘরবসত করি। আশ্চর্য, শুধুমাত্র না জানার কারণে নিম, হলুদ, কারিপাতা, মধু, অ্যালোভেরাকে ঠিক মতো রোগ বালাইয়ে ব্যবহার করা যায় না। অথচ ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া, অসম শারীরিক গঠন, স্থূলতা থেকে হাঁপানি, ফ্যাটি লিভার, চোখের নানা সমস্যা — এমনকী দেহ সৌন্দর্যের জন্য ভেষজ কতটা ফলদায়ী তার খবর কে রাখে! সুগারে কি মধু খাওয়া যায়? রক্তে ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে হার্ট অ্যাটাক রুখবেন কেমন করে? প্রবীণরা কিডনি আর লিভারকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করবেন কীভাবে? হঠাৎ চুল পড়তে শুরু করলে বা বাচ্চার ‌অসময়ে বমি! কী করবেন? শুধু তাই নয়, যে কোনও বয়সের মানুষের দেহের সঙ্গে মনও সতেজ ও চাপ মুক্ত থাকে, সেই নিদানও আছে। এই পাঁচ ভেষজের নানা অসুখ সারানোর উপায় ও তার প্রয়োগ পদ্ধতি জানালেন ডাঃ নবনীতা মহাকাল, ডাঃ বিশ্বজিৎ ঘোষ, ডাঃ আব্দুর রহমান, ডাঃ নবনীতা চক্রবর্তী ও ডাঃ প্রদ্যোৎবিকাশ কর মহাপাত্র।  
বিশদ

08th  September, 2024
পথ্যে অক্ষত যৌবন!

পরামর্শে নারায়ণা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান শতভিষা বসু।  বিশদ

08th  September, 2024
রাগের মিটার! 

স্ট্রেস ও টেনশন থেকে রাগ হলেও কেউ কেউ সেই পরিবেশে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করতে পারেন। কেউ আবার অল্পেই মাথা গরম! আপনি ঠিক কোন দলে? রাগ, স্ট্রেস এগুলো আপনার মনকে কতটা নিয়ন্ত্রণ করে? আমরা দিলাম প্রশ্নমালা। নীচে থাকবে সম্ভাব্য কিছু উত্তর। সব উত্তরের জন্য নির্দিষ্ট কিছু মান আছে। মনে মনে সৎ থেকে মিলিয়ে নিন আপনার উত্তরের নম্বর কী হল। তারপর দেখে নিন আপনার রিপোর্ট কার্ড!
বিশদ

08th  September, 2024
টেনশন মেজাজ স্ট্রেস: প্রয়োজনে সাইকিয়াট্রিস্টের সাহায্য নিন

অন্যের তুলনায় কতটা ভালো বা খারাপ আছি, সেভাবে নিজেকে দেখি না, জানালেন রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশদ

08th  September, 2024
টেনশন মেজাজ স্ট্রেস দূর করতে নিজের সঙ্গে সময় কাটান

টেনশনে মিউজিক থেরাপি অনবদ্য, নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ইমন চক্রবর্তী। বিশদ

08th  September, 2024
রাগ কী, তা ভুলে গিয়েছি

মন দিন ধ্যানে। স্ট্রেস, টেনশন, ক্ষোভ সরিয়ে ভালো থাকার পরামর্শে সাহেব চট্টোপাধ্যায়। বিশদ

08th  September, 2024
টেনশন মেজাজ স্ট্রেস: সামলে নিন ঠান্ডা মাথায়

মেজাজ ঠিক রাখার রহস্য কিন্তু লুকিয়ে রয়েছে শান্ত মেজাজে বিবেচনা করার উপর। পরামর্শ দিলেন তনুশ্রী শংকর।
বিশদ

08th  September, 2024
রাশ টানুন সন্তানের টেনশনে

ছোট থেকেই তৈরি হয় স্বভাব। কীভাবে শুরু থেকেই টেনশন, মেজাজ, রাগ আয়ত্তে রাখা সম্ভব? জানাচ্ছেন মনোরোগ চিকিৎসক ডাঃ রীমা মুখোপাধ্যায়। বিশদ

08th  September, 2024
একনজরে
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পিজিটি ও জুনিয়র ডাক্তারদের টানা কর্মবিরতিতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের দুর্ভোগ চরমে। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ প্রথম থেকেই। এবার চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই রোগীদের ছুটি নিতে ‘চাপ’ সৃষ্টির অভিযোগ উঠল। ...

ব্যবহৃত সিরিঞ্জ বেঁকিয়ে ফেলার দরকার নেই। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষ এমনই নির্দেশ দিতেন ওয়ার্ডের নার্সদের। হাসপাতাল সূত্রে মিলেছে এই ...

চারিদিক আগাছায় ভরা। তার মধ্যে ছোট্ট দু’টি ঘরে চলছে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ঘরের দেওয়ালেও ধরেছে ফাটল। ফলে, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো অবস্থা ...

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাহারের পর কেটে গিয়েছে পাঁচটি বছর। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর এই প্রথম ভূস্বর্গে ভোট গ্রহণ হতে চলেছে। সেই ভোট গ্রহণ ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কর্মস্থলে জটিলকর্মে অনায়াস সাফল্য ও প্রশংসালাভ। আর্থিক দিকটি শুভ। ক্রীড়াস্থলে বিশেষ সাফল্য। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৬৩০: আমেরিকার বোস্টন শহর প্রতিষ্ঠিত হয়
১৮৪৬: সাপ্তাহিক ‘দর্পণ’ প্রকাশিত হয়
১৮৬৭: চিত্রশিল্পী গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম
১৯০৫: বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা করেন ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গানটি
১৯১৫: জনপ্রিয় চিত্রশিল্পী  মকবুল ফিদা হুসেনের জন্ম
১৯২৪: হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির জন্য মহাত্মা গান্ধীর অনশন
১৯৪০: মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর নেতৃত্বে ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহ শুরু হয়
১৯৪৪: বিশিষ্ট অভিনেতা বিভু ভট্টাচার্যের জন্ম
১৯১৫: চিত্রশিল্পী এম এফ হুসেনের জন্ম
১৯৫০: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্ম
১৯৫৪: কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তর মৃত্যু 
১৯৬৫: প্রাক্তন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার অরবিন্দ ডি সিলভার জন্ম
১৯৭০:  প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার অনিল কুম্বলের জন্ম
১৯৭৭: ইংরেজ উদ্ভাবক ও ফটোগ্রাফির পুরোধা উইলিয়াম টলবোটের মৃত্যু
১৯৮০: পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ হাফিজের জন্ম
১৯৮৬: ক্রিকেটার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের জন্ম
১৯৯৯: কবি ও গীতিকার হসরত জয়পুরির মৃত্যু 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৭ টাকা ৮৪.৮১ টাকা
পাউন্ড ১০৮.৬৫ টাকা ১১২.২০ টাকা
ইউরো ৯১.৫৭ টাকা ৯৪.৭৬ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৩,৭০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,১০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭০,৪০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৮,৫০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৮,৬০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১ আশ্বিন, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। চতুর্দশী ১৫/৪৫ দিবা ১১/৪৫। শতভিষা নক্ষত্র ২১/৫ দিবা ১/৫৩। সূর্যোদয় ৫/২৭/২৫, সূর্যাস্ত ৫/৩৪/৫৫। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/১৫ মধ্যে পুনঃ ৭/৪ গতে ১১/৭ মধ্যে । রাত্রি ৭/৫৭ গতে ৮/৪৫ মধ্যে পুনঃ ৯/৩২ গতে ১১/৫৪ মধ্যে পুনঃ ১/৩০ গতে ৩/৫ মধ্যে পুনঃ ৪/৪০ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ রাত্রি ৭/৫৭ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫৮ গতে ৮/২৯ মধ্যে পুনঃ ১/১ গতে ২/৩১ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/৩ গতে ৮/৩২ মধ্যে।   
৩১ ভাদ্র, ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪। চতুর্দশী দিবা ১১/৫। শতভিষা নক্ষত্র দিবা ২/২৮। সূর্যোদয় ৫/২৭, সূর্যাস্ত ৫/৩৭। অমৃতযোগ দিবা ৭/৫২গতে ১০/১৬ মধ্যে ও ১২/৪০ গতে ২/১৬ মধ্যে ও ৩/২ গতে ৪/৪০ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/১৬ মধ্যে ও ৮/৪০ গতে ১১/৬ মধ্যে ও ১/২৭ গতে ৩/৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫৮ গতে ৮/২৯ মধ্যে ও ১/৩ গতে ২/৩৫ মধ্যে। কালরাত্রি ৭/৬ গতে ৮/৩৫ মধ্যে।  
১৩ রবিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আর জি কর কাণ্ড: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্যাতিতার বাড়িতে সিবিআই

11:57:47 PM

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তি, জাতীয় সড়ক অবরোধ
বন্যা বিধ্বস্ত আরামবাগে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের ...বিশদ

10:51:00 PM

এনসিপি (এসসিপি)-তে যোগদান করলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিধায়ক বাপু সাহেব তুকারাম পাথারে

10:18:00 PM

এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জয়ী ভারতীয় পুরুষ হকি দলকে শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির

10:13:00 PM

আইএসএল: গোয়াকে ২-১ গোলে হারাল জামশেদপুর

09:35:00 PM

মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বিশেষ টিম তৈরি করল খড়্গপুর জিআরপি
দেশের সর্বোচ্চ আদালত মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরই ...বিশদ

09:28:00 PM