জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
বাসন্তী পূর্ণিমার সন্ধে যেদিন রাতের পথে হাঁটা শুরু করল, সেদিন থেকেই বাঙালির কড় গোনা শুরু। শহর, শহরতলি হোক বা অজ পাড়া গাঁ, বসন্তবাতাসে হিমভাব উধাও হয়ে এক আলগা ভালোলাগা ছড়িয়ে গেল এপাড়া থেকে ওপাড়া। মন আর্দ্র হল। ক্যালেন্ডার জানান দিল সামনেই ১৪ ফেব্রুয়ারি! এমনও বসন্ত দিনে কিশোর-কিশোরীর মনদরিয়ায় ঢেউ ওঠে। যুবক-যুবতী অপেক্ষার প্রহর গোনে। কালিদাসের যুগ থেকেই যেন প্রেমের দিনক্ষণ ভাবনার শুরু। সেই যে তিনি লিখলেন, ‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে...’, তার পর থেকেই প্রেমের সঙ্গে যোগ হল বাঙালির ঋতুবিলাস!
বসন্তের ঝিম ধরা আবহাওয়ায় প্রেম দেহমনে পুলক জাগায়। সামান্য উপহার ও অনেকখানি আন্তরিকতায় প্রিয়জনকে আর একটু ভরসা জোগায়। তাই পাশ্চাত্য রীতি অনুসরণ করে ভ্যালেন্টাইনস ডে এলেও বাঙালির মনে হয়, এই ফুল, কার্ড, আলো, হার্ট সাইন কুশন, নানাবিধ চকোলেটের ঝাঁ চকচকে হাতছানির মধ্যে একটা দিন খানিক হারিয়ে যেতে। দিনটুকু শুধুই নিজেদের করে রাখতে। মন্দ তো নয়! তাই প্রিয় মানুষের জন্য দুরুদুরু বুকে উপহার কিনতে যাওয়ার যে উত্তেজনা, তাতেই লুকিয়ে থাকে প্রাণের আরাম।
তবে কী উপহার দেব, পকেটের রেঁস্ত কত, এসব দ্বন্দ্বও এই সময় মাথাচাড়া দেয়। দিতে চাই চাঁদ, কিন্তু পকেটের হাল হয়তো ডুমলাইট কেনার মতো! কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের যেমন এ এক চিরাচরিত সমস্যা। চাকরিরতদের সমস্যা আবার ভিন্ন। সেখানে বাজেট খুব একটা বাধা না দিলেও দ্বন্দ্বে ফেলে পছন্দ-অপছন্দের বদলে যাওয়া ধারাপাত। যে কিশোরী কলেজ জীবনে একটা কার্ডেই আত্মহারা হতো, সে হয়তো এখন উপহার বলতে কাজের কিছু বোঝে। কেউ আবার পার্থিব উপহারের চেয়ে পছন্দ করে আজীবন স্মৃতি হয়ে সঙ্গে থাকবে এমন কিছু! তাই পকেট বাঁচিয়ে আন্তরিক কিছু দেওয়ার কথা ভাবলে একটু অন্যভাবেও ভেবে দেখতে পারেন।
সময় দিন: সারাবছর হয়তো কলেজের ফাঁকে বা কাজের মাঝে কিছুটা সময়ের জন্য দেখা হয়। বছরের এই দিনটি অনেকটা সময় একসঙ্গে কাটান। সিনেমা দেখে একসঙ্গে খেতে যেতে পারেন কোথাও। দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে দেখে নিতে পারেন একটি নাটকও। বিকেলের কফি শপেও জমতে পারে নিজস্ব আড্ডা।
ফুল ও চকোলেট: ভালোবাসার মরশুমে বরাবরই উপহার হিসেবে এগিয়ে ফুল ও চকোলেট। পকেটে বেশি চাপ পড়ে না, সহজলভ্য এই উপহারের চাহিদাও তাই বেশি। ফুল দিতে চাইলে বেছে নিন রংবেরঙের গোলাপ। বিভিন্ন রঙের গোলাপ দিয়ে তৈরি করুন ফুলের তোড়া। চকোলেটের ক্ষেত্রেও একটু অন্যরকম ভাবতে পারেন। ইদানীং বাজারে ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষ্যে নানা স্বাদের ও আকারের চকোলেট মেলে। সঙ্গীর পছন্দমতো কাস্টমাইজড চকোলেট চাইলেও তা পাবেন। চেনা কোনও বেকারকে দিয়ে তা বানিয়েও নিতে পারেন।
কাপল পাস: সিনেমা হোক বা কোনও মনের মতো শো, একসঙ্গে দেখতে চান? এই প্রেমদিবসেই সঙ্গীকে দিতে পারেন সেই চমক। পাশাপাশি বসে উপভোগ করতে পারেন নতুন কোনও নাটক, সিনেমা কিংবা স্টেজ শো। একসঙ্গে সময় কাটানোর এই সুবর্ণ সুযোগটুকুও তুলে দিতে পারেন সঙ্গীর হাতে।
বই: আগামী কাল শেষ বইমেলা। বইপ্রেমী মানুষের কাছে বইয়ের কদর সবসময়ই বেশি। সঙ্গীও যদি বই পড়তে ভালোবাসেন, তাহলে তাঁকে উপহার দিতে পারেন তাঁর প্রিয় লেখকের সদ্য প্রকাশিত কোনও বই। ভিতরে দু’কলম লিখে দিন নিজেদের কথা!
হাতে তৈরি কার্ড: এই প্রজন্ম ডিজিটাল কার্ডের জেরে হাতে তৈরি গ্রিটিংস কার্ডের স্বাদ খুব একটা পায়নি। তাই হাতে আঁকা গ্রিটিংস কার্ড হতে পারে পছন্দের উপহার। আঁকার মতো দক্ষতা না থাকলে ফাঁকা কার্ডে চিঠির মতো কয়েকটি লাইনও লেখে দিতে পারেন প্রিয়জনকে।
বাহারি কম্বো: কাস্টমাইজড কফি মাগ হোক বা কুশন সেট কিংবা সুগন্ধির বাক্স, ভালোবাসার মানুষকে উপহার দিতে পারেন এমন নানা কম্বো সেট। শাওয়ার জেল, সাবান, ফেস কিট, কসমেটিক্স-সহ নানা ধরনের কম্বোর কথা ভাবতে পারেন। এই মরশুমে নানা দোকানে এমন সেট পাবেন। অনলাইনেও সহজেই অর্ডার করা যায়।
অডিটরি গ্যাজেট: ব্লু টুথ স্পিকার হোক বা ইয়ারপড, ইদানীং এই ধরনের গ্যাজেটের চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। ইদানীং অনেকেই অনলাইন মিটিং বা ক্লাস করেন। সেক্ষেত্রে নিজের বাজেট ও গ্যাজেটের ফিচার বুঝে এমন উপহারও দিতে পারেন প্রিয়জনকে।
অ্যাক্সেসরিজ: ব্যাগ থেকে ঘড়ি, ওয়ালেট থেকে গ্রুমিং কিট— সবই থাকতে পারে উপহারের তালিকায়। প্রিয়জনের প্রয়োজন ও পছন্দ বুঝে কিনতে পারেন সেসবও। নিজেরে বাজেটেরে ভিতর জিনিস পছন্দ করলে পকেটে চাপ পড়বে না।
অলঙ্কার: বাজেট যদি বাধা না হয়, তাহলে ভাবতে পারেন গয়নার কথা। ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষ্যে নানা অলঙ্কার বিপণিতে নানা অফার চলে এই সময়। সেই সব অফার থেকে বেছে নিতে পারেন নিজের পছন্দসই বাজেটফ্রেন্ডলি গয়নাটি।