অংশীদারি কারবারে মন্দার সম্ভাবনা। যে কোনও কাজকর্মে বাধার মধ্যে উন্নতি। বৃত্তিগত শিক্ষা লাভে বিশেষ সাফল্য। ... বিশদ
বাঙালি এক অসুস্থ তরুণীর একঘেয়ে জীবন বোঝাতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘রাঁধার পরে খাওয়া, আবার খাওয়ার পর রাঁধা’। তবে যদি কাব্যের বাইরে বেরিয়ে ভাবেন, তাহলে দেখবেন, এই রাঁধা ও খাওয়ার পরেই যে কাজটির জন্য গৃহস্থকে সমস্যায় পড়তে হয়, তা হল বাসনে কড়া তেল-মশলার দাগ তোলা। বাঙালির মনের রাস্তা অনেকটাই পেট ঘুরে পাওয়া যায়। ‘পেটরোগা’ বলে তার যতই বদনাম থাক, মুখরোচক খাবারের সামনে সে দারোগার মতোই দাপুটে! তাই রান্নাঘরের রুটিনে তার তেল-মশলার কমতি নেই। এমনিতেই ভারতীয় মশলার নানা ভেষজ গুণ রয়েছে। তার উপর ভারতীয় রান্নাতেই এত বিপুল মশলার বিচিত্র ব্যবহার দেখা যায়। তাই বাঙালির রান্নাঘরে মশলার আলাদা কদর আছেই। এতে খাবার স্বাদু হয় ঠিকই, তবে মনের পাশে বাসনেও থাকে তার ‘স্বাক্ষর’। থালা-বাসন থেকে হলুদের এই দাগছোপ তোলা খুব সহজ কথা নয়। ডিটারজেন্ট, সাবান, নানা লিক্যুইড ব্যবহার করেও এই কড়া দাগ তুলতে হিমশিম খেতে হয় গৃহিণীকে। তাই তিনিও খুঁজতে থাকেন কিছু ঘরোয়া উপায়, যাতে এই দাগ তোলার ঝক্কি অনেক সহজ হয়।
লেবুর রস: বিভিন্ন ডিটারজেন্টের বিজ্ঞাপনে দাগ তুলতে লেবুর শক্তির কথা বলা হয়। কাজেই লেবু যে দাগ তোলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। তাই আস্থা রাখুন লেবুর রসে। লেবুর অ্যাসিটিক অ্যাসিড তেল-হলুদের মতো কড়া দাগ তুলতে সিদ্ধহস্ত। ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এবার তা তেল-মশলার ছোপ ধরা বাসনে ঢেলে দিন। অন্তত আধ ঘণ্টা রেখে দিন। চাইলে সারারাতও ভিজিয়ে রাখতে পারেন, তাতে আরও ভালো ফল পাবেন। এবার বাসন মাজার তারজালি বা স্পঞ্জ দিয়ে জোরে ঘষলেই এই দাগ উঠে যাবে।
বেকিং সোডা: হেঁশেলে বেকিং সোডার ব্যবহার বহুল। এই সোডা শুধু বেক করার কাজে বা খাবারদাবারকে মুচমুচে করতেই ব্যবহার করা হয় না। থালাবাসনের দাগ তুলতেও এর জুড়ি মেলা ভার। জল ও বেকিং সোডা একসঙ্গে গুললে একটি ফেলিন তরল তৈরি হবে। থালা বাসনের দাগের উপর এই মিশ্রণ ঢেলে দিন। মিনিট ১৫ পর হালকা ঘষে ধুয়ে নিলেই দেখবেন, দাগছোপ দূর হয়েছে।
হাইড্রোজেন পারক্সাইড: বিভিন্ন গৃহস্থের ঘরে থাকে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড। অনেক কেটারিংয়ের হেঁশেলেও এই রাসায়নিক মজুত রাখা হয়। যে কোনও রান্নার পাত্র ঝকঝকে করতে ও তা থেকে তেল-মশলার দাগ তুলতে এই রাসায়নিকটি বেশ পারদর্শী। যেখানে তেলমশলার দাগ খুব গাঢ় হয়ে লেগে আছে, সেখানে কয়েক ফোঁটা হাইড্রোজেন পারক্সাইড দ্রবণ যোগ করুন। মিনিট ১৫ রেখে ভালো করে ধুয়ে নিলে সব দাগ দূর হবে।
গ্লিসারিন: শীতে ত্বকের যত্নের জন্য গ্লিসারিন ব্যবহার করেন অনেকেই। ত্বক মসৃণ রাখার পাশাপাশি বাসন থেকে তেল-হলুদের দাগ তুলতেও এই তরল খুব কার্যকর। ১ চামচ গ্লিসারিন ও ১ চামচ তরল সাবান দিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ বানিয়ে নিন। এবার বাসন মাজার স্পঞ্জ বা পরিষ্কার সুতির কাপড় এই গ্লিসারিনের মিশ্রণে মিশিয়ে বাসনের উপর হাল্কা ঘষলেই তেল-মশলার দাগ উঠবে সহজে।
টুথপেস্ট: বাসনে তেল-মশলার দাগ তুলতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবহারও রয়েছে। সকালের টুথপেস্টকে এক্ষেত্রে করতে পারেন মুশকিল আসান। পাত্রে তেল-মশলার দাগ লাগলে দাগ লাগা জায়গায় ঘন করে টুথপেস্ট লাগান। ৩০ মিনিট রেখে একটি শুকনো কাপড় দিয়ে ঘষে তারপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন বাসন।