অংশীদারি কারবারে মন্দার সম্ভাবনা। যে কোনও কাজকর্মে বাধার মধ্যে উন্নতি। বৃত্তিগত শিক্ষা লাভে বিশেষ সাফল্য। ... বিশদ
বেলপাহাড়ীর জঙ্গল লাগোয়া গ্ৰামের বাসিন্দারা বন থেকে শালপাতা, শুকনো কাঠ, কুরকুট পিঁপড়ে সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেষন। সেই টাকা টাকা থেকে তাঁরা চাল, ডাল, আনাজপাতি কেনেন। নিত্যদিনের রোজগারের এই পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যুজারধারা, জাবলা, চিরিমারা, কাঁকড়াঝোর, সিঙ্গাডোবা, মনিয়ারডি, তেলিঘানার মতো গ্ৰামের বাসিন্দারা আর্থিক সঙ্কটে পড়ছেন। লোধা শবরদের একটি বড় অংশ চাষবাসে এখনও অনাগ্ৰহী। অন্য পেশাতেও তাঁদের মন টেঁকে না। অরণ্যের সঙ্গেই তাঁদের জীবন জিবীকা জড়িয়ে। বাঘের আতঙ্কে সেই অরণ্যে ঢুকতে তাঁরা ভয় পাচ্ছেন। বেলপাহাড়ী জঙ্গলে প্রথমে জিনত, তারপর হাঁড়িডাহ ও কাঁকড়াঝোর জঙ্গলে আরও দু’টি বাঘের ঘোরাফেরার প্রমাণ মিলেছে। ঝাড়গ্ৰাম বনবিভাগ জঙ্গল এলাকায় সতর্ক নজরদারি চালাচ্ছে। জিনত ধরা পড়লেও অন্য দু’টি বাঘের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বন বিভাগের তথ্য বলছে, ঝাড়খণ্ডের গুড়াবান্দা, চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসা, চিঁয়াবান্ধি, ঝাড়গ্ৰামের বাঁশপাহাড়ীর বিস্তীর্ণ জঙ্গল থেকে বান্দোয়ান ও দলমা পাহাড় বাঘের বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। যে কোনও সময়ে বাঘ এই এলাকায় চলে আসতে পারে। বাঘের ভয়ে স্থানীয় গ্ৰামবাসীরা গবাদিপশু নিয়ে জঙ্গলে যাওয়া আগেই বন্ধ করে দিয়েছেন। বেলপাহাড়ীজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। শালপাতা সংগ্ৰহ কমে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে শালপাতার জোগানে টান পড়ছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, লোধা শবরদের চাষবাস ও অন্য কাজে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু বড় একটি অংশ অরণ্যনির্ভর জীবন জীবিকাই পছন্দ করেন। সেই অরণ্য এখন বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। দুঃশ্চিন্তার বিষয়, গ্ৰামবাসীদের কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গলে চলে যাচ্ছেন। বিপদের সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। মনিয়ারডি গ্ৰামের বাসিন্দা রাজকুমার হাঁসদা বলেন, হাঁড়িডাহার জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ মেলার পর থেকে গ্ৰামবাসীরা জঙ্গলে যেতে ভয় পাচ্ছেন। আতঙ্ক গ্ৰাস করছে। আবার জঙ্গলে না গেলে রুজি রোজগার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বাঘ জঙ্গলে কখন আসবে কেউ জানে না। উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক নিয়ে জঙ্গলের মানুষের জীবন কাটছে। চিটামাটি এলাকার বাসিন্দা ভরত মুড়া বলেন, কাজের জন্য বাইরে বেরতে হয়। জঙ্গল লাগোয়া পথ দিয়ে যাওয়ার সময় ভয় হয়, এই বুঝি বাঘের সামনে পড়ে গেলাম। পরপর তিনটে বাঘ আসার পর থেকে ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, জঙ্গল এলাকায় বন বিভাগের সতর্ক নজরদারি রয়েছে। জঙ্গল লাগোয়া গ্ৰামবাসীদের সতর্কভাবে চলাফেরার জন্য ধারাবাহিক ভাবে বলা হচ্ছে। গভীর জঙ্গলের ভিতরে না যাওয়ার জন্য প্রচার করা হচ্ছে। জঙ্গলে এখনও বিপদের ঝুঁকি রয়েছে।-ফাইল চিত্র