মানসিক উত্তেজনার বশে ঘরে বাইরে বিবাদে জড়িয়ে অপদস্থ হতে পারেন। হস্তশিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। মনে ... বিশদ
শীতে তাই ঘরবাড়ি সাফসুতরো রাখার সমস্যা বেশি। তার উপর অফিসকাছারি সেরে সারাদিনে খুব একটা সময়ও মেলে না। সপ্তাহান্তে ঘরের ধুলো ঝাড়তে গিয়ে নাস্তানাবুদ হতে হয় অনেক ক্ষেত্রে। বহু মানুষের আবার ডাস্ট অ্যালার্জি আছে, তাই ধুলো ঝাড়ার সময় এগলেই আতঙ্ক শুরু হয়, এই বুঝি অসুস্থ হয়ে পড়লাম! আজকাল বহু গৃহস্থ বাড়িতেই ঘরদোর পরিষ্কারের জন্য নানা অ্যাপ থেকে কর্মী ভাড়া করেন। তবে রাজ্যের সব জায়গায় এমন পরিষেবার সুবিধা পাওয়া যায় না। তাছাড়া ঘরদোর পরিষ্কারের কাজ নিজের হাতে করতে পছন্দ করেন অনেকেই। তাই কিছু বিষয় মাথায় রাখলে ঘরের ধুলো ঝাড়ার কাজ অনেক সহজ হয়।
ধুলোর রাস্তা বন্ধ: ধুলো মূলত বাইরে থেকে ঢোকে। তাই ধুলো প্রবেশের রাস্তা যত বন্ধ থাকবে, ততই তার পরিমাণ কমবে। শীতে দরজা-জানলা যতটা পারেন, বন্ধ করে রাখুন। এতে ধুলো ঢোকার শঙ্কা কমবে। তবে ঘরের মধ্যে আলো-হাওয়া প্রবেশ করানোও খুব প্রয়োজন। তাই শীতের দিনে দিনের বেলায় জানলা খুললেও পরদা টেনে রাখুন।
ভ্যাকুয়াম ক্লিনার: আমরা নানা বাজে খরচ করি। সেসব খরচ একটু কমিয়ে একটা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার কিনুন। যাঁদের ডাস্ট অ্যালার্জি রয়েছে, তাঁদের জন্য এই যন্ত্র খুব উপকারী। খাটের তলা থেকে সোফার কোনায় জমে থাকা ধুলো, যেখানে সহজে হাত বা ঝাড়ু পৌঁছয় না সেসব স্থান পরিষ্কারের জন্য এই যন্ত্র খুব কার্যকর। আলমারির পিছনদিক, নানা ডেস্ক, ড্রয়ার বা টিভি ক্যাবিনেটের পিছন দিক, কার্পেট ইত্যাদি পরিষ্কার করা বেশ শ্রমসাধ্য। অথচ এসব জায়গায় ধুলো ও ঝুল বেশি জমে। এসব জায়গা সাফ করতে এই যন্ত্র ব্যবহার করুন। কেনার সময় জেনে নিন এটি ব্যবহারের নিয়ম।
উপর থেকে নীচ: ধুলো ঝাড়ার প্রাথমিক শর্তই তা-ই। কোনও আসবাবের ঝুল বা ধুলো ঝাড়ার সময় উপরদিক থেকে নীচের দিকে ঝাড়ু বা মপ টানুন। এতে উপরের ধুলো নীচে এসে পড়বে। পরে একসঙ্গে নীচের ধুলো পরিষ্কার করে ফেলা সহজ হবে।
কার্পেট কাচা: কোনও কোনও বাড়িতে দিনের পর দিন মেঝেতে একই কার্পেট পাতা থাকে। কার্পেটের উপরে রোজই ঝাঁট পড়ে, তাতে উপরের অংশ সাফও হয়। কিন্তু সমস্যা হল কার্পেটের নীচের অংশে প্রচুর ধুলো ও ঝুল জমে থাকে। তাই মাসে একবার কার্পেট কাচতে দিন। সম্ভব হলে পনেরো দিন অন্তর কার্পেট বদলে দিন।
বিছানার চাদরে নজর: অনেক বাড়িতে বিছানার চাদর দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা হয়। এমন অভ্যাস ধুলো জমার অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। তাই বালিশের ওয়াড় ও বিছানার চাদর দুই-ই ঘরের বাইরে নিয়ে ঝাড়ুন এবং অবশ্যই পাঁচ-সাতদিন ব্যবহারের পরেই কাচতে দিন।
কাগজ ও কাপড়ে নজর: কাপড় ও কাগজ ঘরে যত খোলা অবস্থায় রাখবেন, ততই ধুলো জমার সমস্যা বাড়বে। এই দুই বস্তু থেকেই অবিরাম তন্তু বা ফাইবার খসতে থাকে। আনুবীক্ষণিক সেসব তন্তু বাতাসের সঙ্গে মিশে ঝুল ও ধুলো তৈরি করে। তাই কাপড় ও কাগজ দুই-ই বাক্সে ভরে রাখুন বা ওয়ার্ডরোব ব্যবহার করুন। এতে ঘরে ধুলো কম জমবে ফলে পরিষ্কারের ঝক্কিও কমবে।
এ নাহয় গেল ধুলো পরিষ্কারের কিছু পদ্ধতিগত নিয়ম। কিন্তু যাঁদের ডাস্ট অ্যালার্জি আছে বা বাড়িতে শিশু রয়েছে, তাঁদের বেলায় আরও একটু সচেতন থাকতে হবে।
ধুলো ঝাড়ার সময় মেনে চলুন কিছু স্বাস্থ্যকর নিয়ম।
• মাস্ক পরে ধুলো ঝাড়ুন। ধুলো বা ঝুলের অণু শ্বাসের মাধ্যমে শ্বাসনালিতে পৌঁছয়। ফলে অ্যালার্জেন সক্রিয় হয়ে সর্দি-কাশি শুরু করে। চোখ-মুখ লাল হয়ে যায়। প্রয়োজনে চশমা বা সানগ্লাস পরে নিতে পারেন। এতে চোখ, মুখ, নাক সবই ধুলো থেকে বাঁচে।
• বাথরুম পরিষ্কারের সময় সহজে পিছলে যাবে না এমন চটি ব্যবহার করুন।
• পরিষ্কারের কাজে ব্যবহৃত ঝুলঝাড়ু, রাসায়নিক শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
• অনেক উঁচু কোনও আসবাব পরিষ্কারের সময় ঝুঁকি না নিয়ে অন্যের সাহায্য নিন। টুল বা মইতে উঠতে হলে তা ধরতে বলুন বাড়ির অন্য কোনও সদস্যকে।
• ঘর মোছার পরেই শিশুরা যাতে মেঝেতে না নামে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
• কাচের জিনিস পরিষ্কার করার সময় ভেঙে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আগে কাচের ভাঙা টুকরো পরিষ্কার করে তারপর বাকি কাজ সারুন।
• ধুলো ও ঝুল ঝাড়ার সময় বা মোছামুছির সময় ভিজে হাতে কোনও বৈদ্যুতিন জিনিসে হাত দেবেন না।
• ধুলো পরিষ্কারের পর ত্বকের যত্ন নিন। হাত ভালো করে ধুয়ে প্রয়োজনীয় লোশন বা ক্রিম চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ব্যবহার করুন।
• ঝাড়াঝুড়ির পর হাল্কা গরম জলে ভালো করে স্নান সেরে নিতে পারেন।