রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
লোহার তলোয়ারে স্পর্শমণি ছোঁয়ালে সোনার তলোয়ার হয়, কিন্তু গড়নটা সেই রকমই থাকে, তবে কিনা তাতে আর হিংসার কাজ চলে না। সেই রকম ঈশ্বরকে ছুঁলে আকার সেই রকমই থাকে, কিন্তু তার দ্বারা আর অন্যায় কাজ হয় না।
সমুদ্রের ভিতর লুকোনো চুম্বক পাথর যেমন হঠাৎ জাহাজের লোহার পেরেক খুলে ফেলে তাকে খণ্ড খণ্ড করে ডুবিয়ে দেয়, সেই রকম জ্ঞান-চৈতন্য উদয় হলে অহঙ্কার স্বার্থপূর্ণ জীবনকে মুহূর্তের মধ্যে খণ্ড খণ্ড করে ঈশ্বরের প্রেম-সাগরে ডুবিয়ে দেয়।
দুধ ও জল এক সঙ্গে রাখলে মিশে যায়, কিন্তু দুধকে মাখন করতে পারলে জলের সঙ্গে মেশে না। ঈশ্বরকে লাভ করতে পারলে হাজার হাজার সংসারী বদ্ধ জীবের সঙ্গে থাকলেও আর বদ্ধ করতে পারে না।
গৃহস্থের বৌ নানারকম সংসারের কাজে সর্বদা ব্যস্ত থাকে, সন্তান হবার সময় হলে সমস্ত কাজ ছেড়ে দেয়। প্রসব হলে তার আর অন্য কাজ কর্ম করতে ভাল লাগে না, তখন সে সমস্ত দিন কেবল নিজের ছেলেটিকে লালন-পালন করে ও তার মুখে চুম্বন করে আনন্দ পায়। মানুষও অজ্ঞান অবস্থায় নানা কাজ করে, কিন্তু ঈশ্বর দর্শন পেলে, আর সে কাজ ভাল লাগে না, তখন সে তাঁর কাজ ছাড়া অন্য কাজে সুখ পায় না, আর তাঁকে এক মুহূর্তও ছাড়তে চায় না।
সিদ্ধ হলে কিরূপ অবস্থা হয়?
যেমন আলু, বেগুন, ইত্যাদি সিদ্ধ হলে নরম হয়ে যায়, সেই রকম মানুষ সিদ্ধ হলে নরম হয়ে যায়; তার অহঙ্কারাদি কেটে যায়।
জগতে চার রকম সিদ্ধ লোক দেখা যায়। নিত্য-সিদ্ধ, মন্ত্র বা ধ্যান-সিদ্ধ, কৃপা-সিদ্ধ ও হঠাৎ-সিদ্ধ।
লাউ গাছে, কুমড়ো গাছে আগে ফল হয়, তারপর ফুল হয়, নিত্য-সিদ্ধ লোক আগে সিদ্ধ হয়ে তারপর সাধনা করে। অবতারাদি নিত্যসিদ্ধ।
হোমা পাখি আকাশে থাকে, আকাশেই ডিম পাড়ে, ডিমটা পড়তে থাকে, পড়তে পড়তে শূন্যেতেই ফোটে, ছানা হয়ে উড়ে যায় নিচে আসে না। নিত্যসিদ্ধ জীবও তেমনি, তাঁরা কখনও সংসারে বদ্ধ হয় না। ঈশ্বর প্রসঙ্গ নিয়েই মত্ত থাকে।
নিত্যসিদ্ধ জীবের বিশ্বাস স্বতঃসিদ্ধ। প্রহ্লাদের ‘ক’ দেখেই কান্না—অমনি কৃষ্ণকে মনে পড়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের সর্বদাই সংশয় বুদ্ধি, তাদের সহজে বিশ্বাস হয় না।
গুরুর মুখ হতে মন্ত্রোপদেশ পেয়ে সেই মন্ত্র জপ দ্বারা ক্রমশঃ চিত্তশুদ্ধি করে যাঁরা সিদ্ধিলাভ করেন তাঁদেরকে মন্ত্রসিদ্ধ বলা যায়।