কাজকর্ম, বিদ্যাশিক্ষায় দিনটি শুভ। বৃত্তিগত প্রশিক্ষণে সাফল্যের সুবাদে নতুন কর্মপ্রাপ্তির সম্ভাবনা। দেহে আঘাত লাগতে পারে। ... বিশদ
মূলত ‘দাতা’র নাম গোপন রেখে দলীয় তহবিলে অর্থ সংগ্রহের জন্য ‘বিতর্কিত’ নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল বিজেপি সরকার। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এই বন্ডকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দেওয়ার পর দেখা যায়, ২০১৯-এর এপ্রিল থেকে ২০২৪-এর জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ড বিক্রি করে বিজেপি সংগ্রহ করেছে ৬ হাজার ৬০ কোটি টাকা। যা মোট বন্ড বিক্রির ৪৭ শতাংশ অর্থ। বাকি সব জাতীয়-আঞ্চলিক দলের মিলিত সংগ্রহের পরিমাণ ছিল ৫৩ শতাংশ অর্থ। এই ‘গোপন’ লেনদেনের ছবিটা সামনে আসতেই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ওঠে শাসকের স্বচ্ছতা নিয়ে। কিন্তু মোদিবাহিনীর অভিধানে যে স্বচ্ছতা শব্দটির কোনও জায়গা নেই, তা আবার বোঝা গেল সরাসরি চাঁদা সংগ্রহের ক্ষেত্রে। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্যে ২০ হাজার বা তার বেশি টাকার অনুদানকেই দেখানো হয়েছে। সেই হিসেবে ২০২৩-২৪-এর অর্থবর্ষে (চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত) বিজেপি অনুদান পেয়েছে ২২৪৪ কোটি টাকা, যা মোট অনুদানের প্রায় ৫০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তেলেঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি। তাদের সংগ্রহ ৫৮০ কোটি টাকা। তালিকায় তৃতীয় প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ২৮৮ কোটি টাকা। দেখা যাচ্ছে, বিজেপির আগের অর্থবর্ষের তুলনায় অনুদান বেড়েছে তিন গুণ। কংগ্রেসের চেয়ে ৮ গুণ বেশি। এবছর লোকসভা ভোট ছিল। ফলে কর্পোরেটকে আরও বেশি করে পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে যে শাসক দলের তহবিলের এই বাড়বাড়ন্ত তাতে বোধহয় কোনও সন্দেহ নেই। এর নিট ফল হিসেবে শোষণ, অসাম্য আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। হচ্ছেও তাই। কর্পোরেট বান্ধব প্রধানমন্ত্রীর জমানায় সম্পদ কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। আয় ও সম্পদ বৈষম্য বেড়েই চলেছে। ফলে বিত্তবানদের সম্পদ বাড়ছে, আর গরিবের দুর্গতির শেষ নেই।
ঘটনা হল, শাসক দলের শ্রীবৃদ্ধির জন্য এই তৎপরতা দেখা গেলেও দেশের বেহাল আর্থিক দশা নিয়ে মাথাব্যথা নেই নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের। চলতি অর্থবর্ষের (২০২৪-২৫) প্রথম ত্রৈমাসিক এপ্রিল থেকে জুনে ভারতের আর্থিক কর্মকাণ্ড মন্থর হতে শুরু করে। জিডিপি বৃদ্ধির হার কমে দাঁড়ায় ৬.৭ শতাংশ-এ। জুলাই-সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে তা আরও নেমে হয় ৫.৪ শতাংশ। আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি সহ নানা কারণে এই বেহাল দশার জন্য সুদের হার (রেপো রেট) কমাতে রাজি হয়নি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। মূল্যবৃদ্ধি কমিয়ে, শিল্পক্ষেত্রে কার্যকলাপ বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পরিবর্তে এখন সর্বোচ্চ ব্যাঙ্ককেই যেন কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে মোদি সরকার। দেশ গোল্লায় যাক, দলীয় তহবিলের গতিতে যেন লাগাম না পড়ে— মন্ত্র একটাই।