স্বাস্থ্য বেশ ভালোই থাকবে। আর্থিক দিকটিও ভালো। সঞ্চয় খুব ভালো না হলেও উপার্জন ভালো হবে। ... বিশদ
সিইও মনু সোহানির নেতৃত্বে সোমবার আইসিসির একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হয়েছে টেলিকনফারেন্সে। যেখানে হাজির ছিলেন, আর্থিক ও বাণিজ্যিক কমিটির সদস্যরা। করোনার জেরে এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করা যে সম্ভব নয়, সেটা বৈঠকে সকলেই মেনে নিয়েছেন। তবে একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফের কবে হবে? বৈঠকে অনেকে প্রস্তাব দেন, পরের বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে এই টুর্নামেন্টে করা হোক। কিন্তু সমস্যা হল আগামী বছর অক্টোবর-নভেম্বরে আবার ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। তাই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান এহসান মানি প্রশ্ন তোলেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে কি করে দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সম্ভব? চ্যাম্পিয়ন দলের খেতাব তাহলে তো ৪-৫ মাসের বেশি স্থায়ী হবে না। তখন আইসিসি কর্তারা অনেকে প্রস্তাব দেন, আগামী বছর অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করুক অস্ট্রেলিয়া। আর ২০২২ সালে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করুক ভারত। কিন্তু ঘটনা হলো, এই মুহূর্তে আইসিসির আর্থিক ও বাণিজ্যিক কমিটিতে ভারতীয় বোর্ডের কোনও প্রতিনিধি নেই। তাই বিসিসিআইয়ের মতামত ছাড়া, ক্রীড়াসূচি পরিবর্তন করা আইসিসির পক্ষে কঠিন। তাই পুরো ব্যাপারটি আপাতত ঝুলে রয়েছে। সম্ভবত বৃহস্পতিবারের মিটিংয়ে বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধির মতামত নেওয়া হবে। এই ব্যাপারে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে যেতে পারে বলে আমিও শুনেছি। এ ব্যাপারে ভারতীয় বোর্ডের কিছু করার নেই। আইসিসিকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পিছিয়ে গেলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। কারণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের জেরে ত্রয়োদশ আইপিএল কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। বোর্ড কর্তারা ভেবেছিলেন, এ বছর হয়তো আর আইপিএল করা যাবে না। তাতে বিসিসিআইয়ের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। তাই অক্টোবর-নভেম্বর মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না হলে সেই সময় আইপিএল করতে আগ্রহী বিসিসিআই। সৌরভ গাঙ্গুলিদের প্ল্যান-বি তৈরি। আইসিসি সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই সরকারি অনুমতি মিললে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে বসে ত্রয়োদশ আইপিএলের নির্ঘণ্ট ঠিক করে ফেলতে প্রস্তুত বোর্ড কর্তারা।
একই সঙ্গে তাঁরা সাবধানে এগোতে চাইছেন। যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে, সেই পন্থা নিয়েছে সৌরভ গাঙ্গুলির বিসিসিআই। সরাসরি নিজেরা কিছু না বলে অন্য ক্রিকেট সংস্থার মাধ্যমে আইসিসির ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এক্ষেত্রে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রথম থেকেই তলে তলে যোগাযোগ রেখেছে বিসিসিআই। অস্ট্রেলিয়ার অনুরোধ মেনে ডিসেম্বর মাসে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। তারপরেই সরকারিভাবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া আইসিসিকে জানিয়ে দেয়, অক্টোবর-নভেম্বর মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করা সম্ভব নয়। ১৫টি দলের ক্রিকেটারদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখার সমস্যা রয়েছে। টুর্নামেন্ট আপাতত স্থগিত রাখা হোক। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কর্তারা জানেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করে যে পরিমান অর্থ পাওয়া যাবে, তার থেকে অনেক বেশি অর্থ আসবে ভারত অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ হলে। আর সেটা দিয়ে আর্থিক সংকট অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত হলে ভারতীয় বোর্ডের পাশাপাশি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও লাভবান হবে।