আজ অর্থাগম ক্ষেত্রটি মধুর। কাজ করেও সাফল্যের অভাব। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় উন্নতি। ... বিশদ
ঘরের সবুজ দেওয়ালে ড্যাম্পের ছোপ ছোপ দাগ। দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। ফিকে দেওয়াল ঘেঁষা টেবিলে বইয়ের সারি। ওই টেবিলে বসেই নিয়মিত অধ্যাবসায় এনে দিয়েছে এই সাফল্য। পাশেই বাবার সেলাই মেশিন। মা গৃহবধূ। বরাবর ঘরের কাজ সামলে ছেলের দিকে খেয়াল রাখেন। অভাবের সংসার হলেও ছেলের পড়াশোনায় কোনও খামতি রাখেননি তাঁর বাবা-মা। কষ্ট করে হলেও ছেলেকে গৃহশিক্ষক দিয়েছেন। এছাড়া স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্য নিয়েও এই ফলাফল মিলেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কৌশিক বলেন, আমি ভালো মানুষ হতে চাই। এছাড়া বিশেষ কোনও পরিকল্পনা নেই। তবে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দেব। চাকরির চেষ্টা করব। আমার পলিটিক্যাল সায়েন্স ও ইংরেজি পড়তে বেশি ভালো লাগত। প্রথমে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পড়তাম। পরীক্ষার আগে ৮-১০ ঘণ্টা নিয়মিত পড়তাম। সবসময় বাবা-মা এবং গৃহশিক্ষকদের সাহায্য পেয়েছি। ছ’টি বিষয়ে আলাদা করে আমার গৃহশিক্ষক ছিল।
তবে কৌশিক নাগরিক হিসেবে বেশ সচেতন। নির্বাচনের মাঝে এই রাজনৈতিক হওয়া নিয়ে কৌশিক বলেন, নাগরিক হিসেবে ভোট দিতে হবে সকলকে। তবে রাজনীতি নিয়ে আমার বিশেষ কোনও মাথাব্যথা নেই। সিনেমা দেখতাম না। গানও শুনতাম না। তবে আমি খেলাধুলা করতে ভালোবাসি। সময় পেলেই পাড়ার মাঠে ক্রিকেট খেলতাম।
গোয়ালজান রিফিউজি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মণীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, আমরা কৌশিকের জন্য খুবই গর্বিত। ও খুব গরিব ঘরের ছেলে। তা সত্ত্বেও এত ভালো রেজাল্ট করেছে। আমাদের স্কুল অনেক পিছিয়ে পড়া একটি স্কুল। দুঃস্থ ছেলেরা এখানে পড়াশোনা করে। রিফিউজি এলাকা বলে এই স্কুলের খুব একটা নামডাক নেই। এই রেজাল্ট স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য পড়ুয়াদের অনেকটা উচ্ছ্বসিত করবে। আমাদের স্কুলের নামও উজ্জ্বল করেছে কৌশিক।
কৌশিকের মা-বাবা বলেন, ছেলের এই সাফল্যে আমরা খুবই খুশি। সব সময় বলি ও যাতে ভালো মানুষ হয়। এই ফলাফলকে সামনে রেখে ও আরও এগিয়ে যাবে, এটাই আমাদের বিশ্বাস। আগামী দিনেও ওর পড়াশোনা নিয়ে কোনও আপস করব না।