সংবাদদাতা, বোলপুর: আজ, শুক্রবার থেকে বীরভূমে শুরু হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রবীণদের ভোট গ্রহণ। রাজ্যে এবারই প্রথম কোভিড সংক্রমণ থেকে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভোটারদের রক্ষা করতে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফলে উপকৃত হবেন জেলার কয়েক হাজার ভোটার। ক্রমবর্ধমান করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও বিরোধীদের দাবি, এই তালিকায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনী আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবেই তালিকা তৈরি হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণার অনেক আগে থেকেই এনিয়ে তৎপরতা শুরু করেছে নির্বাচন দপ্তর। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে এই প্রক্রিয়াটি প্রথম। মূলত, বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অক্ষম ভোটারদের কথা মাথায় রেখে এই ভাবনা। নির্বাচন ঘোষণার পরই এমন ভোটার চিহ্নিত করতে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন জেলার নির্বাচনী আধিকারিকরা। প্রবীণ ও প্রতিবন্ধীদের তালিকা তৈরির লক্ষ্যে জেলাজুড়ে কাজ শুরু করে জেলা নির্বাচন দপ্তর। দ্রুত তৈরিও হয় তালিকা। জেলা নির্বাচন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর বিধানসভায় ৮০ঊর্ধ্ব বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অক্ষম ভোটারের সংখ্যা যথাক্রমে ৮৫৯ ও ২৪৭জন। নানুর বিধানসভায় সংখ্যাটি ১০৫৪ ও ৪৮৩ জন। আর লাভপুরে বয়স্ক ভোটার আছেন ১০০৭জন ও প্রতিবন্ধী ৪০৭জন। এঁরা সবাই বাড়িতে বসেই পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে ইচ্ছুক। এছাড়া, জেলার রামপুরহাট মহকুমায় রয়েছে পাঁচটি বিধানসভা। সেগুলি হল ময়ূরেশ্বর, রামপুরহাট, মুরারই, হাসন ও নলহাটি। ময়ূরেশ্বরে ৮০ঊর্ধ্ব ও শারীরিকভাবে অক্ষম ভোটারদের সংখ্যা যথাক্রমে ১০৫২ ও ২৫৫, রামপুরহাটে ৬৪৪ ও ২৩৬, হাসন বিধানসভায় ৯৬০ ও ৩৫৮, নলহাটিতে ৩১৩ ও ১৫৪ এবং মুরারই বিধানসভায় ৬৩৫ ও ১৯৪ জন। পাশাপাশি সিউড়ি মহকুমার তিন বিধানসভা দুবরাজপুর, সিউড়ি ও সাঁইথিয়ায় ৮০ঊর্ধ্ব ও শারীরিকভাবে অক্ষম ভোটার অন্য দুই মহকুমার তুলনায় কিছুটা কম। এই তিন বিধানসভায় এমন ভোটারের সংখ্যা যথাক্রমে দুবরাজপুরে ৮৭২ ও ২৯০, সিউড়ি বিধানসভায় ৮৫৮ ও ৩৬৩ এবং সাঁইথিয়ায় ৯৮৬ ও ৩৯৩জন। এবারই প্রথম বাড়িতে বসে ভোট দেওয়ার জন্য এঁরা মুখিয়ে রয়েছেন বলে জেলা নির্বাচন দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে।ক্রমবর্ধমান করোনা পরিস্থিতিতে জেলার বয়স্ক ভোটাররা এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন। বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক কমলাপ্রসন্ন চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাক্ষীগোপাল সাহা এসম্পর্কে বলেন, নির্বাচন কমিশন যেভাবে করোনার আবহে বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অক্ষম ভোটারদের জন্য এমন সুযোগ দিয়েছেন তাতে আমরা খুশি। সংক্রমণের ঝুঁকি এড়িয়ে ভোট দিতে পারব অথচ কোনও ভয় থাকবে না, সত্যি এটা বিস্ময়ের। তবে চাইব, প্রক্রিয়াটি যাতে গোপন ও স্বচ্ছ থাকে।হাসনের কংগ্রেস প্রার্থী মিল্টন রশিদ এর বিরোধিতা করে বলেন, শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী না হয়েও অনেকে অনৈতিকভাবে এর সুযোগ নিচ্ছেন। তিনি এজন্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।তবে বীরভূম জেলাশাসক তথা নির্বাচনী আধিকারিক দেবীপ্রসাদ করনম বলেন, প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ গোপন ও স্বচ্ছ।
৮০ঊর্ধ্ব ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সহ করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য এই প্রক্রিয়া। এজন্য দু’জন পোলিং অফিসার, একজন মাইক্রো অবজারভার, একজন ভিডিওগ্রাফার, চারজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও দু’জন রাজ্য পুলিস কর্মীকে নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। ২৫০টির বেশি এমন দল জেলাজুড়ে একাজ করবে।