বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ পুরোহিত ভাতা সহ ১০টি বিষয় নিয়ে মহকুমা শাসক এবং বিডিওদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন। সেখানে পুরোহিত ভাতা নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠে আসে। যেমন, একটি পরিবারে একজন যজমানির সঙ্গে যুক্ত হলেও সেই পরিবার থেকে পাঁচ-ছ’জনের আবেদন জমা পড়েছে। একই মন্দিরে পুজোর সঙ্গে যুক্ত একাধিক পুরোহিত আবেদন করেছেন। আবার অন্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হলেও পূর্ব মেদিনীপুরের কোনও মন্দিরে পুজোর সঙ্গে যুক্ত, এমনও কিছু আবেদন এসেছে। রামনগরের বেশ কয়েকজন পুরোহিত ওড়িশার একাধিক মন্দিরে পুজোআচ্চা করেন। এধরনের আবেদনের ক্ষেত্রে কী করা হবে, তা নিয়ে বিডিওরা প্রশ্ন তোলেন। প্রতিটি ব্লকে এক থেকে দু’হাজার পর্যন্ত আবেদন জমা পড়েছে। যেমন রামনগর-১ব্লকে ১৮২৪টি আবেদন জমা পড়েছে।
পুরোহিত ভাতা রাজ্যের নতুন স্কিম। তাই অনেকের কাছেই বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ভাতার জন্য গ্রামীণ এলাকার আবেদন নেওয়া হচ্ছে বিডিও অফিসে। আর পুরসভা এলাকায় আবেদনপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে মহকুমা শাসকের অফিসে। বিডিও এবং এসডিও অফিসে আবেদনপত্র স্ক্রুটিনি হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি ভিজিট শেষে তালিকা তৈরি হচ্ছে। ওই তালিকা জেলায় আসার পর আরও একদফা ছেঁকে নেওয়া হচ্ছে। তালিকায় যাতে ভুয়ো নাম না থাকে, সেজন্য দু’দফায় বাছাই হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পুজো-অর্চনা যাঁদের মূল পেশা, তাঁরাই ভাতা পাওয়ার যোগ্য। সারাবছর অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত থেকে বছরে একবার লক্ষ্মীপুজো কিংবা সরস্বতী পুজোর মতো দু’-চারটে পুজো করলে ভাতা মিলবে না। একই মন্দিরে একাধিক ব্রাহ্মণ ভাতা পেতে পারেন। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট পুরোহিতদের পুজোটাই মূল পেশা হতে হবে। এখন কারা সারা বছর যজমানির সঙ্গে যুক্ত এবং কারা নন, সেটা ফিল্টার করতে ঘাম ছুটছে ব্লক স্তরের সরকারি অফিসার ও কর্মীদের। এনকোয়ারি করার সময় অনেকক্ষেত্রে প্রভাবিত করার চেষ্টাও হচ্ছে। তাই সতর্কভাবে তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের সম্পাদক তথা পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা শ্রীধর মিশ্র বলেন, জেলায় মোট পুরোহিতের সংখ্যা প্রায় ৪৮হাজার। তাঁদের মধ্যে দুঃস্থ পুরোহিতের সংখ্যা ২৪হাজার। এই ২৪হাজার পুরোহিত ভাতা পাওয়ার জন্য জেলার ২৫টি ব্লক ও চারটি মহকুমা শাসকের অফিসে আবেদন করেছেন।
তফসিলি জাতি ও উপজাতি উন্নয়ন এবং বিত্ত নিগমের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার পৃথ্বীমান মিত্রকে পুরোহিত ভাতা স্কিমের অফিসার ইনচার্জ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ব্লকস্তরে কয়েক হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে। সেইসব আবেদনপত্র থেকে বাছাই করে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, কোনও একটি পরিবারে একজন যজমানির সঙ্গে যুক্ত। অথচ তাঁর আরও চার ভাই ভাতার জন্য আবেদন করেছেন। এধরনের আবেদন বহু। আমরা দু’দফায় বাছাই করে তালিকা তৈরি করছি। পুজোই যাঁদের মূল জীবিকা, একমাত্র তাঁরাই ভাতা পাওয়ার যোগ্য।