বিদ্যা ও কর্মে উন্নতির যুগ অর্থকরি দিকটি কমবেশি শুভ। মানসিক চঞ্চলতা ও অস্থিরতা থাকবে। স্বাস্থ্যের ... বিশদ
বাংলা নিউজ এজেন্সি: রবিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় মাতলেন নদীয়া জেলার বাসিন্দারা। নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর, নবদ্বীপ, নাকাশিপাড়া, করিমপুর, রানাঘাট, শান্তিপুর সহ সর্বত্র লক্ষ্মীর আরাধনায় শামিল হয়েছিলেন গৃহস্থরা। একাধিক জায়গায় বারোয়ারি লক্ষ্মীপুজো হয়। কৃষ্ণনগর শহর সংলগ্ন দোগাছি গ্রামে ধুমধাম সহকারে লক্ষ্মীপুজো হয়। বহু বছর আগে থেকে লক্ষ্মীপুজো এখানে বারোয়ারি পুজোর আকার নিয়েছে। এখানকার মণ্ডপ সজ্জা থেকে প্রতিমা সজ্জা নজরকাড়া। যা দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। রবিবার সকাল থেকেই দুর্গাপুজোর বারোয়ারি মণ্ডপগুলিতে লক্ষ্মীপুজো হয়। তাছাড়া, প্রতিটি ঘরে ঘরে লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা হয়। রানাঘাট মহকুমার ফুলিয়ার লাল মাঠ, শান্তিপুরের বাগানিপাড়া, গয়েশপুর, লক্ষ্মীনাথপুরের পাড়ায় পাড়ায় কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো হয়। ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের লক্ষ্মী প্রতিমার পাশাপাশি প্যান্ডেল ও লাইটিং হয় চোখ ধাঁধানো। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে মণ্ডপগুলির মধ্যে হয় একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতা। এখানকার পুজোয় তিনদিন থাকে প্রতিমা। পুজো উপলক্ষে মেলাও বসে। পুজোর এক উদ্যোক্তা সঞ্জু ব্যাপারি বলেন, আমাদের এখানকার লক্ষ্মীপুজোর আনন্দ শারদীয়ার আনন্দকেও হার মানায়। এই সময় এলাকার যে সমস্ত মানুষ ভিন রাজ্যে বা ভিনদেশে থাকেন তাঁরাও পরিবারের সঙ্গে কটা দিন আনন্দে কাটাতে ফিরে আসেন। বাইরে থেকেও বহু দর্শনার্থী এখানকার পুজো দেখতে আসেন। রবিবার সকাল থেকেই জেলার বাজারগুলিতে মানুষের ভিড় ছিল। তবে সমস্ত জিনিসের চড়া দাম বলে অভিমত ছিল ক্রেতাদের। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে নবদ্বীপের দুর্গাপুজোর বারোয়ারি মণ্ডপগুলি ছাড়াও প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই হয় লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা। মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাজারে প্রতিমা, লক্ষ্মীর পট, ফল, সব্জির বাজার আকাশ ছোঁয়া দাম। বাজারের অগ্নিমূল্য সত্ত্বেও বাড়ির সকলে সারা বছর ধরে কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মীপুজোর জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। নবদ্বীপবাসী লক্ষ্মীপুজো দিন ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবের পাটপুজোও করে। ফলে একসঙ্গে লক্ষ্মীপুজো ও পাটপুজোকে কেন্দ্র করে নবদ্বীপবাসী আনন্দে মাতোয়ারা। লক্ষ্মীরপুজোকে নিয়ে অনেক বেশি আবেগ কাজ করে তেহট্টের কুষ্টিয়া ও করিমপুরের লক্ষ্মীপাড়ায়। লক্ষ্মীপুজোর জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা। এই সময় কর্মসূত্রে বাইরে থাকা মানুষ ঘরে ফেরেন। প্রায় ৭৩ বছর ধরে ধুমধাম করে কুষ্টিয়া গ্রামে লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে। এলাকার বাসিন্দা নিমাই চাঁদ বিশ্বাস বলেন, বহু বছর আগে গ্রামের সিংহরায় বাড়িতে প্রথম লক্ষ্মীপুজো শুরু হয়। সেই থেকে জাঁকজমকভাবে গ্রামে লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে। আশপাশের গ্রামগুলিতে দুর্গাপুজোর সময় বাইরে থাকা মানুষেরা যেমন ঘরে ফেরেন, তেমনই লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষেও এই গ্রামের বাসিন্দারা বাড়ি ফেরেন। পুজোর দিন সন্ধ্যায় গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা মাটি দিয়ে নানা ধরনের পুতুল তৈরি করে। সেগুলি নিয়ে তারা পাড়ার বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে গান গেয়ে নাড়ু মুড়কি মিষ্টি সংগ্রহ করে। এই পুতুলগুলি ‘কাংলা’ নামে পরিচিত। এবারও গ্রামে পারিবারিক ও বারোয়ারি মিলিয়ে মোট প্রায় ৩০টি পুজো হচ্ছে। জলঙ্গি নদীর ধরে মেলা বসে। পুজো উপলক্ষে মঙ্গলবার নৌকা বাইচ হওয়ার কথা রয়েছে।
